এবছরও ওড়িশা এফসির কাছে ৬ গোল হজম করে লজ্জার হারের সম্মুখীন এসসি ইস্টবেঙ্গল। গত মরসুমেও এই ওড়িশার কাছেই ইস্টবেঙ্গল ৬-৫ গোলে পরাজিত হয়েছিল, আজ আবারও ৬-৪ গোলে হারল স্বীকার করলো ইস্টবেঙ্গল।
আজ ইস্টবেঙ্গল শুরুটা ভালোই করেছিল, আজ প্রথমার্ধের প্রথমাংশে বেশ পরিণত লাগছিল ইস্টবেঙ্গল দলটিকে, দেখে মনে হচ্ছিল আজ মনোলো ডিয়াজ আজকের ম্যাচটি তে আগের দুটি ম্যাচের ভুল গুলি থেকে শিক্ষা নিয়ে, এই ম্যাচে তাদের প্রথম জয় ও গুরুত্বপূর্ণ ৩ পয়েন্ট নিয়ে তবেই তারা ফিরবে। আজও ইস্টবেঙ্গল কোচ ৪-৪-২ ছকে তার দলটিকে সাজিয়েছিলেন, আক্রমণ ভাগে ছিলেন পেরোসভিচ, সিদোয়েল, মাঝ মাঠে ছিলেন রফিক, বিকাশ জাইরু ও ডিফেন্সে রাজু গাইকোয়ার্ড।
ওড়িশা এফসির কোচ রামিরেস তার দল টিকে সাজিয়েছিলেন ৪-২-৩-১ ছকে, আক্রমণে ছিলেন এটিকের প্রাক্তন খেলোয়াড় জাভি, যিনি ব্যাঙ্গালোর ম্যাচে দুটি গোল দিয়েছিলেন। মিডফিল্ডে ছিলেন জেরি, নন্দা কুমার, ভিনিত রাই, ডিফেন্সে ছিলেন ভিক্টর মঙ্গিল ও হেক্টর রোডস, প্রতি বছরের মতো এবছরও ওড়িশা এফসি জাইন্ট কিলার হিসেবেই পরিচিত।
প্রথম দিকে ইস্টবেঙ্গলের রাজু গাইকোয়ার্ড-এর একটি দূরপাল্লার থ্রো করেন, যা রফিকের পায়ে পড়ে সেখানে থেকে ওড়িশা এফসির খেলোয়াড়দের পায়ে পড়ে এবং মিস পাস হয় সেখান থেকে ১৩ মিনিটে একটি দুর্দান্ত গোল দেন সিদোয়েল। তারপর প্রথমার্ধে ইস্টবেঙ্গল আর একটিও গোল দিতে পারেনি, সেখানে ওড়িশা এফসি দুর্দান্তভাবে ম্যাচে ফেরে ৩৩ মিনিট ও ৪০ মিনিটে গোল দেন হেক্টর রোডস, ৪৫ মিনিটে একটি অসাধারণ গোল দেন জাভি হার্নান্দেজ।
ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে ইস্ট বেঙ্গল ম্যাচে ফেরার অত্যন্ত চেষ্টা করছিল বটে কিন্তু কালকে যেন কোনো কিছুই ঠিকঠাক ভাবে হচ্ছিল না তাদের। এই সমস্যাটি গত দুম্যাচ ধরে চলে আসছে, দ্বিতীয়ার্ধে তাদের মনোবল, নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া, পাস দেওয়া, থ্রু বল দেওয়া, বিপরীত পক্ষের গোলে শর্ট মারা এবং ডিফেন্ডিং করা সবকিছুই যেনো ম্লান হয়ে যাচ্ছে। এমনকি তাদের গোলকিপার শুভম সেনকে নিয়েও প্রশ্ন উঠতে পারে, তিনি সহজ কিছু সেভ মিস করেন, ডার্বি ম্যাচে অরিন্দম এর পরিবর্তে হিসেবে এসে ভাল পারফর্ম করলেও কাল তাকে ছন্নছাড়া লেগেছে। ইস্টবেঙ্গলের বেঞ্চে আরও একজন দুর্দান্ত গোলকিপারের আছেন যার নাম শংকর রায়, যিনি মোহনবাগান কে ২০১৯-২০ মরশুমে আই লীগ জেতানোর পেছনে অনেক বড় ভূমিকা পালন করেছিলেন। ইস্টবেঙ্গল কোচ মানোলো ডিয়াজ চাইলে শংকরকে পরের ম্যাচে খেলাতে পারেন।.
দ্বিতীয়ার্ধের ওড়িশার আরিদায় দু গোল দেন, একটি গোল দেন ইসাক, সব মিলিয়ে ওড়িশা এফসি ৬ গোল দেন এবং তার বিরুদ্ধে ইস্টবেঙ্গলের হাওকিপ ও চিমা পরিবর্তিত হয়ে এসে আরও ৩ গোল দেয়, যদিও তাতে শেষ রক্ষা হয় নি, সব মিলিয়ে ওড়িশা ৬-৪ গোলে জয় লাভ করে।
আজ ইস্টবেঙ্গল দলে যাদের খেলা একদমই চোখে পড়েনি তারা হলো, নাওরেম সিং, হীরা মণ্ডল, ফ্রাঞ্জো প্র্সে ও শুভম সেন। আজ যাদের খেলা নজর কেড়েছে তারা হলেন চিমা, হওকিপ, সিদেল।
আজ উড়িষ্যা এফসি প্লেয়ার নজর কেড়েছেন তারা হলেন জাভি, হেক্টর রোডস,জেরি, নন্দা কুমার, ভিনিত রাই, ভিক্টর মঙ্গিল, আরিদায়।
আইএসএল লীগ টেবিলে ওড়িশা এফসি ২ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে ২ নম্বরে উঠে এলো, আর ইস্টবেঙ্গল ৩ ম্যাচে ১ পয়েন্ট নিয়ে ১০এ থেকে গেলো ইস্টবেঙ্গল।