সর্বকালীন রেকর্ড গরম কলকাতায়। মঙ্গলবার দুপুরে শহরের তাপমাত্রা পৌঁছে গেল ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
কলকাতাতে পরিশ্রুত পানীয় জলের চাহিদা বাড়লে উৎপাদন বাড়েনি। দৈনিক মাথাপিছু দেড়শ লিটার জলের চাহিদাই এখন গিয়ে পৌঁছেছে ৪৫০ লিটারে। এই পরিস্থিতিতে জল অপচয় রোখার জন্য হাতজোড় করে শহরবাসীর কাছে আবেদন করলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
উনিশ শতকের গোড়াতেও রেকর্ড ভাঙা গরম পড়েছিল বঙ্গে। ১৯০২-র ২ এপ্রিল কলকাতার পারদ ছুঁয়েছিল ৪৩.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর পর ১৯৫৪-র এপ্রিলে একইরকম দাবদাহের শিকার হয়েছিল কলকাতা। সেবারও রেকর্ড গড়ে তাপমাত্রার পারদ ছুঁয়েছিল ৪৩.৩ ডিগ্রি। এবার এপ্রিলের শেষে তাপমাত্রা দাঁড়াল ৪৩ ডিগ্রি। পারদ ৪৩ ডিগ্রি হলেও গরম অনুভূত হচ্ছে ৪৬ ডিগ্রির মতো।
শহর হিট আইল্যান্ডের চেহারা নিচ্ছে। অপরিকল্পিত নগরায়নের ঠেলায় সব বড় এবং ছোট শহর কংক্রিটের জঙ্গলে পরিণত। কংক্রিট তাপ শুষে রাখছে, ফলে দিন শেষ হলেও অনেকটা তাপ থেকে যাচ্ছে আমাদের আশপাশেই। গাছপালা কম, জলাশয় কম, তারও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। সঙ্গে বিপদ বাড়াচ্ছে হাজারে হাজারে এয়ার কন্ডিশনড যন্ত্রের ব্যবহার। এসি ঘর ঠান্ডা করছে, কিন্তু গরম হাওয়া বাইরে বের করে দিচ্ছে। সবমিলিয়ে রাতে তাপমুক্তির তেমন সুযোগই পাচ্ছে না নগর, মহানগর। রেকর্ড গরম কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গে…
এদিকে তাপপ্রবাহ থেকে মুক্তি নেই। শনিবার পর্যন্ত তাপপ্রবাহ চলবে। সপ্তাহান্তে রবিবার স্বস্তি দিতে পারে ঝড়বৃষ্টি। আবহাওয়া দপ্তরের আঞ্চলিক অধিকর্তা সোমনাথ দত্ত বলেন, ‘‘প্রচণ্ড উষ্ণ পশ্চিমি হাওয়া অবাধে দাপট দেখাচ্ছে বাংলায়। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর বঙ্গোপসাগরের জলীয় বাষ্পপূর্ণ হাওয়া ঢুকছে। কিন্তু তা বেশ দুর্বল। তবে এই সপ্তাহে প্রচুর জলীয় বাষ্প ঢুকবে গাঙ্গেয় দক্ষিণবঙ্গে। উত্তর গোলার্ধে তৈরি হওয়া অক্ষরেখা ঘড়ির কাঁটার বিপরীতে দক্ষিণ দিকে আসবে। তার ফলে সপ্তাহান্তে ভিজতে পারে দক্ষিণবঙ্গ।’’
উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুরের রবিবার বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। আগামী সোমবার ও মঙ্গলবার বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বাড়তে পারে। বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি হয়ে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে শহরবাসী স্বস্তি পাবে কী না এব্যপারে স্পষ্ট করেনি হাওয়া অফিস। আবহাওয়া অফিসের কথায়, দক্ষিণবঙ্গের বৃষ্টিপাতের সম্ভবনা রয়েছে। কলকাতা ভিজবে কি না তা দু-একদিনের মধ্যে বোঝা যাবে। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার তাপপ্রবাহের কমলা সতর্কতা রয়েছে কিছু জেলায়।