২০২১ য়ের পুরো-ভোটের ফল ঘোষণায় সবুজ ঝড়ে তোলপাড় গোটা কলকাতা শহর :

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

আজ, মঙ্গলবার ২১যে ডিসেম্বর ২০২১,কলকাতা পুরসভার ভোটের ফল প্রকাশিত হলো। ভোট নেওয়া হয়েছিল রবিবার ১৯ যে ডিসেম্বর ২০২১। সেদিন বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছিল। বিরোধীদের দাবি ছিল, শাসকদল গোলমাল করেছে। বিভিন্ন জায়গায় ভোট লুঠ করেছে। একুশের বিধানসভা ভোটে দারুণ ফল করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। তারা কী সাফল্যের সেই ধারা ধরে রাখতে  পারলো এইবারে?

পুরভোটে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ছাপ্পা ভোটের অভিযোগে সরব হয়েছিলেন বিজেপি থেকে শুরু করে অন্যান্য বিরোধীরা। আসলে বিজেপি নেতারা আগেই আঁচ করতে পেরেছিলেন এবার তাদের পক্ষে খুব বেশি আসন পাওয়া সম্ভব নয়। মঙ্গলবার ভোট গণনা শুরু হতেই তৃনমুল ঝড় দেখা গেল উত্তর থেকে দক্ষিণ কলকাতার সর্বত্রই। মাত্র টি ওয়ার্ডে পদ্ম ফুল ফোটাতে সক্ষম হয়েছেন বিজেপি প্রার্থীরা। তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছে ১৩৪ টি আসন, বামপন্থীদের এবং কংগ্রেসদের ঝুলিতে গেছে টি করে আসন।

কলকাতা পুরভোটে বিপুল জয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাসকে কটাক্ষ ট্যুইট বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর। তিনি বলেন, "এই ভাবে ভোট লুট করে শাসকদলের দিকে ভোট বাড়িয়ে দেওয়ার মতো দারুন কাজ আপনি খুবই  ভালো ভাবে করেছেন। সিসিটিভি লাগিয়েছেন কিন্তু তা চালানো হয়েই নি, ভোট চলাকালীন  ভোট বুথে ভোটারদের কলকাতা পুলিশ দিয়ে দমিয়ে রাখা, এরকম আজ, মঙ্গলবার ২১যে ডিসেম্বর ২০২১,কলকাতা পুরসভার ভোটের ফল প্রকাশিত হলো। ভোট নেওয়া হয়েছিল রবিবার ১৯ যে ডিসেম্বর ২০২১। সেদিন বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছিল। বিরোধীদের দাবি ছিল, শাসকদল গোলমাল করেছে। বিভিন্ন জায়গায় ভোট লুঠ করেছে। একুশের বিধানসভা ভোটে দারুণ ফল করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। তারা কী সাফল্যের সেই ধারা ধরে রাখতে  পারলো এইবারে?


ভালো ভালো কাজ করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইলো।"

মঙ্গলবার ভোট গণনা শুরু থেকে যেখানে তৃণমূলের মধ্যে জয়ের উচ্ছ্বাস দেখা গেছে সেখানে নিস্তেজ থাকল বিজেপি। গণনার প্রথম থেকেই বিজেপির সদরদফতরে দেখা গেল না কোনও নেতাকে। বিজেপি সূত্রের খবর, প্রথম থেকে তাদের অনুমান ছিল ছাপ্পা ভোটের কারণে তৃণমূলী জয়ী হবে। সেই কারণে পুরভোট নিয়ে আশাবাদী নন বিজেপি নেতারা। এদিন সকাল থেকে বিজিপির সদর দফতরে নিরাপত্তারক্ষী ছাড়া আর কাউকে দেখা যায়নি।

 কলকাতা পুরভোটে জয়ের পরে ট্যুইট অভিষেকের। তিনি বলেন "এই কলকতাবাসীকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আবার প্রমান হয়ে গেল যে এখানে দুর্নীতি, অশুভ কাজকর্মের, নোংরামির কোনো জায়গা নেই। মানুষ শান্তি চায়, পরিবর্তন চায়, উন্নয়ন চায়।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ট্যুইট করেন যে, “কলকাতা পুরভোটের জয়ী প্রার্থীদের অনেক অনেক অভিনন্দন।বিজেপি ভোকাট্টা। সিপিআইএম ভোকাট্টা। গণতন্ত্রের উত্সবে গণতন্ত্রের জয়। মানুষের জন্য আরও বেশি করে কাজ করব। কলকাতা-বাংলা সারা দেশকে পথ দেখাবে।আমি কলকাতার মানুষের কাছে খুবই কৃতজ্ঞ। তারা নিজেদের সিদ্ধান্ত নিজেরাই নিয়েছেন এটা দেখে আমি খুবই খুশি। আপনাদের জন্য কাজ করতে পেরে আমরা ধন্য। এই ভাবেই আমাদের সাথে থাকবেন।

গণনার কয়েক রাউন্ড শেষে সমস্ত বোরোতেই তৃণমূলকে এগিয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। কার্যত নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে তৃণমূলের জয়। প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন,' যেভাবে ভোট হয়েছে তাতে তৃণমূল ১৪৪ টি আসনে জিতবে সেটা আমরা জানি। বিরোধীরা মাত্র কয়েকটা আসনে এগিয়ে রয়েছে এটা খুবই আশ্চর্যের বিষয়। ' তার অভিযোগ, ' একাধিক জায়গায় ইভিএম ভেঙে ফেলা হয়েছে। ছাপ্পা ভোট করা হয়েছে তারপরেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি নির্বাচন কমিশন। অথচ পুলিশ কমিশনার জানাচ্ছেন শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে। ' তারফকে এরকম ফলাফল হওয়াটা খুবই স্বাভাবিক বলেই তিনি মনে করছেন।

কলকাতা পুরভোটের ফল প্রকাশ হতেই নিজের মত জানালেন অনুব্রত মণ্ডল। চিরাচরিত ভঙ্গিতে তিনি খোঁচা দিয়েছেন বিরোধীদের। স্পষ্ট বাক্যে কেষ্ট বলেছেন, ‘‘এই ফলাফল দেখে বিজেপির লজ্জা করা উচিত এবংতৃণমূল সরকার যে উন্নয়ন করেছে সেই উন্নয়নের গুণগান গাওয়া উচিত মাঝেমধ্যে।' পাশাপাশি তিনি কংগ্রেস এবং সিপিএম-এর দুটি করে আসন পাওয়ার নিয়ে বলেন, ‘এই নির্বাচনে তারা জোট করেনি বলেই আসন পেয়েছে। জোট করলে বিধানসভার মতোই শূন্য হয়ে যেত। বিধানসভায় যদি তারা জোট না করতো তাহলে অন্ততপক্ষে দুটি দল মিলে ১০টি আসন পেত। অন্যদিকে বিজেপির আসন কমতো ১০টি।


৮২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জিতেছেন ফিরহাদ হাকিম। তার পর তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন। তখন তিনি জানিয়েছেন, আগামী দিনে দূষণ কমানো কলকাতা পুরসভার অন্যতম লক্ষ্য হবে।  এছাড়াও তিনি এও বলেন, “আমরা চাই পুরসভা কি কাজ করছে এবং কতটা সেই কাজ সম্পন্ন হয়েছে তা মানুষের কাছে তুলে ধরতে। সাধারণ মানুষ পুরসভার কাজ সম্পর্কে অবগত থাকবেন। এরজন্য বছরে একবার করে আমরা রিপোর্ট কার্ড পেশ করব।

 এই পুরো-ভোটে কিন্তু বেশ ভালোই ফল করেছেন দ্বিতীয় প্রজন্ম। পুরভোটে রাজ্যের নারী শিশুকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজার মেয়ে পূজা, নগরোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের ছেলে সৌরভ, বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের মন্ত্রী জাভেদ আহমেদ খানের ছেলে ফৈয়াজ, প্রয়াত বামনেতা ক্ষিতি গোস্বামীর মেয়ে বসুন্ধরাকে প্রথম বার লড়তে দেখা গিয়েছে। তৃণমূলের তালিকায় ছিলেন এন্টালির বিধায়ক স্বর্ণকমল সাহার ছেলে সন্দীপন এবং প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র তথা প্রাক্তন বিধায়ক ইকবাল আহমেদের কন্যা সানার মতো বিদায়ী কাউন্সিলররাও। ভোটের ফলাফল বলছে, তৃণমূলের পরবর্তী প্রজন্মের যাত্রা পুরভোট থেকেই শুরু হয়ে গেল।

 ২০২১ সালের পুরনির্বাচনে ছয় বিধায়ককে টিকিট দিয়েছিল তৃণমূল। টিকিট পেয়েছিলেন সাংসদ মালা রায়ও। ২১ ডিসেম্বর ফলপ্রকাশ হতেই দেখা গেল এই সাত জনই জিতেছেন। পুরভোটে জয়ী তৃণমূলের বিধায়করা হলেন কলকাতা বন্দরের বিধায়ক ফিরহাদ হাকিম। রাসবিহারীর বিধায়ক দেবাশিস কুমার। যাদবপুরের বিধায়ক দেবব্রত মজুমদার। কাশীপুর-বেলগাছিয়ার বিধায়ক অতীন ঘোষ। বেলেঘাটার বিধায়ক পরেশ পাল। বেহালা পূর্বের বিধায়র রত্না চট্টোপাধ্যায়। দক্ষিণ কলকাতার সাংসদ মালা রায় জিতেছেন ৮৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকেই।

 ভোটে জেতার পরেই শোভন চট্টোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করতে ছাড়লেন না রত্না চট্টোপাধ্যায়। ভোটে জেতার পরেই তিনি বলেন, “আমি স্ট্যান্ড করে দেখিয়ে দিলাম। ১০ হাজার ২০৬ ভোটে জিতে গিয়েছি আমি।' রত্নার দাবি, জয়ের নিরিখে তিনি কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কেউ ছাপিয়ে গিয়েছেন। তিনি বলেন, 'রেকর্ড ভোটে জিতেছি। এর আগে এত ব্যবধানে এই ওয়ার্ড থেকে কেউ জেতেনি।

 পুরভোটে তৃণমূলকে জেতানোর জন্য সাধারণ মানুষকে অভিনন্দন জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কালীঘাটে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেছেন, ‘‘আমাদের সমর্থন করার জন্য মা-মাটি-মানুষকে ধন্যবাদ। মানুষ যত আমাদের সমর্থন করবেন, তত আমাদের মাথা নত হবে।’’

#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image

Journalist Name : Sayantika Biswas

Related News