স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের মুখে একাধিকবারই শোনা গিয়েছে যে দ্রুত সিএএ কার্যকর করা হবে।
২০১৯-এর শেষে সিএএ-তে রাষ্ট্রপতির সিলমোহর পড়লেও বিধি তৈরি হয়নি। তাই এখনও আইনটি কার্যকর করা যায়নি। কিন্তু এবার আইনের ধারা তৈরি হয়ে যাবে শীঘ্র। আর তার পরই তা কার্যকর করা যেতে পারে। এমনটাই দাবি কেন্দ্রীয় সূত্রের।
২০১৯ সালে কেন্দ্রের তরফে নয়া নাগরিকত্ব ও নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রস্তাব আনা হয়। সিএএ বা নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলে বলা হয়, ২০১৫ সালের আগে পড়শি দেশ বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান থেকে আগত অ-মুসলিম অর্থাৎ হিন্দু, জৈন, খ্রিস্টান, পার্সি, বৌদ্ধ নাগরিকদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। এই বিল নিয়ে বিস্তর বিতর্ক-প্রতিবাদও হয়। শেষ অবধি সংসদে পাশও হয়ে যায় এই বিল। আইনে পরিণত হলেও, সিএএ-র ধারাগুলি এখনও তৈরি হয়নি। এবার সেই ধারা নিয়েই কাজ শুরু করছে কেন্দ্র।
১৯৫৫ সালে দেশে নাগরিকত্ব আইন করা হয়েছিল বেআইনি অনুপ্রবেশ ঠেকাতে। ৬৪ বছর পর সেই আইন সংশোধন করে বেআইনি অনুপ্রবেশকারীর সংজ্ঞাটি বদলানো হয়। ১৯৫৫ সালের আইনে ২ নম্বর ধারায় বেআইনি অনুপ্রবেশকারীর সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল। ২০১৯ সালের সংশোধনীতে ২ নম্বর ধারাটি সংশোধন করে ২(১)বি যুক্ত করা হয়। সেই ধারায় বলা হয়- বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে আসা হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পারসি ও খ্রিস্টানরা বেআইনি অনুপ্রবেশকারীর দলে পড়বে না। এই সংশোধনীটি আনার সঙ্গে সঙ্গে দেশজুড়ে আগুন জ্বলে। এই আইন ‘অসাংবিধানিক’ ও ‘সংবিধানের পরিপন্থী’ এই দাবি বারবার উঠে আসে আন্দোলনকারীদের মুখে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশ্ন করায় কেন্দ্র জানায়, এই আইন পুরোপুরি বৈধ ও সাংবিধানিক।
সিএএ নিয়ে বরাবরই কেন্দ্রের বিরোধিতা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছিলেন, “নাগরিক না হলে সকলে রেশন সহ অন্যান্য পরিষেবা পাচ্ছেন কীভাবে? নাগরিকত্ব নিয়ে সাধারণ মানুষদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির মধ্য়ে বিভাজন তৈরির চেষ্টা চলছে। এটা তো করা উচিত নয়।”
সম্প্রতি বঙ্গ সফরে অমিত শাহ জানিয়েছিলেন, সিএএ চালু হতে চলেছে। আর এবার সামনে এল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের আধিকারিকের দাবি। তিনি বলেছেন, রুল তৈরি হয়ে গিয়েছে। অনলাইন পোর্টালও প্রস্তুত। এই পুরো প্রক্রিয়াটিই অনলাইন, এবং আবেদনকারীরা মোবাইল ফোন থেকেই আবেদন করতে পারবেন। সেই সঙ্গেই তাঁর দাবি, লোকসভা নির্বাচনের ঘোষণার আগেই চালু হতে পারে সিএএ।