জানুন বিভিন্ন প্রকার ডালের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

ডাল একটি সাধারণ এবং অতি পরিচিত পদ বাঙালির খাদ্য তালিকায়। খাওয়ার শেষ পাতে ডাল না হলে হয়তো অনেকেই তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলতে পারেন না। ডালের রয়েছে হরেক রকম জাত।যথাঃ মুগ ডাল, মসুর ডাল, মাষকলাই ডাল, খেসারি ডাল, অড়হর ডাল।
বিভিন্ন পদের সাথে মিশিয়ে রান্না করে খাওয়া হয় ডাল। তবে যেভাবেই খাওয়া হোক না কেন  অনেক পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এই ডাল।
মসুর ডাল:-
মসুর ডাল একটি সাধারণ পদ। ভাতের পরে খাদ্য তালিকায় অধিক যুক্ত একটি খাবার।আবার অনেকেই রসিকতা করে বলে মসুর ডাল কে মনে করেন গরীবের খাবার। তবে যে যাই বলুক মসুর ডালে পুষ্টিগুণ অনেক।
মসুর ডালে পুষ্টিগুণ: প্রতি ১০০ গ্রাম মসুর ডালে রয়েছে।
ক্যালরি ৩৪৩ গ্রাম,
ফ্যাট ১.৫ গ্রাম,
সোডিয়াম ১৭ গ্রাম,
পটাশিয়াম ১৩৯২ গ্রাম,
কার্বোহাইড্রেট ৬৩ গ্রাম,
প্রোটিন ২২ গ্রাম,
ক্যালসিয়াম ১৩ গ্রাম,
ম্যাগনেসিয়াম ৪৫ গ্রাম,
ভিটামিন কমপ্লেক্সে ১০ গ্রাম,
ফাইবার ১৫ গ্রাম।
মসুর ডালের উপকারিতা:-
এতো গেল পুষ্টিগুন উপকারিতাও কম নয় মসুর ডালের।  নিয়মিত মসুর ডাল খেলে হার্ট ভালো রাখে কারণ এতে থাকা উচ্চ ফাইবার অনেকাংশেই হার্টের ঝুঁকি কমায় এবং  রক্তে কললেস্টরোলের মাএা কমায়। ম্যাগনেশিয়ামের অনেক ভালো উৎস মসুরের ডাল যা রক্তের অক্সিজেন সরবরাহ করে এবং ধমনী পরিষ্কার করে।
যাদের হজমে সমস্যা রয়েছে তারা কোন চিন্তা ছাড়াই মসুর ডাল খেতে পারেন।কারণ এতে থাকা ফাইবার হজমে সহয়তা করে  এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে।
অনেকের মনে একটি ভ্রান্ত ধারনা আছে মসুর ডাল নিয়মিত খেলে ওজন কমাতে সহয়তা,করে। কারণ মসুর ডালে প্রোটিন পর্যাপ্ত পরিমাণ থাকায় তা দীর্ঘক্ষণ পেটকে ভরিয়ে রাখে।
ফলে অতিরিক্ত খাবার গ্রহনের প্রবনতা কমে যায়। গভর্বতী মায়ের জন্য মসুরডালে আয়রণ ও ফলেট ক্যারটিনয়েড একটি উৎকৃষ্ট উৎস। কারণ এ সময় বেশির ভাগ মায়েরা রক্ত স্বল্পতায় ভোগে। সুতরাং গভর্বতী মায়েরা মসুর ডালের মাধ্যমে পর্যাপ্ত পুষ্টি উপাদান পেয়ে থাকেন।
     
মুগ ডাল:- 
মুগ ডাল,আরও একটি সুস্বাদু পদের নাম। এই ডালের রং অনেক টা স্বনালি বর্ণ বলে একে সোনামুগ ডালও বলে থাকে। মুগ ডালের উৎপওি স্থল  দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়। এছাড়াও মধ্য আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অস্ট্রেলিয়ায়। মুগ ডাল একইসাথে মসলা এবং মিষ্টি খাবারে উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা হয়। মুগ ডাল নিরামিষ ভোজীদের জন্য একটি জনপ্রিয় খাবার।
মুগ ডালের পুষ্টিগুণ: স্বাদের পাশাপাশি  মুগডাল যথেষ্ট পুষ্টিকর। প্রতি ১০০ গ্রাম মুগডাল থেকে পাওয়া যায়।
প্রোটিন ২৪ গ্রাম,
কার্বোহাইড্রেট ৬৩ গ্রাম,
ক্যালসিয়াম ১৩২ গ্রাম,
আয়রণ ৬.৭৪ গ্রাম,
ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ২৫ গ্রাম,
ম্যাগনেসিয়াম ১৮৯ গ্রাম।
মুগ ডালের উপকারিতা:
মুগডালের স্বাস্থ্য উপকারিতাও রয়েছে অনেক। রক্তে থাকা খারাপ কোলেস্টেরল এলডিকে কমাতে সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, নিয়মিত এই ডাল খাওয়ায় হৃদরোগের ঝুঁকি ২২ % পর্যন্ত হ্রাস করে । এতে রয়েছে লেসিথিন নামক পুষ্টি উপাদান যা যকৃতে চর্বি জমতে বাধাসৃষ্টি করে।  যারা ওজন কমানোর কথা ভাবছেন তারা নিয়মিত খেতে পারেন এই ডাল। কারণ এতে থাকা উচ্চমানের ফাইবার ক্ষুদা কম লাগতে দেয় এবং উচ্চ মানের প্রোটিন মাংস পেশিকে চর্বিমুক্ত করে। ভিটামিন সি শরীরে মৃত কোষ পরিষ্কার করে।

খেসারির ডাল:-
উচ্চ হলুূদ,বর্ণজাতীয় উদ্ভিদ বীজ খেসারি ডাল। বাংলাদেশসহ পৃথিবীর অনেক দেশে খেসারি ডাল প্রধান খাদ্যের অংশ। বিভিন্ন রকম পদের সাথে খেসারির ডাল খাওয়া,হয়। যেমন খেসারি ডালের পিয়াজু বেশ সুস্বাদু৷
খেসারির ডালের পুষ্টিগুণ: খেসারি ডালে প্রচুর পরিমাণে খাদ্য শক্তি ও প্রোটিন রয়েছে।
প্রতি ১০০ গ্রাম খেসারি ডালে রয়েছে-
ক্যালরি ৩২৭ গ্রাম,
আমিষ ২২.৯ গ্রাম,
ক্যালসিয়াম  ৯০ মি.গ্রা,
শর্করা ৫৫.৭ গ্রাম,
আয়রণ ও ফ্যাট ০.৭ গ্রাম।
খেসারির ডালের উপকারিতা :-
খেসারি ডাল গিঁটের ব্যাথা, অরুচি ভাব  ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে । তবে একবারে সব ডাল মিশিয়ে রান্না করে খেলে স্বাদ পরিপূর্ণভাবে পাওয়া যায়।  
ছোলার  ডাল:-    
ছোলার ডাল একটি ডাল জাতীয় শস্য ৷ এশিয়া সহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে বেশ জনপ্রিয় ছোলার ডাল। সাধারণ তরকারি মতো করে রান্না করা হয় এবং ভাত বা রুটি সাথে পরিবেশন করা হয়।

ছোলার মূলত দুই প্রকার৷ দেশী ছোলা এবং কাবুলি ছোলা।
দেশী ছোলা ইথিওপিয়, ইরান, মেক্সিকো সহ এশিয়ার দেশগুলোতে দেশী ছোলা বেশ জনপ্রিয়। কাবুলি ছোলা ও ইউরোপের দেশগুলোসহ এশিয়াতেও পরিচিত। কাবলি ছোলা  মূলত বেসন তৈরি করা হয়। যা দ্বারা পিয়াজু, পাকড়া ইত্যাদি তৈরি করা হয়।
ছোলার ডালের পুষ্টিগুণ: পুষ্টিগুনের দিক থেকে ছোলার ডাল বেশ সমৃদ্ধ।
প্রতি ১০০ গ্রাম থেকে পাওয়া যায়।
১৭ গ্রাম আমিষ,
৩৬০ গ্রাম ক্যালরি,
৬৪ গ্রাম শর্করা,
৫ গ্রাম ফ্যাট,
ক্যালসিয়াম ২০০ মিলিগ্রাম,
১০ মিলিগ্রাম আয়রন,
ভিটামিন-এ ১৯০ মাইক্রোগ্রাম,  
ভিটামিন বি-১,
বি-২ ফসফরাস ও
ম্যাগনেশিয়াম।

ছোলার ডালের উপকারিতা:- 
ছোলার ডালে বেশ পরিমাণে ফাইবার যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে অত্যন্ত কার্যকর। ফলে খাদ্যনালীতে জীবাণু জমতে পারে। এতে কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে যায়। তাছাড়া এতে থাকা ফাইবার রক্তে কোলেস্টেরলের মাএা কমায়। ছোলার দীর্ঘসময় ধরে শরীরে এনার্জি ধরে রাখতে পারে।
প্রত্যেক ডালে আমিজ উপাদানে বেশ ভরপুর। আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় যোগের মাধ্যমে তা নিত্য পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে চলছে।

#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image

Journalist Name : SANGITA RANA

Tags:

Related News