একটানা কাশির লক্ষণকে কমবেশি সবাই মৌসুমি ফ্লুর লক্ষণ হিসেবেই বিবেচনা করেন। তবে হঠাৎ করেই সর্দি ছাড়াই যদি কাশির সমস্যা দেখেন তাহলে সতর্ক হতে হবে। কারণ যক্ষ্মার অন্যতম লক্ষণ হলো কাশি।
বেশিরভাগ মানুষই যক্ষ্মার কাশিকে সাধারণ ভেবে ভুল করেন। মাইকোব্যাকটেরিয়াম টিবি সংক্রমণের কারণে দীর্ঘদিন কাশিতে ভুগতে হয়। সাধারণ কাশি উপরের শ্বাসনালির সংক্রমণের কারণে হয়।
একটানা কাশি টিবির একটি সাধারণ লক্ষণ। কিন্তু করোনার পরে অনেকেরই একটানা কাশি হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে এটা বোঝা মুশকিল হয়ে পড়ে যে, কাশিটি টিবি বা করোনা নাকি অন্য কোনো কারণে হচ্ছে। প্রথমত, একটা কথা মাথায় রাখতে হবে যে টিবি দ্বারা সৃষ্ট দীর্ঘস্থায়ী কাশি প্রায়শই মাইকোব্যাকটেরিয়াম যক্ষ্মা সংক্রমণের কারণে হয়। অন্যদিকে সাধারণ কাশি মূলত ভাইরাল এবং শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের কারণে হয়।
কাশি বোঝার জন্য এর ধরণ এবং সময়কাল বোঝা গুরুত্বপূর্ণ। টিবি এবং অন্যান্য দীর্ঘস্থায়ী রোগের কারণে কাশি হতে পারে। তবে এটাও জেনে রাখা উচিত যে যক্ষ্মার প্রাথমিক লক্ষণ শুধুমাত্র কাশির আকারেই প্রকাশ পায়। অনেক সময় ২ সপ্তাহের বেশি সময় ধরে থাকা কাশি টিবি-র লক্ষণ হতে পারে।
যক্ষার লক্ষণ কী কী?
>> গুরুতর কাশি (২ সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয়)
>> পরিবারে টিবির রোগী থাকলে
>> কাশির সঙ্গে রক্ত ওঠা
>> ক্লান্তি
>> ক্ষুধা কমে যাওয়া
>> ওজন কমে যাওয়া
>> শরীরে ঠান্ডা লাগা
>> জ্বর
>> রাতে ঘাম হওয়া ইত্যাদি।
টিবির কারণ (TB Reasons)
১. দুর্বল ইমিউন সিস্টেম
২. টিবি আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা
৩. খারাপ খাওয়াদাওয়া
৪. ঘন ঘন ধূমপান
৫. দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ
টিবি’র চিকিৎসা কী?
টিবি’র প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে চিকিৎসকরা ব্যাকটেরিয়ার বংশবিস্তার রোধের জন্য ৬ মাসের ওষুধ দেন। নিয়মিত ফলোআপের পরামর্শ দেওয়া হয়, যাতে রোগী আবার টিবি থেকে সংক্রমিত না হন।
টিবি চিকিৎসার দ্বিতীয় পর্বে ৮-৯ মাসের টিবি ওষুধ দেওয়া হয়, যা শরীরের অভ্যন্তরে সুপ্ত যক্ষ্মাকে মেরে ফেলে।
যদি রোগী ক্যাটাগরি ওয়ান ও টু এর ওষুধ খেয়েও সুস্থ না হন, সেক্ষেত্রে আবার তৃতীয় বা চতুর্থবার টিবিতে আক্রান্ত হতে পারেন। একে বলা হয় এমডিআর টিবি, যার মানে মাল্টিড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট টিবি।