ভারত বনাম সাউথ আফ্রিকা টেস্ট ম্যাচ একটি ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হয়ে রইল

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

ম্য়াচের চতুর্থ দিনের শেষে অনেকটা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকার  বক্সিং ডে টেস্টের ভাগ্য । ভারতীয় দলের জয় ছিল শুধু সময়ের অপেক্ষা।  পঞ্চম দিনে লাঞ্চের পরই প্রত্যাশিত জয় পেল বিরাট কোহলি  কেএল রাহুলরা । সেঞ্চুরিয়ন টেস্টে ঐতিহাসিক জয় পেল ভারতীয় দল। ১১৩ রানে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারাল টিম ইন্ডিয়া। দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের দেওয়া ৩০৫ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে ১৯১ রানে অলআউট হয়ে যায় ডিন এলগগারের  দল। ৯৪ রানে ৪ উইকেট থেকে চতুর্থ দিনের খেলা শেষ করেছিল প্রোটিয়া ব্রিগেড। ভারতীয় বোলারদের দাপটে পঞ্চম দিনের সকাল থেকেই নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারাতে থাকে দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রোটিয়াদের হয়ে সর্বোচ্চ ৭৭ রান করেন অধিনায়ক ডিন এলগার। ভারতের হয়ে ৩টি করে উইকেট নেন জসপ্রীত বুমরা ও মহম্মদ শামি। ২টি করে উইকেট নেন মহম্মদ সিরাজ ও রবিচন্দ্রন অশ্বিন। এই ম্য়াচ  জয়ের ফলে ৩ ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল ভারতীয় ক্রিকেট দল। 

চতুর্থ দিনের শেষে প্রোটিয়া ব্রিগেডের স্কোর ছিল ৯৪ রানে ৪ উইকেট। পঞ্চম দিন সকালে অধিনায়ক ডিন এলগার ও টেম্বা বাভুমা শুরুটা ভালোই করেছিল। ৩৬ রানের পার্টনারশিপ করে তারা। ভারতীয় দলকে পঞ্চম দিনের প্রথম সাফল্য এনে জসপ্রীত বুমরা। দলের ১৩০ রানের মাথায় বুমরার বলে ব্যক্তিগত ৭৭ রানে এলবিডব্লু আউট হয়ে প্যাভেলিয়নে ফেরত যান ডিন এলগার। প্রোটিয়া অধিনায়কের পর ক্রিজে আসেন অভিজ্ঞ কুইন্টন ডিকক। বাভুমার সঙ্গে তিনি ইনিংসের রাশ ধরার চেষ্টা করেন। কিন্তু বড় পার্টনারশাপ করতে ব্যর্থ হন তারা। ৩১ রানের পার্টনারশিপ করার পর ষষ্ঠ উইকেট পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকার। ব্যক্তিগত ২১ রান করে মহম্মদ সিরাজের বলে বোল্ড হন ডিকক। দলের ১৬১ রানে ষষ্ঠ উইকেট পড়ে। সপ্তমউইকেটের জন্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি ভারতীয় দলকে। ১৬৪ রানে সপ্তম উইকেট পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকার। উইয়ান মাল্ডারকে আউট করেন মহম্মদ শামি। ১ রান করে প্যাভেলিয়নে ফেরত যান মাল্ডার। এরপর মার্কো জানসেনকে নিয়ে ১৮ রান আররও যোগ করেন বাভুমা। লাঞ্চ পর্যন্ত দক্ষিণ  আফ্রিকার স্কোর ১৮২ রানে ৭ উইকেট। 
লাঞ্চের পর দ্বিতীয় সেশনে খেলা শেষ করতে বেশি সময় নেয়নি ভারতীয় বোলাররা। ১৯০ রানে অষ্টম উইকেট পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা দলের। ১৩ রান করে মহম্মদ শামির বলে আউট হন মার্কো জানসেন। শেষ দুটি উইকেট পড়ে ১৯১ রানে।  খাতা না খুলেই বুমরার বলে পরপর আউট হন কাগিসো রাবাডা ও লুঙ্গি এনগিডি। শেষ পর্যন্ত ৩৫ রানে অপরাজিত থেকে যান টেম্বা বাভুমা। ১৯১ রানে শেষ হয় দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস। এই জয়ের সঙ্গে সেঞ্চুরিয়নে প্রথম টেস্ট জিতে ইতিহাস তৈরি করল ভারতীয় দল। অস্ট্রেলিয়ার গাব্বার মত সেঞ্চুরিয়নকে দক্ষিণ আফ্রিকা দলের দুর্গ বলা হয়ে থাকে। এখানে এর আগে টেস্ট জেতেনি ভারতীয় দল। এবার সেই দুর্গের পতন ঘটিয়ে নতুন ইতিহাস লিখলেন কোহলি,রাহুল, মায়াঙ্ক,বুমরা, শামি,শার্দুল,সিরাজ,অশ্বিনরা। একইসঙ্গ বছর শেষে সমর্থকদের জয় উপহার দিল টিম ইন্ডিয়া।

দক্ষিণ আফ্রিকায় ভারতের দুর্গ! ভাবতে অবাক হলেও এটাই সত্যি। আর সেখানেই নতুন বছরে ইতিহাসের হাতছানি ভারতীয় দলের সামনে। ২০০৬ সালে রাহুল দ্রাবিড়ের নেতৃত্বাধীন ভারত জোহানেসবার্গ টেস্টে জিতলেও সিরিজ হেরেই দেশে ফিরেছিল। ২০১০ সালে একমাত্র ভারত টেস্ট সিরিজ ড্র রাখতে পেরেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। তাছাড়া ১৯৯২ সালের পর থেকে আজ অবধি প্রোটিয়াদের দেশে ভারতের টেস্ট সিরিজ জয় অধরাই থেকেছে।
দিন দুয়েক আগেই করোনা আক্রান্ত হয়েছেন সৌরভ। তবে অসুস্থ অবস্থাতেও ভারতের জয়ে নজর রেখেছেন তিনি।বর্তমানে যিনি করোনা আক্রান্ত হয়ে উডল্যান্ডসে ভর্তি রয়েছেন।তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, টিম ইন্ডিয়ার দাপট দেখে তিনি অন্তত অবাক নন।
কোহলির আগে, মহেন্দ্র সিং ধোনি এবং রাহুল দ্রাবিড়ের নেতৃত্বে ভারত দক্ষিণ আফ্রিকায় ১-১ টেস্ট ম্যাচ জিতেছিল। এই ধাক্কাধাক্কি জয়ের পর বিসিসিআই  সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলি  টিম ইন্ডিয়াকে জয়ের জন্য অভিনন্দন জানালেও বিরাট কোহলির নাম পর্যন্ত নেননি। সৌরভ গাঙ্গুলী তার অভিনন্দন টুইটে ইতিহাস সৃষ্টিকারী ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলির নাম উল্লেখ করেননি। একই সময়ে, প্রাক্তন কোচ রবি শাস্ত্রী দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সেঞ্চুরিয়ান টেস্ট ম্যাচে দুর্দান্ত জয়ের জন্য টিম ইন্ডিয়া এবং বিরাট কোহলি উভয়কেই অভিনন্দন জানিয়েছেন।

এটি সেঞ্চুরিয়নে ভারতের প্রথম টেস্ট জয়ও ছিল, যা মূলত দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য দুর্গ হিসেবে বিবেচিত হয়। গাঙ্গুলি টুইটারে লিখেছেন, “টিম ইন্ডিয়ার জন্য দুর্দান্ত জয়। ফলাফলে মোটেও অবাক নন। এই সিরিজে ভারতকে হারানো খুবই কঠিন হবে। এটি করতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে তার সীমা ছাড়িয়ে পারফর্ম করতে হবে। নতুন বছর উপভোগ করুন।” এই বছর অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে গাব্বাতে এবং লর্ডসে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে স্মরণীয় জয়ের পর, টিম ইন্ডিয়া দক্ষিণ আফ্রিকার একটি শক্তিশালী ঘাঁটি সেঞ্চুরিয়নে জয় নিবন্ধন করে ইতিহাস তৈরি করেছে।

#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image

Journalist Name : Sayantika Biswas

Related News