বিপন্ন অরণ্য!মডেল তামিলনাড়ু, পশ্চিমবঙ্গও কি একই পথে হাঁটবে?

banner

#PRAVATI SANGBAD DIGITAL DESK:

জলবায়ু পরিবর্তনের কথা মাথায় রেখে দক্ষিণের এই রাজ্য তৈরি করছে তামিলনাড়ু গ্রীন ক্লাইমেট কোম্পানি(TNGCC)। দেশের মধ্যে এটাই প্রথম এই ধরনের কোনও কোম্পানি বা নিগম তৈরি করল কোন রাজ্য সরকার। এই নিগমের কাজ হবে রাজ্যের জলবায়ু পরিবর্তন ঠেকানো-সহ সব-রকম কাজ করা।
এই নিগমের কাজ হবে রাজ্যের জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে সব ধরনের কাজ করা। ঠিক কী কাজ করবে TNGCC? প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছে, রাজ্যের গ্রিন হাউস গ্যাস কমানো, রাজ্যবাসীকে গণ পরিবহন ব্যবহারে উৎসাহিত করা, অচিরাচরিত শক্তির ব্যবহার বাড়ানোর পরিকল্পনা তৈরি করা, তামিলনাড়ুতে বনাঞ্চল বাড়ানো, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নত করা, পরিবেশ নিয়ে স্কুল কলেজে পঠন-পাঠন চালু করা, মহিলা ও শিশুদের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে বিশেষ পরিকল্পনা করা, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে শারীরিক প্রভাব কমানোর পরিকল্পনা করা এবং সামগ্রিকভাবে এই সব কিছু সঠিকভাবে রূপায়িত করার জন্য অর্থসংস্থান করাই হবে নিগমের প্রাথমিক কাজ।

তামিলনাড়ু সরকারের এই উদ্যোগ চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল যে, ওই রাজ্যের সরকার জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কতটা তৎপর। পশ্চিমবঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের ব্যাপক প্রভাব অনেকদিন আগে থেকেই লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশেষ করে সুন্দরবন এবং উত্তরবঙ্গের হিমালয়ের পাদদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ব্যাপকভাবে নজরে আসছে।
আয়লা, আমফানের মত সুপার সাইক্লোন সুন্দরবনের ওপর কি ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে, তা আমরা সকলেই জানি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সুন্দরবনের জলস্তরে পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। এর ফলে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ জঙ্গলের অস্তিত্ব এখন বিপন্ন। আই পি সি সি রিপোর্ট বলছে, পৃথিবীর দশটি সবচেয়ে বিপজ্জনক শহরের মধ্যে অন্যতম আমাদের কলকাতা। একইভাবে বিপন্ন উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিও। আইপিসিসি রিপোর্টে উত্তরবঙ্গ নিয়ে সতর্কবাণী শোনানো হয়েছে। বলা হয়েছে, উত্তরবঙ্গের নদীগুলিতে জলস্তর বাড়বে, হড়পা বানের মত হঠাৎ বিপদ বাড়বে বছর বছর। এই সবকিছু মাথায় রেখে পশ্চিমবঙ্গ কি তামিলনাড়ুর পথে হাঁটবে?

ইন্ডিয়ান স্কুল অফ বিজনেস-এর সহকারী অধ্যাপক এবং আইপিসিসির রিপোর্টের অন্যতম লেখক অঞ্জন প্রকাশ বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে বাংলা। অত্যন্ত সংবেদনশীল একটি রাজ্য। সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ বনে জলবায়ু পরিবর্তনের কি রকমের প্রভাব পড়েছে তা আমরা সকলেই জানি। ঘনঘন ঘূর্ণিঝড় থেকে পশ্চিমবঙ্গকে রক্ষা করতে সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ হল ফার্স্ট লাইন অফ ডিফেন্স।”
প্রকাশ বলেন, পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে এই বিষয়ে বিশেষ নজর দিতে হবে। বিশেষ করে এমন একটি সেল তৈরি করা উচিত, যা এই বিষয়গুলি নিয়ে পরিকল্পনা করবে এবং তৃণমূলস্তরে কাজ করবে।

রাজ্যের পরিবেশ আন্দোলনের কর্মী এবং আইনজীবী সুভাষ দত্ত বলেন, “তামিলনাড়ু সরকারের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানায়। পশ্চিমবঙ্গেও একই ধরনের একটি সংস্থা তৈরি হওয়া উচিত। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের সমস্যা হল, সুন্দরবনের বেশিরভাগ অংশ বাংলাদেশে এবং হিমালয়ের পাদদেশ অঞ্চলগুলো নেপাল এবং ভুটানের সঙ্গে ভাগ করে নিতে হয়। ফলে পরস্পর পরস্পরের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাই কাজ করতে হলে প্রতিবেশী দেশগুলিকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে হবে। সেখানে কেন্দ্র সরকারের একটা বড় ভূমিকা রয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের একার পক্ষে সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে তামিলনাড়ুর সুবিধা হল, তাদেরকে কেন্দ্রের ওপর নির্ভরশীল হয়ে থাকতে হয় না।”
ইন্ডিয়ান স্কুল অফ বিজনেস অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর এবং আইপিসিসির রিপোর্টের অন্যতম লেখক অঞ্জন প্রকাশ বলেন, পশ্চিমবঙ্গ জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে অত্যন্ত সংবেদনশীল একটি রাজ্য। সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ বনে জলবায়ু পরিবর্তনের কী রকমের প্রভাব পড়েছে তা আমরা সকলেই জানি। ঘনঘন ঘূর্ণিঝড় থেকে পশ্চিমবঙ্গকে রক্ষা করতে সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ হল ফাস্ট লাইন অফ ডিফেন্স। প্রকাশ বলেন, পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক নেতৃত্ব কে এই বিষয়ে বিশেষ নজর দিতে হবে। বিশেষ করে এমন একটি সেল তৈরি করা উচিত যারা এই বিষয়গুলো নিয়ে পরিকল্পনা করবে এবং তৃণমূল স্তরে কাজ করবে। রাজ্যের পরিবেশবিদ এবং আইনজীবী সুভাষ দত্তের মতে, তামিলনাড়ু সরকার এরকম একটা উদ্যোগ নিয়েছে তাকে তিনি সাধুবাদ জানান। কিন্তু তার প্রশ্ন হল এমন একটি অর্গানাইজেশন তৈরি না হয় উচিত যারা শুধুমাত্র ফাইভ স্টার হোটেলে সেমিনার করে থেমে থাকবে।
পশ্চিমবঙ্গেও এরকমের অরগানাইজেশন হলে ভালই হয়। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের সমস্যা হল সুন্দরবনের বেশিরভাগ অংশটা বাংলাদেশে এবং হিমালয়ের অঞ্চলগুলো আমাদের নেপাল এবং ভুটানের সঙ্গে ভাগ করে নিতে হয়। ফলে পরস্পর পরস্পরের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাই কাজ করতে হলে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে হবে। সেখানে কেন্দ্র সরকারের একটা বড় ভূমিকা রয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের একার পক্ষে সম্ভব নয়। এখানে তামিলনাড়ুর সুবিধা তাদের কেন্দ্রের ওপর নির্ভরশীল হয়ে থাকতে হয় না।

#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image

Journalist Name : Sampriti Gole

Related News