প্রকৃতি তার ভারসাম্য দিনের পর দিন যে ভাবে হারাচ্ছে, তাতে পৃথিবীর সব মানুষকে খুব শীঘ্রই ভয়াবহ প্রকৃতিক বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হবে।
এমনটাই জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। এর আগেও বহুবার প্রকৃতি নিয়ে সতর্কতা দারি করেছেন। কিন্তু বর্তমানে তাঁরা যে বার্তা দিয়েছেন, তা বেশ উদ্বেগজনক।
বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, কলম্বিয়ার নেভাডো দেল রুইজ আগ্নেয়গিরি, পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে বড় বিপর্যয়ের কারণ হতে চলেছে। ৩৮ বছর পর আবার জেগে উঠেছে এই আগ্নেয়গিরি। তাহলে এখন প্রশ্ন একটাই, তা হল বর্তমানে কলম্বিয়ান সরকার কী ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে? আর এই আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুত্পাত কতটা ভয়াবহ প্রভাব ফেলতে পারে?
ন্যাশনাল ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি অনুসারে, প্রায় ৫৭,০০০ মানুষ আগ্নেয়গিরির খুব কাছের অঞ্চলে বাস করে, যা ছয়টি প্রদেশে বিস্তৃত। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এখান থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া প্রয়োজন। কারণ এখানে যোগাযোগের তেমন কোনও ব্যবস্থা নেই।
তাই আগ্নেয়গিরির কাছাকাছি বসবাসকারী লোকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা কঠিন হতে পারে। তাদের পরিস্থিতি সম্পর্কে জানার আগেই অনেক বড় বিপদ হয়ে যেতে পারে। আর সেই সঙ্গে গ্লোবাল ভল্কানিজম প্রোগ্রাম সম্প্রতি একটি আপডেট দিয়েছে। তাতে জানানো হয়েছে, চলতি বছরের ৩০শে মার্চ, প্রায় ১১,৬০০টি ভূমিকম্প শনাক্ত করা হয়েছিল। যা আগামী দিনে বড় ধরনের বিস্ফোরণের কারণ হতে পারে।
আগ্নেয়গিরির অবস্থান কলম্বিয়ার রাজধানী বোগোটা থেকে প্রায় ১৩০ কিলোমিটার পশ্চিমে আন্দিজ পর্বতমালায়। নেভাদো দেল রুইজ ‘প্যাসিফিক রিং অব ফায়ার’-এর মধ্যে অবস্থিত, যা প্রশান্ত মহাসাগরকে ঘিরে আছে এবং এটি এই অঞ্চলের কয়েকটি সক্রিয় আগ্নেয়গিরির অন্যতম। প্রায় ২০ লাখ বছর ধরে এই আগ্নেয়গিরিতে অগ্ন্যুৎপাত হচ্ছে। অন্যান্য অনেক আন্ডেন আগ্নেয়গিরির মতো, নেভাডো দেল রুইজ একটি স্ট্র্যাটোভোলকানো একটি বিশাল, মোটামুটি শঙ্কু আগ্নেয়গিরি যা আগ্নেয়গিরির ছাই সহ শক্ত লাভা এবং টেফ্রার অনেক স্তর নিয়ে গঠিত।
১৯৮৫ সালে আগ্নেয়গিরির একটি শক্তিশালী অগ্ন্যুৎপাত আর্মেরো শহরকে গ্রাস করেছিল। অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনা স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবনে ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে আসে। অগ্ন্যুৎপাতের ফলে প্রচুর লাভা ও উত্তপ্ত গ্যাস নির্গত হয়। পর্বতটির উপরিভাগ পুরু বরফে চাদর আচ্ছাদিত ছিল। লাভা ও উত্তপ্ত গ্যাসের তাপে বরফ গলে যায়। ফলে উত্তপ্ত গ্যাস ও লাভার সঙ্গে উত্তপ্ত জল আশপাশের গ্রাম ছড়িয়ে পড়ে। একটি প্রবাহ ৫০ কিলোমিটার দূরে লেগুনিলা নদীর অববাহিকায় আর্মেরো শহরটিকে কার্যত ঢেকে ফেলেছিল। শহরের মোট ২৯ হাজার বাসিন্দার মাত্র এক-চতুর্থাংশ প্রাণে বেঁচেছিল।