প্রতি বছর ই বন থেকে উদ্ধার হয় গড়ে ৫০ টি লাশ। কোথায় অবস্থিত এই বন টি??

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

ঘন জঙ্গল,চারিদিকে উচুঁ উচুঁ গাছপালা ।নির্জন এক গভীর বন ,আর তার থেকেই প্রতিবছর উদ্ধার হয় গড়ে ৫০ টি করে লাশ।

শুনলেই গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে। হ্যা,এমন জায়গায় অস্তিত্ব সত্যিই আছে।

পৃথিবীতে আমরা এমন অনেক জায়গার নাম শুনি, যেগুলোর ব্যাপারে জানলে ভয়ে গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে।সাধারণত আমরা সেই সমস্ত জায়গা এড়িয়ে যেতে পছন্দ করি।

এমন ই এক জায়গা হলো এই বন।এই  বন টি অবস্থিত সূর্যোদয়ের দেশ জাপানে।জাপানের ফুজি পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত এই বন টির নাম আওকিগাহারা।এই বন থেকেই প্রতি বছর গড়ে খুঁজে পাওয়া যায় ৫০ টি লাশ।তবে মৃতদের কাউকেই হত্যা করা হয়নি।বলা হয় এটি আত্মহত্যার বন।জাপানে প্রতি বছর বহু হতাশাগ্রস্ত মানুষ এই বনে এসে আত্মহত্যা করেন।

এই বনে এসে মানুষের আত্মহত্যা করার কারণ কি ??

এই আওকিগাহারা বন কে নিয়ে স্থানীয় মানুষের মধ্যে অনেক ধারণা প্রচলিত রয়েছে।তারা মনে করেন ,এখানে আগে যারা আত্মহত্যা করেছেন,তাদের অতৃপ্ত আত্মা এখানে আজও ঘুরে বেড়ায় ।ফলে ,বনে কোনো মানুষ গেলে এই আত্মা রা ই তাদের বাধ্য করে আত্মহত্যা করতে।

তবে এইসব কাহিনীর সত্যতা কতটা তা জানা যায়নি।এর পেছনে একটি বিশ্বাসযোগ্য কাহিনী ও রয়েছে।


১৯৬০ খ্রিস্টাব্দে জাপানি লেখক সেইচো মৎসুমাতুর ' কুরোয় কাইজু ' নামক একটি রোমান্টিক উপন্যাস লেখেন ।সেই উপন্যাসের শেষে গল্পের প্রেমিক ও প্রেমিকা এই আওকিগাহারা বনে গিয়ে আত্মহত্যা করেন।এই উপন্যাসটি সেই সময় খুব ই জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল ।মনে করা হয় ,এই উপন্যাস থেকেই অনুপ্রাণিত হয়ে বহু মানুষ প্রতি বছর এই বনে গিয়ে আত্মহত্যা করেন।আত্মহত্যা কমাতে যাপন সরকার জাপানে এই বইটি ব্যান করেন।কিন্তু এরপর ১৯৯৩ সালে জাপানি লেখক ওয়াতারু তসরুমুই এর ' দ্যা কমপ্লিট সুইসাইড ম্যানুয়াল ' বইটি প্রকাশ করেন।এতেও এই বন টিকেই আত্মহত্যার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে।এরফলে এই বনে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে থাকে ।

এছাড়াও চারিদিক গভীর জঙ্গলে আবৃত এই বন্ টির মধ্যে পশুর সংখ্যা খুব কম ।তাই এই নির্জন পরিবেশকে মানুষ আত্মহত্যার জন্য বেছে নেন।

১৯৭০ সালের পর থেকে এই বনে প্রতিবছর প্রচুস মানুষের লাশ পাওয়া যায়।প্রতি বছর পুলিশ,প্রশাসন ,সাংবাদিক ও স্বেচ্ছাসেবীরা এই জঙ্গল থেকে লাশ উদ্ধার করেন ।জঙ্গলের মধ্যে পাওয়া যায় মানুষের ব্যাবহৃত জামা কাপড় ,ফোন ,ঘড়ি ,গাড়ি আরো বহু জিনিস।২০০২ সালে এই বন থেকে উদ্ধার হয় ৭৮ টি মৃতদেহ।২০০৩ এ উদ্ধার হয় ১০০ ও ২০০৪ এ ১০৮ টি মৃতদেহ।সব রেকর্ড কে ছড়িয়ে ২০১০ সালে মোট ২৪৭ টি মৃতদেহ আবিষ্কার হয়।

বিপুল পরিমাণ মানুষের আত্মহত্যা আটকাত ২০১৬ সালে জাপান প্রশাসন নানান নিয়মবিধি আরোপ করে।তবে লাভ হয়নি কিছুই । প্রতি বছর এত মানুষের মৃত্যু ভাবাচ্ছে জাপান সরকার কে।।

#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image

Journalist Name : Srimita Sasmal

Related News