"আমাদের এবারের স্লোগান উন্নততর নাগরিক পরিষেবা" - শ্রী কার্তিক মান্না

banner

#কাশিপুর:

 আজ কাশিপুর বেলগাছিয়া ১ নম্বর ওয়ার্ডের পুরভোটে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী শ্রী কার্তিক মান্নার সাথে সাক্ষাতের মাধ্যমে ভোটের আগে তার অঞ্চলের ভালো-মন্দ খবর এবং তাঁর রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার ইতিহাস জানা গেলো।

তার রাজনৈতিক জীবন অত্যন্ত ঘটনা বহুল ছিল, তাঁর প্রথম জীবন কেটেছে শিক্ষকতা করে, তিনি প্রথমে বরানগর নরেন্দ্রনাথ বিদ্যামন্দির সহ শিক্ষক ছিলেন, তারপর কুমার আশুতোষ এর হেড মাস্টার মশাই ছিলেন, ২০০৮ সালে শিক্ষা প্রশাসনে যুক্ত হন কলকাতা জেলার প্রাইমারি স্কুল কাউন্সিলের চেয়ারপারসন হন। মমতা ব্যানার্জি মুখ্যমন্ত্রী পদে আসীন হওয়ার পর তিনি আরও দুটি দায়িত্ব পান, এক মিড-ডে-মিল পরিচালনা ও দুই সর্বশিক্ষা মিশন প্রকল্পের কাজ। তারপর তৃণমূল কংগ্রেস তাকে ১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য প্রস্তাব দেয়, এবং তিনি সেই প্রস্তাবে সম্মতি প্রদান করেন এবং রাজনীতিতে অংশ গ্রহণ করে।
শিক্ষাঙ্গন থেকে রাজনীতির আঙিনা দুটো জায়গা সম্পূর্ণ রূপে আলাদা তা নিয়ে ওনার অভিজ্ঞতা কেমন? তার উত্তরে তিনি বলেন দুটো জায়গা সম্পূর্ণরূপে আলাদা, যখন শিক্ষাঙ্গনে ছিলাম তখন আমার কাজের মানুষ ছিলেন শিক্ষক-শিক্ষিকা, ছাত্র-ছাত্রী এবং নানারকম অফিসাররা আর রাজনীতির আঙিনায় আমার কাছের মানুষ এবং কাছের মানুষ সমগ্র জনসাধারণ এবং তাদের সব রকম কাজে পরিষেবা দেওয়া ও সুবিধা দেওয়া।
শিক্ষা ও রাজনীতি দুটোই সম্পূর্ণরূপে আলাদা, নিজেকে মানিয়ে নিতে কোনো অসুবিধা হয় নি? তিনি বলেন তার সেই হবে কোন অসুবিধা হয়নি, তার বক্তব্য "আমাকে এখনও নতুন অনেক কাজ শিখতে হবে, মানুষের দৈনন্দিন সমস্যা তাদের পাশে থাকা, সেই সব সমস্যার সমাধান করা এবং কে কোথা থেকে সাহায্য পেতে পারে তার খোঁজ খবর এনে দেওয়া, এই সমস্ত কাজ শিখতে হবে" মমতা ব্যানার্জি আসার পর থেকে ৮৪ প্রকল্প যেমন শিশুসাথী থেকে মৃত্যুর পর সমব্যথী পর্যন্ত প্রত্যেকটি প্রকল্প যেন এই ওয়ার্ডের মানুষরা পেতে পারেন তা দেখা যায় তা সম্পূর্ণভাবেই আমার। কারণ নাগরিকদের সুবিধার জন্য অনেক প্রকল্পই আছে, কিন্তু মানুষের অজ্ঞানতার কারণে সেই সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, তারা যাতে সেই বঞ্চনার শিকার না হন তা দেখার সম্পূর্ণ দায়িত্ব আমার।
শিশুসাথী থেকে মৃত্যুর পর সমব্যথী প্রত্যেকটি প্রকল্প কথা উঠলে প্রথমে যে অভিযোগ আসে তা হলো দুর্নীতি, সেই সে দুর্নীতি নিয়ে তিনি বললেন কোন প্রকল্প শুরু হলে সেখানে দুর্নীতি হবেই এবং সেই দুর্নীতি আমাদের কেউ আটকাতে হবে, যেকোনো কাজ শুরু করলে তাতে বাধা আসবেই আর সেইসব বাধাগুলোকে পেরিয়ে আমাদেরকে এগোতে হবে। 
আগেকার দিনের সরকার জনসাধারণকে যেকোনো কিছু দান করা বা দেওয়ার মাধ্যম ছিল পার্টি অফিস যেখানে দুর্নীতি হওয়ার সুযোগ বেশি কিন্তু এখন নানা রকমের প্রকল্পের টাকা যেমন কন্যাশ্রী, বিধবা ভাতা, লক্ষীর ভান্ডার, বিবেকানন্দ স্কলার্শিপ ও স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড থেকে শুরু করে সবকিছু ব্যাংকের মাধ্যমে জনসাধারণের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে যেখানে দুর্নীতির সুযোগ একদমই কম।
১ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের সংগঠন কেমন তা জানতে চাইলে তিনি পরিষ্কারভাবে বলেন এখানকার দলের অনেক কর্মী আছেন, তার মধ্যে বেশিরভাগই  নিঃস্বার্থভাবে দলের হয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। এখানকার একটি অসুবিধা যা কার্তিকপুর মুখে শোনা গেল তা হল মিক্সড পপুলেশন এখানে বাঙালিও আছেন নন বেঙ্গলিও আছেন ও উর্দু ভাষার লোকও আছেন, এখানকার বাংলা যত এগিয়ে আছে হিন্দি ততটা এগিয়ে নেই আবার উর্দু আরও পিছিয়ে পরে আছে। এখানে শুধুমাত্র শিক্ষার দিকটাতেই কিছুটা খামতি আছে, এখানে শিশু শ্রমিক বা ৬ থেকে ১৪ বছর পর্যন্ত শিশুদের স্কুলে থাকতেই হবে, আমাদেরকে সেটাই করতে, এখানে এই দুটো দেখি একটু সমস্যায় আছে।
তারা তাদের বিপক্ষের সাথে কিভাবে এই পুরভোটে মোকাবিলা করবেন তা জিজ্ঞাসা করলে তিনি হাসি মুখে বলেন "তাদের রাজনীতি তারা করবে, আমাদের রাজনীতি আমরা করব, আমাদের রাজনীতি তো উন্নয়ন। আমাদের এবারের স্লোগান উন্নততর নাগরিক পরিষেবা, মানুষ যা যা সুবিধা পায় সেইসব সুবিধাগুলি কে আরো গ্রাসরুট লেভেলে নিয়ে যেতে হবে। সমস্ত ধরনের পরিষেবা ময়লা পরিষ্কার থেকে আরম্ভ করে জমা জল পরিষ্কার করা এই সব কাজগুলি যাতে ঠিকঠাক সময়ের মধ্যে হয় তা আমাদেরকে দেখতে হবে।"
তিনি যদি এই বারের ভোটে জয়ী হন তবে তিনি কোন কোন কাজ গুলো দেখে সর্ব প্রথম অগ্রসর হবেন, তাতে তিনি বলেন ১ নম্বর ওয়ার্ডে সবচেয়ে অবহেলিত হল খোলা ড্রেন, সেই সব খোলা ড্রেন গুলোকে বন্ধ করতে হবে, রাস্তাঘাট ভালো হলেও তা আরও ভালো করতে হবে, আলোর ব্যবস্থা করতে হবে, পার্ক গুলোকে সংস্কার করতে হবে, জলাশয় গুলি কেউ বাঁধতে হবে, জল নিষ্কাশন এর কাঠামোটিকে সম্পূর্ণভাবে বদলে নতুন রূপে তৈরি করতে হবে, আরো একটি সমস্যা আছে এখানে যেটি হল রাস্তা পারাপার করতে গিয়ে এখানে অনেক দুর্ঘটনা ঘটে, তা বন্ধ করার জন্য চলমান সিঁড়ির সাহায্যে ব্রিজ করে এপার থেকে ওপারে যাওয়ার সুবিধা করতে হবে।
অবৈধ নির্মাণ তিনি কিভাবে আটকাতে পারেন তা জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন অবৈধ নির্মাণ আটকানোটা একটু খানি কষ্টকর, এই অবৈধ নির্মাণ গুলিকে কাউন্সিলের কখনো আটকাতে পারবেন না সে অধিকার তার নেই, অবৈধ নির্মাণ আটকাতে পারে একমাত্র জনগণ, আর তাছাড়াও এখন যে কোন অবৈধ নির্মাণ যদি আটকানো হয় সেই নির্মাণ কাজের সাথে যুক্ত লোক তাদের অন্নসংস্থানের অসুবিধা হবে, তাই সামাজিক ভাবে এই অবৈধ নির্মাণ আটকানো টা একটু অসুবিধার।
এবারের ভোট নিয়ে তিনি কতটা ইতিবাচক জায়গায় আছেন তা নিয়ে তিনি বলেন, তিনি চারিদিকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে সাড়া পাচ্ছেন তাদের দলীয় কর্মীরা আত্মতুষ্টিতে না ভুগলে এবং সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে তিনি ১০,০০০ এর বেশি ভোট জিতবেন।
বিরোধী পক্ষ তাদের বিরুদ্ধে ভোট প্রচারে সন্ত্রাসের অভিযোগ আনলেও তিনি তা অগ্রাহ্য করে বলেন এখানে সন্ত্রাস হওয়ার কোনো কারণ নেই, সন্ত্রাস না হওয়ার মূল কারণ হল মমতা ব্যানার্জি, কারণ সাধারণ মানুষ সব রকমের সুবিধা পাচ্ছেন তাই ভোটে জেতার জন্য সেখানে আলাদা করে সন্ত্রাসের কোন দরকার পরেনা। যে বিরোধীরা এ রাজ্যে দীর্ঘকাল সরকারের ছিল তারা তো চাইলে দু টাকা কিলো চাল করতে পারত, তারা চাইলে স্বাস্থ্যসাথী থেকে শুরু করে নানা রকমের প্রকল্প করতে পারত কিন্তু তারা করেনি, তাই তারা বিরোধিতা করছে। এমনকি গত কিছু বছরে এই রাজ্যে মহিলাদের সবকিছুতেই স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করার সংখ্যা অনেকটাই বেশি।
সবশেষে তিনি বলেন বিরোধীদের একটিমাত্র কথা যা পজিটিভ ভাবে নেওয়া যায় তা হল কর্মসংস্থান নেই কেন? কিন্তু সেই দিক থেকে দেখতে গেলে সবাইকে যে চাকরী করতেই হবে এমন তো কোনো ব্যাপার নেই, যারা চাকরি পাচ্ছেন না তারা ছোট ছোট ব্যবসা, গতিধারার গাড়ি উবের বা অলা তে চালাচ্ছেন এটাও তো একটা কর্মসংস্থান।
কাশিপুর বেলগাছিয়া এক নম্বর ওয়ার্ডে ঘোরার পরে এবং শ্রী কার্তিক মান্নার সাথে কথা বলার পর এইটুকুনি জানা গেল যে যদি তিনি যেতেন তবে এখানকার সার্বিক উন্নয়ন খুব শীঘ্রই হবে।

#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image

Journalist Name : Sourav Chattopadhyay

Tags:

Related News