হার্ট অ্যাটাককে দূর করতে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা এড়িয়ে চলুন, নির্দিষ্ট নিয়মবিধি মেনে চলুন

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

হৃৎপিণ্ড আমাদের দেহের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। জন্মের পর থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত অনবরত এটি কাজ করে চলেছে। এর মূল কাজ হলো দেহের প্রত্যেক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে রক্ত সরবরাহ করা। কিন্তু মাত্র ৩১০ গ্রাম ওজনের এই যন্ত্রটির ঠিকমতো কাজ করতে নিজেরও শক্তির প্রয়োজন হয়। এই শক্তি আসে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তের প্রবাহের মাধ্যমে। করোনারি ধমনীর মাধ্যমে হৃৎপিণ্ড নিজের জন্য এই রক্ত সরবরাহ করে। কোনো কারণে রক্ত সরবরাহ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেলেই বিপদ। একজন ব্যক্তি যেকোনো সময় হার্ট এট্যাকে আক্রান্ত হতে পারে। হতে পারে সেটা ঘুমের সময় বা বিশ্রামের সময় বা হঠাৎ ভারী কাজ করার পর কিংবা ইমোশনাল স্ট্রেসের জন্য। তবে শতকরা ৬০ ভাগ মানুষই ঘুমের মধ্যে হার্ট এট্যাকে আক্রান্ত হন। হার্ট এট্যাকে আক্রান্ত হলে কি ধরণের সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে তা নিয়েই আমাদের আজকের এই আয়োজন। আশা করি, এ ব্যাপারে আমাদের সবাইকে এই ব্যাপারে সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে। হৃৎপিণ্ডের করোনারী আর্টারিতে কোলেস্টেরল জমে ব্লক সৃষ্টি হলে ধমনীর রক্ত প্রবাহে বাঁধা সৃষ্টি হয়। অর্থাৎ ধমনীর প্রাচীর মোটা হয়ে সহজে রক্ত প্রবাহিত হতে পারে না এবং রক্ত জমাট বেঁধে যায়। হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণ হিসেবে গবেষণায় দেখা গেছে, জেনেটিক বৈশিষ্ট্য হৃদরোগের ক্ষেত্রে একটি অন্যতম কারণ। তবে বেশিরভাগ মানুষ নিয়ন্ত্রণ যোগ্য কারণে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়। এসব কারণের মধ্যে রয়েছে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, ধূমপান, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস, মানসিক চাপ, অতিরিক্ত ওজন ইত্যাদি। বর্তমানে মানুষের জীবনযাত্রার ধরণও হৃদরোগের অন্যতম বড় ঝুকিপূর্ণ কারণ। হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের যা লক্ষণ দেখা যায় 
বুকে অস্বস্তি:
এটি হার্ট অ্যাটাকের সবচেয়ে সাধারণ উপসর্গ। একজন ব্যক্তি চাপ, মোচড় ,পূর্ণতা বা ব্যথা অনুভব করতে পারেন যা বুকের মাঝখানে শুরু হয়। ব্যথা বা অস্বস্তি সাধারণত কয়েক মিনিটের বেশী স্থায়ী হয়। এটা চলে যেতে পারে এবং আবার ফিরেও আসতে পারে। এটি হাতে এবং পিঠে, বা মাথা এবং ঘাড়েও ছড়িয়ে পড়তে পারে।
শ্বাসের অভাব:
শ্বাসের অভাব বা আপনার বাতাসের জন্য হাঁকপাঁক করা হার্ট অ্যাটাকের একটি সাধারণ উপসর্গ। শ্বাস নিতে কষ্ট বা শ্বাসের অসুবিধা চিকিৎসাগতভাবে ডিসপেনিয়া নামে পরিচিত।
বমি বমি ভাব:
বমি ভাব হৃদরোগের একটি উপসর্গ। আপনি বমি বমি ভাব অনুভব করতে পারেন। কখনও কখনও বমি ভাবের সঙ্গে ঢেকুরও উঠতে পারে। এই উপসর্গ মহিলাদের মধ্যে সাধারণত দেখা যায়। এছাড়াও একটু চললেই হাঁফ লাগে,মাথা ঘুরতে পারে, খুব ঘাম হয়

এ বিষয়ে ভারতের চিকিৎসক ড. অরিন্দম বিশ্বাস জানান, বর্তমানে অল্প বয়সীদের মধ্যে হৃদরোগ বাড়ছে লাইফস্টাইলের কারণে। বিশেষ করে কম ঘুম। ৮ ঘণ্টার ঘুম অত্যন্ত জরুরি। এছাড়াও অতিরিক্ত চিন্তাও হৃদরোগের কারণ হতে পারে। একইসঙ্গে পিৎজ্জা, বার্গার জাতীয় ফাস্ট ফুড থেকে ধমনীতে চর্বি জমছে। যার ফলে রক্ত চলাচলে সমস্যা হয়ে ঘটছে হার্ট অ্যাটাক।
এছাড়াও বিশেষজ্ঞদের মতে, হার্ট অ্যাটাকের পারিবারিক ইতিহাস থাকলে বিশেষভাবে সতর্ক হওয়া উচিত। পাশাপাশি নিয়মিত শরীরচর্চা করতে হবে। যার কারণে বিশেষজ্ঞরা হাঁটার অভ্যাসের উপর বিশেষ জোর দিচ্ছেন।
হার্ট অ্যাটাক রোধে যা করনীয়-
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে প্রতিবছর ২০ লাখ মানুষ তামাক ব্যবহারের কারণে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। প্রতিবছর হৃদরোগে আক্রান্ত মৃত্যুর ৩০ শতাংশের জন্য দায়ী ধূমপান। শ্বাসতন্ত্রজনিত রোগে মৃত্যুর ২৪ শতাংশের পেছনে রয়েছে ধূমপান।
এশিয়ান পুরুষদের সঠিক ভুঁড়ির মাপ হচ্ছে ৯০ সেন্টিমিটার। আর নারীর ক্ষেত্রে ৮০ সেন্টিমিটার। এর বেশি ভুঁড়ি বাড়লেই বিপদ। এজন্য উচ্চতা অনুযায়ী ওজন ঠিক রাখুন। প্রতিদিন ২৫-৩০ মিনিট হাঁটা, ব্যায়াম, সাঁতার, জগিং, সাইকেল চালানো বা খেলাধুলা করার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক বিপদ হতে পারে। এজন্য মানসিক অবসাদ থেকে নিজেকে বাঁচাতে হবে। বয়স্কদের তুলনায় তরুণ-তরুণীরা অনেক বেশি শিকার হচ্ছেন মানসিক অবসাদের। এ কারণে বাড়ছে হৃদরোগ ও হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুর সংখ্যা।
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, হার্ট অ্যাটাকের আগে থেকে বেশিরভাগ আক্রান্তরই বদহজমের সমস্যা এবং গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল সমস্যায় ভোগেন। এ সময় শ্বাস নিতেও সমস্যা হতে পারে। এসব বিষয় নজরে পড়লে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image

Journalist Name : Aparna Dutta

Related News