কেমন হলো "অপরাজিত"! চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

মুক্তি পেল অনীক দত্তের পরিচালিত সিনেমা "অপরাজিত"। অপরাজিত ছবি নিয়ে দর্শকদের মধ্যে আগে থেকেই যথেষ্ট উন্মাদনা তৈরি হয়েছিল তার কারণ একটাই সাদাকালো পর্দায় বাংলার চলচ্চিত্রের আইকন সত্যজিৎ রায়ের জীবনের একটা বিশেষ অংশ এঁকেছেন পরিচালক অনীক দত্ত এই সিনেমায়। দর্শকদের সেই আশা হয়ত পূরণ করতে পারলেন পরিচালক। সত্যজিৎ রায় ওরফে অপরাজিত রায়ের ভূমিকায় জিতু কমল দর্শকের মন ছুঁয়ে নেন। ছবিতে তাঁর স্ত্রীর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন সায়নী ঘোষ। তিনিও অনবদ্য। সিনেমাটি শুরু হচ্ছে  আকাশবাণীতে অপরাজিত রায়ের সাক্ষাৎকার দিয়ে আর ফ্ল্যাশব্যাকে এগিয়ে চলে গল্প। পথের পাঁচালী ছবিতে নাম পথের পদাবলী ছবিকে কেন্দ্র করে সত্যজিৎ রায়ের জীবনছবি এঁকেছেন অনীক দত্ত। হুবহু সত্যজিৎ রায়ের মতো দেখতে জিতু কমলের উপস্থাপন প্রশংসার দাবি রাখে। তবে এই ছবি গতি পায় দ্বিতীয়ার্ধ থেকে দেশে ফিরে সত্যজিৎ তাঁর ছবি বানানোর জন্য খোঁজ শুরু করেন অপু,দুর্গা, ইন্দিরা ঠাকুরণদের। প্রযোজকের কাছে গিয়ে গিয়ে ছবির গল্প শোনানো ছবির জন্য অর্থ জোগাড় করতে প্রায় কালঘাম ছুঁটেছিল পরিচালকের। তবে সত্যজিৎ-এর এই সফরে সর্বক্ষণের সঙ্গী ছিলেন পরিচালকের স্ত্রী বিজয়া রায়।
ছবি যেন একটা নস্ট্যালজিক ট্রিপের মতো। পথের পাঁচালী ছবির আইকনিক কিছু দৃশ্যের শুটিং যেমন বৃষ্টিতে অপু দুর্গার স্নান, দুর্গার মৃত্যু, একসঙ্গে অপু দুর্গার ট্রেন দেখতে যাওয়া দইওয়ালার সঙ্গে অপু দুর্গা ও একটা কুকুরের শট, এমনকী, মৃত ইন্দির ঠাকরুণের শেষ যাত্রার শুটিং নিয়ে হাসি মসকরার এই সব কিছুই নিঁখুত ভাবে বড়পর্দা তুলে ধরেছেন পরিচালক অনীক দত্ত। ছবির বিভিন্ন দৃশ্যে দেখতে দেখতে মনে হতে পারেই যে দর্শক যেন সত্যজিতের ‘পথের পাঁচালী’ বানানোর সময়কালকে চাক্ষুস করছেন। এই ছবি সবদিক থেকেই ইতিহাস সৃষ্টি করেছিল। বদলে দিয়েছিল সিনেমার ব্যকরণ। এই ছবির হাতে ধরেই সিনেমায় এসেছিল যুগান্তকারী কিছু পরিবর্তন।
অ্যাড এজেন্সিতে চাকরি করতে করতেই বিলেতে যাওয়ার সুযোগ এবং সেখানকার সিনেমা হলে দ্যা বাইসাইকেল রাইড ছবিটি দেখে নিজে ছবি বানানোর অনুপ্রেরণা পান অপরাজিত রায়।পথের পাঁচালীর সবচেয়ে আশ্চর্য দৃশ্য কাশবনের ভেতর দিয়ে ট্রেনের ছুটে যাওয়া। এই দৃশ্যকেও অপরাজিত ছবিতে সুনিপুণ ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন পরিচালক অনীক দত্ত। দৃশ্যটিতে পরিচালকের মুন্সিয়ানা লক্ষ্য করার মতো। সে জন্যই বোধ হয় দর্শকদের পক্ষ থেকে সমবেত হাততালির আওয়াজ উঠে আসে প্রেক্ষাগৃহে। ইন্দির ঠাকরুনের মৃত্যু দৃশ্যটিও আমাদের আশ্চর্য করে। অপু ওরফে মানিকের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন শিশুশিল্পী আয়ুস এবং দুর্গা ওরফে উমার ভূমিকায় অনুষা বিশ্বনাথন।বিমান রায়ের ভূমিকায় বর্ষিয়ান অভিনেতা পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিনয়ের জাদু নতুন করে আর বলার অপেক্ষা রাখে না। অপরাজিত রায়ের মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন অনসূয়া মজুমদার।এ ছবি যে  মহান প্রতিভা সত্যজিৎ রায়ের জীবন নিয়েই সেকথা বুঝতে আর দর্শকের অসুবিধে হয় না।শেষে বলতেই হয় সত্যজিৎ রায়ের চরিত্রে জিতু কামলের অভিনয় সত্যি প্রশংসনীয়। সিনেমার মধ্যে হঠাৎই জিতুর মধ্যে দর্শকরা বাঙালির আইকন সত্যজিৎ রায়কে খুঁজে পাবেননি। তাই আর দেরি না করে সপরিবারে দেখে আসুন অনীক দত্তের সিনেমা "অপরাজিত"। 

#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image

Journalist Name : SRIJITA MALLICK

Related News