#Pravati Sangbad Digital Desk:
বিশ্বে জনপ্রিয় খেলাগুলির মধ্যে ভলিবল একটি। ২০১১ সালের একটি হিসেব অনুযায়ী বর্তমানে পৃথিবীতে ২০০ মিলিয়ন সক্রিয় ভলিবল খেলোয়াড় রয়েছে, ৫০০ মিলিয়ন লোক এ খেলাটিকে বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করেছে এবং ২১৫টি দেশ আন্তর্জাতিক ভলিবল সংস্থা এফআইভিবি-র এফিলিয়েটেড সদস্য, যা যে কোন খেলার আন্তর্জাতিক সদস্য সংখ্যার চেয়ে বেশি। ১৯৯৫ সালে ভলিবলের শতবর্ষ পূর্ণ হয়েছে। এ খেলাটি ১৮৯৫ সালে আবিষ্কার করেন আমেরিকার নিউইয়র্ক শহরের অধিবাসী উইলিয়াম জি. মর্গান। তিনি এ খেলার নাম দেন মিনটোনেট। ১৮৯৭ সালে ভলিবল খেলার আইন-কানুন প্রথম পুস্তিকাকারে প্রকাশিত হয়। ১৯৪৭ সালে ফ্রান্সে আন্তর্জাতিক ভলিবল ফেডারেশন গঠিত হয়। এই সংস্থার যাত্রা শুরু হয়েছিল ১১টি দেশের এফিলিয়েশনের মাধ্যমে। ফ্রান্সের মি. এল লুৎবাড ছিলেন নবগঠিত এই সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। ১৯৬৪ সালে টোকিও অলিম্পিকে ভলিবল প্রতিযোগিতার ইভেন্টে অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৯৪৯ সালে সিনিয়র বিশ্ব ভলিবল চ্যাম্পিয়নশিপ, ১৯৫২ সালে জুনিয়র বিশ্ব ভলিবল চ্যাম্পিয়নশিপ, ১৯৬৫ সালে পুরুষ ভলিবল বিশ্বকাপ, ১৯৭৩ সালে মহিলা বিশ্বকাপ ভলিবল, ১৯৭৭ সালে বিশ্ব জুনিয়র চ্যাম্পিয়নশিপ চালু হয়।
এফআইভিবি-এর সভাপতি মেক্সিকোর ড. একোস্টার কর্তৃক ভলিবলের উন্নতির জন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফলে প্রচলিত ‘বিচ’ ভলিবল সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। কয়েক বছরের মধ্যেই বিচ ভলিবল স্থান করে নিয়েছে বিশ্ব অলিম্পিকে। বিনোদনের জন্য প্রবর্তন করা হয়েছে ‘পার্ক ভলিবল’। অবসর বিনোদনে, পিকনিক বা ভ্রমণকালে স্বল্পপরিসরে খেলার জন্য এটির আয়োজন করা হয়। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে লিবারো খেলোয়াড়, রেলিপয়েন্ট সিস্টেম, প্রয়োজনে পা দিয়ে খেলা, সার্ভিসের বল নেট টাচ প্রভৃতির মধ্য দিয়ে ভলিবল খেলার সংস্কার ও পরিবর্তন সাধিত হয়। তবে এ খেলায় প্রত্যেক দলে ৯ জন খেলোয়াড় থাকে। শুধু হাত ব্যবহার করে বল পারাপার করতে হয়। তবে নেটের একপাশে সর্বোচ্চ তিনজন খেলোয়াড় র্যালি করে বল নেটের অন্য প্রান্তে পাঠাতে পারে। যে দল সার্ভিস করে সেই দল যদি বলটির র্যালির সমাপ্তি নিজেদের পক্ষে রাখতে পারে অর্থাৎ নিজেদের কোর্টে বলকে মাটি ছুঁতে না দেয় বা নেট পার করে প্রতিপক্ষের কোর্টের বাইরে না ফেলে তবে একটি পয়েন্ট লাভ করবে। আর র্যালির সমাপ্তি যদি বিপক্ষ দলের পক্ষে যায় তাহলে সার্ভিসের দিক পরিবর্তন হয়।
তবে মহিলারা পিছিয়ে থাকেননি ,খুব শীঘ্রই এই শক্তিশালী গেমটি আয়ত্ত করেছেন।প্রথম ইউরোপীয় মহিলা ভলিবল চ্যাম্পিয়নশিপ ১৯৪৯সালে ফিরে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সোনার পুরষ্কারগুলি তখন সোভিয়েত অ্যাথলিটদের কাছে যায়। তবে আমাদের দেশেও আইপিএল এর ধাঁচে শুরু হয়েছে ভলিবলের ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ। শুধুমাত্র দেশের ভলিবলের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মই নয়। এই টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছেন বিদেশের অনেক ভলিবল তারকাও। কিন্তু ক্রিকেট, ফুটবলের মতো এদেশে ভলিবলের সম্প্রসারণ এখনও হয়নি। তবে প্রত্যেকেই আশাবাদী যে এই লিগের পর ভারতে ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা বাড়বে ভলিবলেরও। তবে আমাদের পাশের দেশ বেশ ভলিতে পারদর্শী । সত্তর ও আশির দশকে ইয়াদ আলী ছিলেন বাংলাদেশের ভলিবলের সুপারস্টার। শুধু দশকের হিসেবেই বা কেন, পরবর্তীকালে আর কোনো খেলোয়াড়ই তাঁর মতো জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারেননি। বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনেও দারুণভাবে আলোচিত ছিলেন মো. ইয়াদ আলী। ফুটবলে খেলোয়াড় হিসেবে যেমন জনপ্রিয়তার তুঙ্গে ছিলেন কাজী সালাউদ্দীন, ভলিবলেও তিনি ছিলেন তা-ই।
তবে এতে কোনো সন্দেহ নেই যে ভারতের মহিলা ভলিবল খেলোয়াড়রা পুরুষ অপেক্ষা কিছুটা হলেও বেশি সাফল্য পেয়েছেন। ভলিবল লিগ মহিলা খেলোয়াড়দের আরও বেশি এক্সপোজার দেওয়ার পাশাপাশি মহিলা গেমের প্রচার করেছে। ভক্তরা আশা করছেন যে ভারতীয় মহিলা ভলিবল দল বিশেষ করে ভবিষ্যতের এশিয়ান গেমসে পদক নিয়ে দেশে আরও বেশি সম্মাননা এনে দেবে।