স্প্যানিশ ফুটবলের ইতিহাসে আরেকটি স্মরণীয় রাত উপহার দিল বার্সেলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদ। উত্তেজনায় ঠাসা, নাটকীয়তা আর আবেগে পরিপূর্ণ ফাইনালে অতিরিক্ত সময়ে ৩-২ ব্যবধানে জয় ছিনিয়ে নিয়ে কোপা দেল রে-র ৩২তম শিরোপা ঘরে তুলল কাতালান জায়ান্টরা। ম্যাচে ৮৩ মিনিট পর্যন্ত ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে ছিল রিয়াল, কিন্তু শেষ দিকে হান্সি ফ্লিকের শিষ্যদের দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনে বদলে যায় ম্যাচের চিত্র।
প্রসঙ্গত, ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণ-প্রতি আক্রমণে জমে ওঠে খেলা। ম্যাচের ২৮ মিনিটে তরুণ মিডফিল্ডার পেদ্রি বার্সার হয়ে প্রথম গোলটি করেন। পাস এসেছিল লামিনে ইয়ামালের কাছ থেকে। প্রথমার্ধে বার্সেলোনা ছিল বেশ দাপুটে, একাধিক সুযোগ তৈরি করে তারা। অতিরিক্ত সময়ে বক্সের বাঁ দিক থেকে ঢুকে পড়েন রাফিনিয়া, যাকে বাধা দেন রিয়ালের রাউল আসেনসিও। রেফারি রিকার্দো দে বুর্গোস বেনগোচেয়া প্রথমে পেনাল্টির বাঁশি বাজালেও ভিএআর দেখে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন। রাফিনিয়াকে হলুদ কার্ড দেখানো হয় ডাইভের জন্য। বিরতির পর রিয়াল মাদ্রিদ নিজেদের ছন্দে ফেরে। আক্রমণের গতি বাড়িয়ে দেয় আনচেলত্তির দল। ৭০ মিনিটে সমতা ফেরান কিলিয়ান এমবাপে, যা ছিল ম্যাচে তাঁর প্রথম গোল। এরপর ৭৭ মিনিটে গোল করেন অরেলিয়েন চুয়ামেনি—রিয়ালকে প্রথমবারের মতো এগিয়ে দেন তিনি। ২-১ স্কোরলাইনের পর অনেকেই ভেবেছিলেন, শিরোপা বুঝি এবার সান্তিয়াগো বার্নাব্যুরই পথে। কিন্তু ফ্লিকের দল হাল ছাড়েনি। মাত্র সাত মিনিটের ব্যবধানে ফেরান তোরেসের গোলে সমতায় ফেরে বার্সা—আবারও ইয়ামালের পাস থেকেই। নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষে স্কোরলাইন ২-২, ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। যখন মনে হচ্ছিল টাইব্রেকারে গড়াবে ফাইনাল, তখনই জ্বলে উঠলেন বার্সা ডিফেন্ডার জুলস কুন্দে। ১১৬ মিনিটে লুকা মদ্রিচের একটি ভুল পাস কুন্দে দখল করে ২৫ গজ দূর থেকে জোরালো শটে জাল কাঁপান।
কাশ্মীরে ফের রক্তাক্ত হামলা, জেহাদিদের নিশানায় এবার সমাজকর্মী
উলেখ্য, গোল খাওয়ার পর ধৈর্য হারায় রিয়াল। ১২৩ মিনিটে এমবাপের ফ্রিকিকের আবেদন উপেক্ষা করলে উত্তেজনা চরমে ওঠে। রুডিগার বেঞ্চ থেকে উঠে এসে মাঠে ঢুকে পড়েন, রেফারির দিকে তেড়ে যান। ফলস্বরূপ লাল কার্ড দেখতে হয় তাঁকে। একইসঙ্গে লাল কার্ড দেখেন লুকাস ভাসকেজ ও জুড বেলিংহ্যামও। যদিও মাঠে উত্তেজনার পারদ ছিল তুঙ্গে, ম্যাচ শেষ হওয়ার পর সৌজন্যের ছাপ রাখে দুই দল। ট্রফি গ্রহণের সময় রিয়ালের ফুটবলারদের ‘গার্ড অব অনার’ দেয় বার্সেলোনা। মরসুমের তৃতীয় এল ক্লাসিকোতে জয় তুলে নিয়ে আরেকবার নিজেদের ঐতিহ্যিক শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করল কাতালানরা।