ভারতীয় প্রজাতন্ত্র বিশ্বের সর্বাধিক জনবহুল নির্বাচিত গণতন্ত্র। এই রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক বৃদ্ধির হার অত্যন্ত দ্রুত। ২০০৭ সালে ৮.৯ শতাংশ জিডিপি বৃদ্ধির কারণে বর্তমানে এটি চীনের পর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রধান অর্থব্যবস্থা। ভারতের সামরিক বাহিনী বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম। ক্রয়ক্ষমতা সমতায়ও চতুর্থ বৃহত্তম ভারত এই কারণে একটি আঞ্চলিক শক্তি ও মধ্য শক্তি হিসেবে গণ্য হয়।আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারতের ক্রমবর্ধমান প্রভাব এই কারণে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ইস্যুতে ভারতের কণ্ঠস্বরকে মজবুত করেছে। ১৯৪৭ সালে যুক্তরাজ্যের অধীনতাপাশ থেকে মুক্ত হয়ে ভারত কমনওয়েলথ অফ নেশনস-এ যোগ দেয় এবং ইন্দোনেশীয় জাতীয় বিপ্লব সহ বিভিন্ন উপনিবেশের স্বাধীনতা আন্দোলনকে জোরালো সমর্থন দান করে। ভারত বিভাগ ও বিভিন্ন ক্ষেত্রীয় বিবাদকে (বিশেষত কাশ্মীর বিবাদ) কেন্দ্র করে পরবর্তী বছরগুলিতে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের মধ্যে টানাপোড়েনের সৃষ্টি করে। ঠান্ডা যুদ্ধের সময় ভারত কোনো আন্তর্জাতিক শক্তিজোটকে সমর্থন না করার সিদ্ধান্ত নেয়। যদিও সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে ভারত ঘনিষ্ঠ সংযোগ গড়ে তোলে এবং উক্ত রাষ্ট্র থেকে বহুবিধ সামরিক সহায়তাও লাভ করে। ঠান্ডা যুদ্ধের সমাপ্তি সারা পৃথিবীর মতো ভারতের বিদেশনীতিতেও গভীর প্রভাব বিস্তার করে। এই সময় ভারত যে সকল আন্তর্জাতিক শক্তিগুলির সঙ্গে কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ককে শক্তিশালী করার দিকে মনোযোগ দেয়, সেগুলি হল: যুক্তরাষ্ট্র, গণপ্রজাতন্ত্রী চীন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন,জাপান, ইসরায়েল, মেক্সিকো, ও ব্রাজিল । অ্যাসোসিয়েশন অফ সাউথ-ইস্ট এশিয়ান নেশনস, আফ্রিকান ইউনিয়ন,আরব লীগ, ও ইরানের সঙ্গেও ভারত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলে। ভারত রাশিয়ার সঙ্গে সামরিক সম্পর্ক বজায় রেখে চললেও,ইসরায়েল ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম সামরিক সহযোগী রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও ভারত শক্তিশালী এক রণনীতিসংক্রান্ত সহযোগিতা গড়ে তোলে। ২০০৮ সালে ভারত-মার্কিন অসামরিক চুক্তি সাক্ষরিত ও প্রযুক্ত হয়।
এই ঘটনাকে দেখা হয় ভারত-মার্কিন সম্পর্কের উন্নতির একটি ধাপ হিসেবে। ভারতের সঙ্গে বিভিন্ন রাষ্ট্রের সহযোগিতার সম্পর্কের ইতিহাস বেশ পুরনো। ভারতকে মনে করা উন্নয়নশীল বিশ্বের এক নেতা।ভারত একাধিক আন্তর্জাতিক সংঘের সদস্য, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য রাষ্ট্রসংঘ, জোট-নিরপেক্ষ আন্দোলন, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক ও জি২০ ইন্ডাস্ট্রিয়াল নেশনস। এছাড়াও যে সব আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে ভারতের গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রয়েছে, সেগুলি হল ইস্ট এশিয়া সামিট, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা, আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডার,ও আইবিএসএ ডায়ালগ ফোরাম । ভারত যেসব আঞ্চলিক সংঘের সদস্য সেগুলি হল সার্ক ও বিম্সটেক। ভারত বিভিন্ন শান্তিপ্রক্রিয়া সংক্রান্ত অভিযানে অংশগ্রহণ করে এবং ২০০৭ সালে রাষ্ট্রসংঘের দ্বিতীয় বৃহত্তম সেনা সরবরাহকারী রাষ্ট্র ঘোষিত হয়। বর্তমানে ভারত রাষ্ট্রসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ ও জি৪ নেশনস-এর স্থায়ী সদস্যপদ লাভের প্রত্যাশী। বিশ্বের ১৫টি দেশে ভারতীয় পাসপোর্টে ভিসা ছাড়াই ভ্রমণ করা যায় । এগুলি হলো : নেপাল, ভুটান, হংকং, মালদ্বীপ, মরিশাস, জর্দান, কম্বোডিয়া, বলিভিয়া, ম্যাকাও, জামাইকা, ফিজি, হাইতি, ব্রিটিশ ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জ, ত্রিনিদাদ ও টোবাগো এবং ডোমিনিকা । বিদেশমন্ত্রক হল ভারতের বিদেশি সম্পর্কের জন্য দায়ী ভারতীয় সরকারের সংস্থা। মন্ত্রিপরিষদের সদস্য হিসাবে বিদেশমন্ত্রীর মন্ত্রিসভা পদমর্যাদা রয়েছে। মন্ত্রকের সদরদপ্তর সাউথ ব্লক, কেন্দ্রীয় সচিবালয় (ভারত)।