ইতিমধ্যেই রান্নার গ্যাসের
গ্রাহকদের আধার কার্ডের তথ্য যাচাইয়ের জন্য বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে।
সমস্ত গ্যাস এজেন্সির দোকানের সামনেই লম্বা লাইনের ছবি ধরা পড়ছে। গত কয়েকদিন ধরেই
ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঠাঁই দাঁড়িয়ে থেকে নিজেদের বায়োমেট্রিক তথ্য নথিভুক্ত করাচ্ছেন
গ্রাহকেরা। কিন্তু এই কাজ করতে গিয়ে নাজেহাল হচ্ছেন বহু গ্রাহক। লিঙ্কের কাজ না হলে
যদি রান্নার গ্যাসই না পান এই ভয়ে লম্বা লাইনে দাঁড়াচ্ছেন সাধারণ মানুষ। কিন্তু অনেকগুলো
সমস্যা দেখা দিয়েছে। তার মধ্যে মিলছে না বহু প্রবীণের আঙুলের ছাপ।
এদিকে, বহু গ্যাস ডিলারের
অফিসে রেটিনার বায়োমেট্রিকের ব্যবস্থা নেই।
এই অবস্থ্যায় সব গ্রাহকের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে গ্যাসের বায়োমেট্রিক করানো অসম্ভব।
বৃহস্পতিবার সর্বভারতীয়
এল পি জি ডিস্ট্রিবিউটারস ফেডারেশনের সহ-সভাপতি বিজন বিহারী বিশ্বাস জানিয়েছেন, বিভিন্ন
তেল কোম্পানিগুলি ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বায়োমেট্রিক করতে বলেছে, তবে ডিস্ট্রিবিউটাররা
মনে করছে এই তারিখ আরও বাড়ানো হবে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রক থেকে এখনও কোনও রকম নোটিফিকেশন
আসেনি।
এল পি জি ডিস্ট্রিবিউটারস
ফেডারেশনের সহ-সভাপতি বিজন বিহারী বিশ্বাসের জানিয়েছেন যে এত গ্রাহকের জন্য ৩১ ডিসেম্বরের
মধ্যে সবার সংযুক্তিকরণ সম্ভব নয়। তাই যারা করতে পারবেন না, তাদের ক্ষেত্রে যে সঙ্গে
সঙ্গে ভর্তুকি বন্ধ হয়ে যাবে,সেটা নয়। গোটা বিষয় মূলত উজ্জ্বলা প্রকল্পের জন্যই।
কিন্তু যারা ১৯ টাকা ৫৭ পয়সা ভর্তুকি পান তাঁদের ক্ষেত্রেও এটা করতে হবে। তবে এখনই
বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো কোনও নির্দেশিকা আসেনি।
গ্রাহকদের অনেকেরই আশঙ্কা বা আতঙ্ক নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নিজেদের বায়োমেট্রিক নথিভুক্ত না করলে গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে না তো? এই আতঙ্কেই যতদিন গড়াচ্ছে, ততই বাড়ছে লম্বা লাইন। ঠিক যেভাবে নোটবন্দির সময় অথবা করোনা টিকার ডোজ নেওয়ার সময় লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন উদ্বিগ্ন মানুষ, এখন সেভাবেই গন্তব্য গ্যাস ডিলারদের দোকান। দোকান খোলার আগে সাত সকাল থেকেই লাইনে দাঁড়িয়ে পড়ছেন বহু মানুষ। এরপর দিনভর আর লাইনে লোক কমছে না।
মাত্র কয়েকদিন সময়সীমা থাকায় উপভোক্তাদের মধ্যে হুড়িহুড়ি শুরু হয়ে যায়। গ্যাস ডিলারদের অফিসের সামনে রোজই লম্বা লাইন পড়ছে। বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা শীতের সকাল থেকে লাইনে দাঁড়াচ্ছেন। তা নিয়ে উপভোক্তাদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছিল। অবশেষে সেই সময়সীমা না থাকার খবরে উপভোক্তাদের মধ্যে স্বস্তি মিলল। মাত্র কয়েকদিনের সময়সীমা থাকায় একশ্রেণির ডিলার ফায়দা তুলছিল বলেও অভিযোগ উঠেছে। তাঁরা গ্রাহকদের গ্যাসের পাইপ নিতে বাধ্য করেছিলেন। কেন্দ্রীয় পেট্রলিয়াম মন্ত্রক থেকে সাফ জানানো হয়েছে, কাউকে জোর করে পাইপ বিক্রি করা যাবে না। তবে যাদের পাইপ পাঁচ বছরের পুরনো হয়ে গিয়েছে, নিরাপত্তার স্বার্থে তা বদল করা উচিত।
বিপিসিএলের দুর্গাপুর বিভাগের
ম্যানেজার তমোঘ্ন ত্রিপাঠী বলেন, গ্রাহকরা ৩১ডিসেম্বরের পরও বায়োমেট্রিক করতে পারবেন।
তাড়াহুড়ো করার কোনও দরকার নেই। আপাতত সময়সীমা অনির্দিষ্টকাল। এছাড়া কোনও গ্রাহকই
পাইপ কিনতে বাধ্য নন। তবে পাইপ পুরনো হলে তা নিজেদের স্বার্থেই বদলানো উচিত। শক্তিগড়ের
গাস ডিলার রাজীব ভৌমিক বলেন, গ্রাহকরা বাড়িতে বসেও অ্যাপের মাধ্যমে বায়োমেট্রিক করতে
পারেন। এছাড়া আমরা বিভিন্ন জায়গায় ক্যাম্প করছি। গ্রাহকরা নিজেদের সময়মতো এসে বায়োমেট্রিক
করতে পারেন।