প্রযুক্তি নির্ভরতায় কি বাড়ছে সাইবার ক্রাইমের সংখ্যা!

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

আধুনিক প্রযুক্তি যত উন্নত হচ্ছে তার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে লোক ঠকানোর প্রযুক্তিগুলিও। ইলেকট্রনিক যন্ত্র মোবাইল বা কম্পিউটার এর মাধ্যমে লোক ঠকানোর এবং অপরাধ সংঘটিত হলে তাকে সাইবারক্রাইম বলে। মূলত ইন্টারনেট কে হাতিয়ার করে সাইবার অপরাধ ঘটে।

সাইবার ক্রাইম ঠকানোর জন্য বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন আইন থাকলেও অপরাধ ঘটার আগে সচেতন হওয়া উচিত। সচেতনতার প্রথম পদক্ষেপগুলো বিষয়টি সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকা। কিন্তু কি এই সাইবার ক্রাইম? কিভাবে বুঝব সাইবারক্রাইম হচ্ছে? বলা যায় ডিজিটাল মাধ্যমে এর সাহায্যে করা আর্থিক ক্ষতি, ভাইরাস ইমপ্ল্যান্ট, হুমকি দেওয়া, হ্যাকিং ইত্যাদি সাইবার ক্রাইম। অন্যান্য অপরাধের তুলনায় সাইবারক্রাইম যেহেতু নতুন তাই প্রতিদিনের নতুন ধরনের সাইবার ক্রাইম লিপিবদ্ধ হচ্ছে। এদিক দিয়ে বিচার করলে সাইবারক্রাইমকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। প্রথমটি হলো ইচ্ছাকৃতভাবে করার ক্ষতি। দ্বিতীয়টি হলো তথ্যের অভাবে অনিচ্ছাকৃতভাবে করা ভুল। 


ইন্টারনেটের ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সাইবারক্রাইমের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। কারণ অপরাধী সনাক্ত করা, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া এবং সেই সংক্রান্ত আইনি জটিলতা। সাইবার ক্রাইম প্রতিনিয়ত তার ধরন পরিবর্তন করতে থাকে তাই আর্থিক ক্ষতি ছাড়া অন্যান্য গুলি তেমনভাবে আইনি স্বীকৃতি পায়নি। আর্থিক ক্ষতি সাধন করে এমন এক ক্রাইম হল হ্যাকিং যার মাধ্যমে বিনা অনুমতিতে অন্য কারো কম্পিউটারে প্রবেশ করে সেই কম্পিউটারের কাজ কর্ম নিয়ন্ত্রণ করা। সবক্ষেত্রে হ্যাকিং ক্ষতিকারক হয় না বা শাস্তিমুলক হয়না। হোয়াইট হ্যাট হ্যাকারদের মাধ্যমে সফটওয়্যার কোম্পানি গুলি নিজেদের রক্ষা করে। এছাড়াও ভাইরাস, ম্যালওয়ার ও রনসামওয়ার শব্দগুলি কমবেশি সকলের কাছেই পরিচিত। এরা মূলত ডিভাইসের কার্যক্ষমতা নষ্ট করে দেয়। 


এছাড়াও স্প্যামিং আইডেন্টিটি সকলের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। স্প্যামিং হলো এক ধরনের তথ্য যা অনিয়ন্ত্রিতভাবে সার্ভারে প্রবেশ করে এবং সার্ভার অত তথ্য না রাখতে পেরে ক্রাশ করে। আইডেন্টিটি থেফ্ট-এর মাধ্যমে কোন ব্যক্তির নিজ সনাক্তকরণ তথ্য যেমন নাম, ফোন নাম্বার, ক্রেডিট কার্ড নম্বর তার অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করে অপরাধ সংঘটিত হয়। তখন তাকে আইডেন্টিটি থ্রেডস বলা হয়। এর মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড আলোচিত বিষয়। কোন ব্যক্তির ক্রেডিট কার্ড নম্বর চুরি করে তার মাধ্যমে আর্থিক লেনদেন হয়। সাইবার অপরাধীরা ব্যক্তিদের বিভিন্ন তথ্য যেমন পার্সোনাল ইনফরমেশন, ছবি, ভিডিও, ব্যাংকিং ইনফর্মেশন প্রভৃতি ডার্ক ওয়েবের বাজারে বিক্রি করে।


গুগোল প্রচলিত সাইবারক্রাইম গুলির মধ্যে আরেকটি হলো ফিশিং। বড়শিতে মাছ ধরার মত এই অপরাধ হয়ে থাকে। মাছ যেমন বড়শিতে চারা দেখে নিজের বিপদের কথা ভুলে গিয়ে গিলে ফেলে তেমনি ফিশিং ইমেল মারফত হয়। লোভনীয় ও বিশ্বাসযোগ্য ইমেইলের সাথে ভাইরাস ফাইলের লিঙ্ক দেওয়া থাকে। স্বরূপ বলা যায় একটি ইমেইল এসেছে যাতে লেখা আছে লটারিতে পুরস্কার জিতেছেন, পুরস্কারের টাকা ব্যাংকে নিতে নিচের লিংকে ক্লিক করুন, সেই লিঙ্কে ক্লিক করলে হ্যাকার আপনার আইডি ও পাসওয়ার্ড পেয়ে যেতে পারে। প্রতিদিনই এমন ইমেইল আসতে থাকে। 

বড় প্রশ্ন হল সচেতন হব কিভাবে? সাইবারক্রাইম যেহেতু কম্পিউটার বা মোবাইল এর মাধ্যমে হয়ে থাকে তাই এইগুলি সুরক্ষিত রাখা প্রয়োজন। সফটওয়্যার আপডেট করা অন্যতম উপায়। এখন প্রায় প্রতিটি সফট্ওয়ারে অ্যান্টিভাইরাস থাকে। তাই আপডেট করলে নতুন ফিচারের সাথে শক্তিশালী এন্টিভাইরাস থাকে যা ফোন বা কম্পিউটার বা সুরক্ষিত রাখে। এছাড়া প্রতিটি একাউন্টের জন্য আলাদা আলাদা স্ট্রং পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা যেতে পারে এবং নির্দিষ্ট সময় অন্তর তা পরিবর্তন করতে হবে। ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডের পিন কিছুদিন পর পর পরিবর্তন করা, অজ্ঞাত ইমেল না খোলা এবং কোনরকম সন্দেহজনক লিংকে ক্লিক না করা সচেতনতা প্রথম পদক্ষেপ।


বর্তমান যুগে ডেটা সিকিউরিটি ও সাইবারক্রাইম বেড়েই চলেছে কখনও তা ফোন কলের মাধ্যমেও হয়। তাই যে কোন কোম্পানি বা ব্যাংক ফোন মারফত তথ্য চাইলে তা সঙ্গে সঙ্গে না দিয়ে সরাসরি ব্যাংক কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করা উচিত। সাধারণ বুদ্ধি এবং একটু সচেতনতা বড় ধরনের বিপদের হাত থেকে বাঁচিয়ে দিতে পারে।


#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image

Journalist Name : Satarupa Karmakar

Related News