ভবিষ্যৎ-এর আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কী ছাপিয়ে যাবে মানুষের বুদ্ধিমত্তাকে!

banner

#Kolkata:

সোফিয়া রোবট-এর কথা কম বেশি সকলেই জানে। আর রোবট কিভাবে কাজ করে সেই প্রেক্ষিতে আসে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের কথা। মানব জীবনের যাবতীয় কর্মকান্ডের সাথে এখন আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স যুক্ত। গুগল সার্চে ফুল বানানো থেকে প্রয়োজনীয় বিজ্ঞাপন দেখানো সব আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মনিটর করার ফলে হচ্ছে। ফলে মানুষ কম সময়ে তার প্রয়োজনীয় সার্ভিস পাচ্ছে।

শুধুমাত্র গুগল-সার্চে বিজ্ঞাপন নয় এআই মেইলবক্স কেও সুরক্ষিত রাখে। অপ্রয়োজনীয় যাবতীয় মাল নিয়ে গিয়ে জমা করে স্প্যাম ফোল্ডারে। এআই ঠিক বুঝতে পারে কোনটা দরকারি আর কোনটা ক্ষতিকর। ঠিক একইভাবে পছন্দের ইউটিউব ভিডিও সাজেশন এ চলে আসে।


কিন্তু কি এই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স? বাংলায় অনুবাদ করলে এই আই এর মানে দাঁড়ায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। বল যে মানুষের বুদ্ধিমত্তার প্রয়োজনীয় কাজগুলো করতে সক্ষম কম্পিউটার প্রোগ্রাম হলো এআই। 

এ নিয়ে প্রচুর গবেষণা চললেও বিজ্ঞানী ও প্রযুক্তিবিদরা বলেন মানুষের সর্বোচ্চ উন্নতির বা ধ্বংসের কারণ হতে পারে। বর্তমান সময়ে কম্পিউটার মেশিন মানুষের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করে কিন্তু এ আই নিজেই চিন্তা করতে বা সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে পারবে। এই মূলত তিন প্রকার। উইক এ আই, স্ট্রং এআই এবং সুপার ইন্টেলিজেন্স। বর্তমান সময়ে আমরা উইক এ আই ব্যবহার করি যা কিছু নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর কাজ করতে সক্ষম। স্ট্রং এ আই হল রোবটটিক এ আই যা মানুষের মতো চিন্তা ভাবনাও সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম ও সুপার ইন্টেলিজেন্স হলো যা মানুষের ক্ষমতা কে অতিক্রম করবে।


পঞ্চাশের দশকে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের ধারণা শুরু হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য প্রযুক্তিগত অগ্রগতির প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। গণিতবিদ অ্যালান টুরিং এবং নিউরোলজিস্ট গ্রে ওয়াল্টর বুদ্ধিমান মেশিনের সম্ভাবনা সম্পর্কে ধারণা দেন। পরে কম্পিউটার বিজ্ঞানী জন ম্যাকার্থি একে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নামে অভিহিত করেন। 

১৯৭০-১৯৮০ এরমধ্যে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর উন্নতি কম ছিল হাজার ১৯৯০ এর দশকে মিন্সকি এর পদ্ধতি অনুযায়ী প্রোগ্রামিং কম্পিউটারের সাথে অ্যালগরিদম যোগ করে আর্টিফিশিয়াল কম্পিউটারের উদ্ভব ঘটে। 


এ আই এর মাধ্যমে ডাটা সংরক্ষণ, খনিজ সম্পদ উত্তোলন এর কাজ গুলি রোবট এর মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে করানো যাবে ফলে পণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি হবে ও ব্যয় হ্রাস পাবে।

এ আই এর ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা নিয়ে বলা যায় যে আগামী ৪৫ বছরের মধ্যে মানুষের কাজ স্বয়ংক্রিয় হয়ে যাবে। যোগাযোগ, স্বাস্থ্য, বিজ্ঞান, ব্যবসা-বাণিজ্যে, সামরিক ব্যবস্থা প্রভৃতি আধুনিক রূপ দান করবে। এছাড়া ভাষা অনুবাদের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে এই এ আই।

যেমন সব কাজের ভালো ও খারাপ দিক আছে তেমন এ আই এর ক্ষতিকারক দিক হিসেবে পদার্থবিজ্ঞান স্টিফেন হকিংস বলেন যে এ আই এর পূর্ণ সফলতা সুপার ইন্টেলিজেন্স মানব জাতিকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দেবে দেবে যদি না একে মানুষের নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখা যায়। কারণ স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র বা রোবটের মাধ্যমে যুদ্ধ হলে হয়তো এটি হবে মানব সভ্যতার ইতিহাসে সর্বশেষ যুদ্ধ। 


আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নিয়ে শুধু স্টিফেন হকিংস নয়, এলন মাস্ক, বিল গেটস এর মত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিদরাও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। কিলার রোবটের বিষয়টি তার মধ্যে অন্যতম। কিলার রোবট হলো যারা মানুষের সাহায্য ছাড়া শত্রুপক্ষকে চিহ্নিত করবে এবং আক্রমণ করতে পারবে। যদিও বর্তমানে এই ধরনের অস্ত্র নেই তবে অদূর ভবিষ্যতে তার সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। কর্মক্ষেত্র গুলিতেও নিয়ন্ত্রণ থাকবে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর মানব জাতির জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি। পুঁজিবাদীদের হাতে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর নিয়ন্ত্রণ গেলে তা মুনাফা লাভের সবচেয়ে বড় স্থান হয়ে উঠবে ফলে হয়তো দেখা যেতে পারে পৃথিবী আবার সাম্রাজ্যবাদীদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। 

সবশেষে বলা যেতে পারে যে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মানুষের সবচেয়ে বড় উন্নতির সম্ভাবনা ও বন্ধু হতে পারে। আবার হতে পারে ধ্বংসের কারণ ও । ভালো খারাপ দুটোই নির্ভর করছে মানুষের ব্যবহারের উপর। ফলে এখন থেকে সর্তকতা গ্রহণ না করলে তা পরবর্তীকালে ধ্বংসের কারণ হয়ে দাঁড়াবে।


#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image

Journalist Name : Satarupa Karmakar

Related News