উপাচার্য নির্বাচন নিয়ে রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রী সংঘাত

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

রাজ্য রাজ্যপাল বিরোধ নতুন কিছু নয়, এর আগেও বহুবার রাজ্যের প্রশাসক মণ্ডলীর সাথে সংঘাত চরমে উঠে ছিল রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের। কখনও দুর্নীতি বা রাজ্যের কোন প্রকল্পের নিন্দা করতে সরাসরি মাঠে নেমে পড়েছিলেন রাজ্যপাল, এর জন্য অনেকেই তাকে বিজেপির মুখপাত্রও বলেছিলেন। তবে তাতেও সংঘাত মেটেনি। এবার একবার ফের তুঙ্গে উঠেছে রাজ্য রাজ্যপাল সংঘাত। গত বৃহস্পতিবার রাজ্যের ২৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগকে কেন্দ্র করে বেনিয়মের অভিযোগ তুলেছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। তালিকাই ছিল রাজ্যের যাদবপুর, কলকাতা, প্রেসিডেন্সি, কল্যানি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়গুলি। টুইট করে তিনি বলেছিলেন, “ আচার্যের অনুমতি ছাড়াই বেআইনি পথে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্য নিয়োগ করছে রাজ্য সরকার। এর বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত”। কার্যত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাসের মেয়াদ গত ২৩শে জুন ফুরিয়ে গেছে, সেই মতো বিকাশ ভবন রাজ্যপালের কাছে উপাচার্যের মেয়াদ বৃদ্ধির দাবিতে চিঠি পাঠান কিন্তু রাজ ভবন সুত্রে কোন উত্তর তারা পাননি। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে রাজ্য সরকারই উপাচার্য সুরঞ্জন দাসের মেয়াদ বৃদ্ধি করে, আর তাতেই বিরোধ বাঁধে। রাজ ভবন সুত্রে দাবি করা হয়েছিল তাদের নাকি কোন রকম উপাচার্যের পদের মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য কোন রকম নথি তারা পাননি। বরং উচ্চ শিক্ষা দপ্তরের দাবি রাজ ভবন থেকে নাকি উপাচার্যদের নাম সংক্রান্ত নামের ফাইলই ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
সিপিএম সরকারের আমলে রাজ্যের শিক্ষা দপ্তর থেকে ৩টি নাম আচার্য অর্থাৎ রাজ্যপালের কাছে পাঠানো হতো, তিনি সেই নামের তালিকা থেকে একজনকে উপাচার্য পদের জন্য বেছে নিতেন। কিন্তু বর্তমান সরকার সেই নিয়ম বদলে ৩ জনের সার্চ কমিটি প্রতিষ্ঠা করে, সেই কমিটি ক্রমানুসারে ৩ জনের নাম সাজিয়ে রাজ্যপালের কাছে পাঠান। সেই সার্চ কমিটিতে রাজ্যপালের পক্ষ থেকে একজন, আদালতের পক্ষ থেকে একজন এবং সরকারের পক্ষ থেকে একজন করে মোট ৩ জন প্রতিনিধি থাকেন। তারাই নামের তালিকাই থাকা ব্যাক্তিদের নাম সাজিয়ে পাঠান আচার্যের কাছে। তবে বিশিষ্ট ব্যাক্তিদের মতে সেই নামের প্রথমে থাকা ব্যাক্তিই উপাচার্য হওয়ার জন্য সব থেকে যোগ্য দাবীদার হন, ফলে রাজ্যপাল সাধারণত সেই প্রথম ব্যাক্তিকেই উপাচার্য হিসাবে বেছে নেনে।

সম্প্রতি ২০শে ডিসেম্বর রাজ্যপাল রাজ্যের সমস্ত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্যদের সাথে বৈঠক করতে চেয়ে আমন্ত্রন জানান, কিন্তু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলির পক্ষ্য থেকে জানানো হয় উপাচার্যরা এদিন আসতে পারবেন না। পরে ফের ২৩শে ডিসেম্বর উপাচার্যদের আসার জন্য নিমন্ত্রন পাঠানো হয় রাজ ভবন থেকে, কিন্তু এদিনও হাজির থাকেননি তারা। এই ঘটনার পরেই  রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় রাজ্যের শিক্ষা ব্যাবস্থার ওপর অভিযোগ তুলে বলেছিলেন, “ বর্তমান সরকারের আমলে রাজ্যে শিক্ষার হাল ভয়াবহ। আচার্য বৈঠক দাক্লে উপাচার্যরা উনুপস্থিত থাকেন।“।   

এর পরেই শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু সাংবাদিক সম্মেলনে এসে বলেন, “ উনি সব সময় বাঁধা দেন, তাই ওনাকে আচার্যের পদ থেকে সরানোর কথা ভাবছি। মুখ্যমন্ত্রীকেই যদি আচার্য করা যায় সেই বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে”। শিক্ষামন্ত্রীর এই বক্তব্যের জেরেই বেজায় রুষ্ট হন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। তিনি বলেন, “ রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী বলছেন, মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য করবেন, শুধু আচার্য কেন, দিদিকে বরং রাজ্যপালই করে দেওয়া হোক”। রাজ্য রাজ্যপাল বিরোধ এখন শীতের মরশুমেও রাজ্য রাজনীতিকে বেশ উত্তপ্ত করে রেখেছে।

#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image

Journalist Name : Sabyasachi Chatterjee

Tags:

Related News