স্মরণে অটল বিহারী বাজপেয়ী

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

আজ দেশের ১৬তম প্রধানমন্ত্রী, প্রয়াত অটল বিহারী বাজপেয়ীর ৯৭তম জন্ম বার্ষিকী। ১৯২৪ সালের ২৫শে ডিসেম্বর গোয়ালিয়রে জন্ম হয় তার, যা বর্তমানে মধ্যপ্রদেশের অন্তর্গত। মায়ের নাম কৃষ্ণা দেবী এবং বাবা কৃষ্ণ বিহারী বাজপেয়ী, বাবা পেশায় ছিলেন একজন স্কুল শিক্ষক। অটল বিহারী বাজপেয়ী দেশবাসীর কাছে এক গর্বের নাম। দীর্ঘ পাঁচ দশকের ভারতীয় রাজনীতিতে তার অবদান। অটল বিহারী বাজপেয়ী একজন সর্বজন গ্রাহ্য ব্যাক্তি ছিলেন। ১৯৩৯ সালে রাষ্ট্রীয় সেবা সংঘ বা আরএসএস এর হাত ধরে প্রথম রাজনৈতিক জীবনের শুরু, এরপর কত উত্থান পতন। ১৯৪৪ সালে আর্য সমাজ যুব শাখার সাধারণ সম্পাদক হিসাবে নির্বাচিত হন তিনি। ১৯৪২ সালে ভারত ছাড়ো আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকাও নিয়েছিলেন তিনি, যার জন্য তাকে এবং তার বড় ভাই প্রেমকে ২৪ দিন কারারূদ্ধ করা হয়েছিল। তবে কোন দিনই দমে থাকেন নি। ১৯৫৭ সালের সাধারণ নির্বাচনে সংসদের নিম্ন কক্ষের লোকসভা নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন তিনি। তার নমনীয় ভদ্র কিন্ত পরাক্রমি স্বভাবের জন্য নজর কেড়েছিলেন বর্ষিয়ান নেতাদের। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু লোকসভায় ভাষণ দিতে উঠে ভবিষ্যতবানি করেছিলেন অটল বিহারী বাজপেয়ী একদিন ভারতের প্রধানমন্ত্রী হবেন। দীনদয়াল উপাধ্যায়ের মৃত্যুর পর জনসংঘের নেতৃত্ব দেওয়ার  ভার দেওয়া হয় অটল বিহারী বাজপেয়ীকে। 

অটল বিহারী বাজপেয়ী ছিলেন বিজেপির এক স্তম্ভ তবে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সফর খুব একটা সহজ ছিল না তার কাছে। ১৯৫৭ সালে লোকসভায় নির্বাচিত হন অটল বিহারী বাজপেয়ী। ১৯৯৬ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন তিনি, কিন্ত তা ছিল মাত্র ১৩ দিনের জন্য।  ১৯৯৬ সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের জন্য যখন গোটা দেশ উত্তাল ঠিক তখনই তৎকালীন রাষ্ট্রপতি শঙ্কর দয়াল শর্মা বাজপেয়ীকে বিজেপি সরকার গঠন করার জন্য বলেন, ভারতের দশম প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ গ্রহণ করেন অটল বিহারী বাজপেয়ী। তবে সংখ্যা গরিষ্ঠতা না পাওয়ার কারনে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। 
প্রথম থেকেই তার লক্ষ্য ছিল দেশের যুব সমাজের প্রগতি। এরপর ১৯৯৮ সালে ফের ক্ষমতাই আসে অটল বিহারীর সরকার, তবে দ্বিতীয় পর্বের মেয়াদ ছিল ১৩ মাস। প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন তিনি দেশের পারমাণবিক শক্তির উপর বিশেষ নজর দিয়েছিলেন। ১৯৭৪ সালে ভারত তার প্রথম পারমাণবিক বোমার পরীক্ষা চালাই। দীর্ঘ ২৪ বছর পর ১৯৯৮ সালের মে মাসে রাজস্থানের পোখরানে পাঁচটি পারমাণবিক বোমার সফল বিস্ফোরণ ঘটাই বাজপেয়ী সরকার।  ১৯৯৯ সালে তিনি আবারও দিল্লির মসনদে বসেন, তবে এবার আর সাময়িক ভাবে নয়। প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন তিনি পাকিস্তানের সাথে অনেক বন্ধুত্ব রক্ষার চেষ্টা করছিলেন। কিন্ত ১৯৯৯ সালের করছিল যুদ্ধ বন্ধুত্বের মান রাখেনি। রাজনৈতিক জীবন বাদ দিলেও তার প্রতিভার অভাব ছিল না।

তিনি ছিলেন সমাজসেবি সাহিত্যিক কবি সাংবাদিক। ২০০৪ সালে তার প্রধানমন্ত্রীত্বের মেয়াদ শেষ হয়। ২০০৯ সালে বার্ধক্য জনিত কারণে সক্রিয় রাজনীতির থেকে সরে আসেন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উত্থানের পেছন তার অবদান ভোলার নয়। ২০০১ সালে কার্যত জোর করেই বেনারসের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদীর নাম ঘোষণা করেন। ২০১৮ সালের ১৬ই আগষ্ট দিল্লির এমস এ বার্ধক্য জনিত কারণে ৯৪ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। আজ ২৫শে ডিসেম্বর তার ৯৭তম জন্ম বার্ষিকীতে আমরা জানাই তাকে অসংখ্য প্রণাম ।

#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image

Journalist Name : Sabyasachi Chatterjee

Related News