গোলাপি ঠোঁট আমরা সকলে পছন্দ করি কিন্তু অযত্ন অবহেলা, শারীরিক নানান কারণ ও কিছু বদঅভ্যাসের কারণে ঠোঁটের স্বাভাবিক গোলাপী ভাব নষ্ট হয়ে তা কালচে ও মলিন হয়ে পরে। ঠোঁট কালো হওয়ার একটি বড় কারণ ধূমপান হলেও আরও কিছু কারণে ঠোঁট কালো হতে পারে। সূর্যের আলো, রুক্ষতা, বংশগত, ইত্যাদি কারণে ঠোঁট কালো হয়ে যায়।আবার অনেক সময় ভিটামিনের অভাবেও ঠোঁটের স্বাভাবিক রং নষ্ট হতে পারে।একটু যত্নশীল হলেই ঠোঁটের কালচেভাব দূর করা সম্ভব।
চলুন জেনে নেওয়া যাক প্রাকৃতিক উপায়ে আপনার ঠোঁট গোলাপি করে তোলার কয়েকটি টিপস-
লেবুর রস : লেবুর রস খুবই ভালো ত্বকের জন্য, এটি একটি ব্লিচিং উপাদান হিসেবে পরিচিত। ঠোঁটের কালচেভাব দূর করতে এটি খুবই কার্যকরী একটি উপকরণ। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে সামান্য লেবু চিপে রসটি দিয়ে ঠোঁট খুব ভালোভাবে ম্যাসেজ করুন। নিয়ম মেনে প্রতিদিন এই কাজটি করুন। কয়েকদিনের মধ্যেই ঠোঁটের রঙের পার্থক্য দেখতে পাবেন।
দুধের সর : দুধের সরের মাধ্যমে ঠোঁটের গোলাপি আভা ধরে রাখার এই পদ্ধতিটি প্রাচীনকাল থেকেই চলে আসছে। প্রাচীন যুগে রানীরা এই পদ্ধতি ব্যবহার করতেন। আপনিও এই পদ্ধতির মাধ্যমে আপনার ঠোঁটের হারানো দ্যুতি ফিরে পেতে পারেন। দুধের সরে মধু মিশিয়ে ঠোঁটে লাগান। দিনে বেশ কয়েকবার ব্যবহারে কিছুদিনের মধ্যেই আপনার ঠোঁটে ফিরবে গোলাপি আভা।
নারকেল তেল:ফাটা ঠোঁট কেউ পছন্দ করেন না। তুলতুলে গোলাপি ঠোঁট আপনার সৌন্দর্য বহুগুণ বাড়িয়ে দেবে । ফলে এমন ঠোঁট পেতে গেলে একটু নারকেল তেল আঙুলে নিয়ে ঠোঁটে লাগিয়ে নিন। এতেই মিলবে আকর্ষণীয় তুলতুলে গোলাপি ঠোঁট।
বিট :ঠোঁট গোলাপি করতে কাজ করবে বিট। বাজারে প্রায় সারা বছরই বিট কিনতে পাবেন। প্রথমে বিট থেকে রস বের করে নিন। এবার সেই রসের সঙ্গে মেশান দুধের সর। মিশ্রণটি ভালোভাবে ঠোঁটে ব্যবহার করুন। মিনিট দশেক অপেক্ষা করে ধুয়ে নিন। এরপর লিপবাম লাগান। এভাবে প্রতিদিন ব্যবহার করতে পারলে ঠোঁট গোলাপি হবে দ্রুত।
বেদানা :বেদানা শুধু যে আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো তা কিন্তু নয়, এটি আমাদের ঠোঁট সুন্দর রাখতেও সাহায্য করে। ঠোঁটকে গোলাপি করতে বেদানার ব্যবহার করতে হলে সামান্য বেদানার রস, দুধের সর ও গোলাপজল একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি ঠোঁটের ওপর ম্যাসাজ করতে হবে কিছুক্ষণ। এরপর ধুয়ে নিয়ে লিপবাম বা পেট্রোলিয়াম জেলি লাগিয়ে নিতে হবে।
কাঁচা হলুদ :আমাদের ত্বকের যত্নে কাঁচা হলুদের ব্যবহার বেশ পুরোনো। এটি ঠোঁটের রং সুন্দর করতেও সাহায্য করে। সেজন্য প্রয়োজন হবে দুধের সর। দুধের সরের সঙ্গে কাঁচা হলুদের রস মিশিয়ে ঠোঁটে ব্যবহার করুন। এরপর মিশ্রণটি শুকাতে দিতে হবে। শুকিয়ে গেলে তুলে পরিষ্কার জল দিয়ে ধুয়ে নিন।
বরফ থেরাপি : অনেকেই বরফের এই গুণটি সম্পর্কে ধারণা রাখেন না। যে কোন দাগের ওপর বরফ ঘষলে দাগ হালকা হয়ে যায়। ঠোঁটে এক টুকরো বরফ ঘষুন প্রতিদিন। এতে আপনার ঠোঁটের কালচেভাব দূর হবে। বরফ ঠোঁটের আর্দ্রতার পরিমাণ ঠিক রেখে ঠোঁটকে রুক্ষতার হাত থেকেও পরিত্রাণ দেবে।
অনেক সময় ঠোঁটের উপর নানান ঘরোয়া উপায় প্রয়োগ করেও কিছুতেই কোনও কাজের কাজ হয় না। সে ক্ষেত্রে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গেও কথা বলে নেওয়া উচিত, তবে যা-ই করুন না কেন, মনে রাখবেন যে রাতারাতি ফল পাবেন না কোনও কিছুতেই। ধৈর্য ধরে একটু অপেক্ষা করতেই হবে।