ব্যাঙ্কে অনুৎপাদক সম্পদের জন্য সরকারের লোকসান কত- জানতে চান ব্যাঙ্ক কর্মীরাই

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

এনডিএ আমলে বেসরকারিকরণ, নাম বদলিকরন খুব একটা অস্বাভাবিক ঘটনা নয়। বিগত কিছু বছর ধরে একে একে বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে রেল, বিমান, বিএসেনেল এর মতো রাষ্ট্রয়াত্ত সংস্থা। এবার রাষ্ট্রয়াত্ত ব্যাঙ্ক গুলির বেসরকারিকরণের পালা। বেসরকারিকরণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল অনেক আগেই, এবার শুধু বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ার অপেক্ষা। তবে ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণের বিরোধিতা করেছেন অনেকেই তার মধ্যে রয়েছেন ব্যাঙ্ক কর্মীরাও। তাদের মতে রাষ্ট্রয়াত্ত ব্যাঙ্ক থেকে লোকসানের পরিমাণ কতটা পরীক্ষা করতে হবে।


মঙ্গলবার হওয়া একটি বৈঠকে ব্যাঙ্কের অফিসার সংগঠনের দাবি ব্যাঙ্ক বেসরকারি হাতে যাওয়ার আগে ব্যাঙ্কের হিসাবের খাতা খতিয়ে দেখুক সিএজি, তাহলেই বোঝা যাবে অনুৎপাদক সম্পদের পরিমাণ কত। দিল্লির অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক অফিসার্স কনফেডারেশন এর পক্ষে জানানো হয়েছে গত সাত বছরে প্রায় ৮ লক্ষ কোটি টাকার ঋণ মুছে দেওয়া হয়েছে রাষ্ট্রয়াত্ত ব্যাঙ্কের খাতা থেকে। তবে কেন্দ্র সরকারের দাবি অনুৎপাদক সম্পদের পরিমাণ মুছে ফেলার অর্থ এই নয় যে ঋণ মুকুব করা হবে। তবে এখনও পর্যন্ত প্তায় ৪ লক্ষ্য কোটি টাকার বেশি ঋণ আদাই করা হয়েছে। অনাদায়ি ঋণের ধাক্কা সামলাতে প্রায় ৩ লক্ষ্ কোটি টাকারও বেশি অর্থ ঢালতে হয়েছে কেন্দ্র সরকারকে, ধাক্কা খেয়েছে রাজকোষ। তাই কেন্দ্র সরকারের ক্ষতির পরিমাণ জানতে দরকার সিএজি পরীক্ষা।


কনফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৌম্য দত্তের মতে, “ কেন্দ্র চাইছে যেই সমস্ত বেসরকারি সংস্থা তাদের ঋণ শোধ করতে পারছে না কেন্দ্রীয় সরকার চাইছে তাদের বেসরকারি হাতে তুলে দিতে। কিন্তু তার মতে বেসরকারিকরণের ফলে কোন সমস্যার সমাধান করা যায় না”। রাষ্ট্রয়াত্ত ব্যাঙ্কের বেসরকারিকরণ কি কারণে জনস্বার্থ বিরোধী তা নিয়ে রিপোর্টও প্রকাশ করেছে ফেডারেশন। তাতে প্রকাশ হয়েছে ইন্দ্রনীল চৌধুরী, রোহিত আজাদ এবং প্রসেনজিৎ বসুর মতো অর্থনীতিবিদদের মন্তব্য। রিপোর্টে বলা হয়েছে, “ বকেয়া অর্থের মাত্র ৩০ শতাংশ আদায় হয়েছে, কোন লাভ হচ্ছে না দেওলিয়া বিধি কাজে লাগিয়েও। বকেয়া অর্থের পরিমাণ প্রায় ৭ লক্ষ কোটি টাকার কাছাকাছি কিন্তু আদায় হয়েছে মাত্র ২.৫০ লক্ষ কোটি টাকার কাছাকাছি”। ফেডারেশন মঞ্ছে উপস্থিত ছিলেন রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্বরাও। উপস্থিত ছিলেন সিপিএম পলিট ব্যুরো নেতা নীলোৎপল বসু, তাছাড়া ছিলেন তৃণমূলের সাংসদ। সৌগত রায় বলেন, “ কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী দেশের দুটি বড় রাষ্ট্রয়াত্ত ব্যাঙ্ক বেসরকারির হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে”। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সিতারামানকে তিনি “বিগেস্ট সেলস্ম্যান” বলে কটাক্ষ করেছেন।


চলতি অর্থ বর্ষেই দেশের দুটি রাষ্ট্রয়াত্ত ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণ করা হবে বলে আগেই জানিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সিতারামান। তবে সোমবার অর্থ মন্ত্রক সুত্রে জানা গেছে দেশের কোন দুটি ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণ করা হবে তা নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি। এদিকে আজ ১৬ই ডিসেম্বর এবং কাল ১৭ই ডিসেম্বর ইউনাইটেড ফোরাম অফ ব্যাঙ্ক ইউনিয়নস এর পক্ষ থেকে ব্যাঙ্ক ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে বেসরকারিকরণের প্রতিবাদে। যার জেরে ব্যাহত হতে পারে এটিম পরিষেবাও। মোদী সরকারের ইচ্ছে ছিল এই  শীতকালীন অধিবেশনেই ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণ বিল পাশ করিয়ে নেওয়ার কিন্তু এখনও  পর্যন্ত তা হয়নি। ২৩শে ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে শীতকালীন অধিবেশন হাতে মাত্র আর কিছু দিন। ধর্মঘট শেষ হলে আগামী সপ্তাহেই বিল পাশ করা হবে বলে সুত্র মারফৎ জানা গিয়েছে।  


#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image

Journalist Name : Sabyasachi Chatterjee

Related News