Flash news
    No Flash News Today..!!
Tuesday, April 30, 2024

আবেগের দিনবদল

banner

#Pravati Sangbad digital Desk:

শরৎকাল মানেই বাঙালির কানে ভেসে আসে ঢাঁকের আওয়াজ, মনে ফুটে ওঠে কাশফুল, চোখে ভেসে ওঠে ধুনুচি নাচ আর কন্ঠস্বর বলে "মা আসছে"। শারদীয়ার আগমনের পাশাপাশি ছোটো থেকে বড়ো সকলের মধ্যেই এক নতুন আনন্দের অনুভূতি জেগে ওঠে। কথায় আছে বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ, কিন্তু এই তেরো পার্বণের মধ্যেও বাঙালি অপেক্ষারত থাকে তার সব থেকে বড় উৎসব, 'দূর্গৎসব'-এর জন্য। হিন্দুশাস্ত্র অনুযায়ী শরৎকালে সকল দেবদেবী নিদ্রামগ্ন থাকেন, এবং পুরাণে উল্লেখ আছে শ্রীরাম, রাবণের সঙ্গে যুদ্ধে যাওয়ার আগে এই সময় দেবী দুর্গার আরাধনায় পূজা করেছিলেন। এই পূজা অকালে করা হয়েছিল বলে শরৎকালের এই দূর্গৎসব 'অকালবোধন' নামেও পরিচিত।

ক্যালেন্ডারের সালগুলোর সংখ্যা পরিবর্তনের সাথে সাথেই আমাদের মধ্যেও নানান পরিবর্তন এসেছে। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে সমাজের যেরকম পরিবর্তন এসেছে সেরকম ভাবেই পাল্টেছে সংস্কৃতিও। একদম শুরুতে দূর্গা পূজা হতো পারিবারিক, মাকে সেখানেই মাটি দিয়ে গড়ে সাজানো হতো ডাকের সাজে, মহালয়া থেকেই শুরু হয়ে যেতো পূজোর সেই আনন্দময় উৎসব। রথযাত্রা শেষ হওয়ার পর থেকেই বাচ্চাদের মধ্যে শুরু হয়ে যায় দূর্গাপূজার দিন গোনা। পূজোতে কার ক'টা জামা হলো, কার ক'টা জুতো হলো এই নিয়েই গল্প চলত বাচ্চাদের মধ্যে। বড়োদের মধ্যেও থাকতো টানটান উত্তেজনা। যোগাযোগ ব্যবস্থা কম থাকার কারণে পূজোর জন্য অপেক্ষা করত সকলেই সবার সাথে দেখা হবে এই আশায়। তখন পূজো মানেই সকালে ঠাকুর দালানে আড্ডা দেওয়া আর বিকেল হলেই পরিবার, বন্ধুবান্ধব বা আত্মীয়দের সাথে একটু ঘোরাঘুরি করা। শুধুই যে ঘোরা আর মজা করা তা নয় পূজোর কাজেও সাহায্য করতো ছোটো থেকে বড়ো সকলেই। মায়ের প্রতি ভক্তি, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা দিয়েই কাটতো পূজোর সবকটা দিন।

এখন প্রায় সর্বত্রই দূর্গাপূজা হয়, শুধুমাত্র দেশে নয় এখন বিদেশেও দূর্গৎসব পালন করা হয়। এখনের পূজোয় এসেছে আধুনিকতার ছোঁয়া। এখনের প্রতিমা নানা ধরনের সাজে সাজানো হয়ে থাকে। বিভিন্ন জায়গায় এলাকা ভিত্তিক থিম পুজো করা হয়। পুজোর দিন কাজের চাপে কেউ দূরে থাকলেও সে ভার্চুয়ালি পুজোটাকে উপভোগ করতে পারে এখন। সোস্যাল মিডিয়ার আচ্ছাদনের মধ্যে পড়ে প্রায় সকলেই এখন পুজোর মানেটা পাল্টে ফেলেছে অনেকটাই। এখনের পুজো মানেই প্যান্ডেল হপিং, ফটোশুট, মেকওভার। একেঅপরের সঙ্গে রেষারেষি আর সেলফির ভীড়ে পুজোর অনুভূতিগুলো আজকের দিনে কেমন যেন ফ্যাকাসে লাগে। কাজের চাপে, পড়াশোনার টানাপোড়েনে আমরা সকলেই প্রায় একেঅপরের থেকে দূরে চলে গেছি। একাকিত্বের এই জেনারেশনে ব্যস্ততার বেড়াজালে আবদ্ধ থাকার কারণে সেভাবে আমরা মজা করতে পারিনা আর। তাই আগের পূজোর অনুভূতিটা এখনের পূজোয় সেভাবে প্রকাশ পায় না। কিন্তু জেনারেশন যতই আপডেটেড হোক আর লাইফস্টাইল যতই আপগ্রেড হোক না কেন দূর্গাপূজার সূচনা প্রত্যেকবারই সেই চারটি লাইন দিয়েই শুরু হবে যা আমাদের কানে আজও বাজে।
           "আশ্বিনের শারদপ্রাতে বেজে উঠেছে আলোক মঞ্জীর; ধরণীর বহিরাকাশে অন্তরিত মেঘমালা; প্রকৃতির অন্তরাকাশে জাগরিত জ্যোতির্ময়ী জগন্মাতার আগমন বার্তা।
           আনন্দময়ী মহামায়ার পদধ্বনি অসীম ছন্দে বেজে উঠে রূপলোক ও রসলোকে আনে নব ভাবমাধুরীর সঞ্জীবন।
           তাই আনন্দিতা শ্যামলীমাতৃকার চিন্ময়ীকে মৃন্ময়ীতে আবাহন।
           আজ চিৎ-শক্তিরূপিনী বিশ্বজননীর শারদ-স্মৃতিমণ্ডিতা প্রতিমা মন্দিরে মন্দিরে ধ্যানবোধিতা।"

#Source: online/Digital/Social Media News   # Representative Image

#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image

Journalist Name : Suchorita Bhuniya

Related News