আজ
সকল মোহনবাগান সমর্থকদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের এক দিন, মরসুমের
প্রথম ডার্বিতে জিতে ফুরফুরে মেজাজে আছেন মোহনবাগানের খেলোয়াড়রা। আজকের ম্যাচটি খুবই সহজ আর একপেশে ছিল,
তাই খুব সহজেই ৩-০ গোলে
ইস্টবেঙ্গলকে ধূলিসাৎ করে ২ ম্যাচে ৬
পয়েন্ট পেয়ে লিগ
টেবিলের শীর্ষ চলে গেল এটিকে মোহনবাগান। এসসি ইস্টবেঙ্গল ২ ম্যাচে ১
পয়েন্ট নিয়ে লীগ টেবিলের দশম স্থানে অবস্থান করছে।
আগের
দিনের ম্যাচের থেকে আজকের ডার্বি ম্যাচে মোহনবাগানকে অত্যন্ত স্বাবলম্বী, স্বাভাবিক এবং তরতাজা মনে হচ্ছিল, আজকের খেলাটি শুরু হওয়া থেকেই মোহনবাগান ইস্টবেঙ্গল শিবিরে একের পর এক ভয়ঙ্কর
আক্রমণ করে যাচ্ছিল। প্রথম থেকেই টলমল বলে মনে হচ্ছিল সম্পূর্ণ ইস্টবেঙ্গল দলটিকে, তাদের পাসিং, ক্রস, থ্রু বল কোনো কিছুই
যেনো সঠিক ভাবে হচ্ছিল না, আর তাদের মাঝ
মাঠ এবং ডিফেন্ডিং অত্যন্ত নিম্নমানের। শুরু থেকে মোহনবাগানের রয় কৃষ্ণা, মানবীর সিং, লিস্টোন কোলাসো, জোয়ান কাওকো ও বৌমারা দূর্দান্ত
ছন্দে ছিল, ম্যাচের শুরু থেকেই তারা একের পর এক দুর্দান্ত
অ্যাটাকে ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্স কে দিশেহারা করে
দিচ্ছিল। মানবীর সিং ও লিস্টন কোলাসোদের
দুই সাইড বরাবর দৌড়ের কারণে আরও ছন্নছাড়া হচ্ছিল ইস্টবেঙ্গল।
আজ
দুই দলই তাদের ত্রিফলা আক্রমণ নিয়ে মাঠে নেমেছিল, কিন্তু আজ জয় হয়েছে
অ্যান্টোনিও হাবাসের এটিকে মোহনবাগানের। আজ হাবাস তার
ত্রিফলা আক্রমণে রেখেছিল রয় কৃষ্ণা, হুগো বৌমস এবং জন কাওকো, আগের
ম্যাচে জন কাওকোকে ফ্যাকাশে
লাগলেও আজ হাবাস তার
স্থান পরিবর্তন করে তাকে সপ্রতিভ করে তুলেছিল।
আজ
মাঠে নেমেই ১২ মিনিটে প্রীতম
কোটাল এর একটি অসাধারণ
এসিস্ট এর মাধ্যমে রয়
কৃষ্ণা ম্যাচের প্রথম গোলটি এনে দেন, আবার তার কিছুক্ষণের মধ্যেই ১৪ মিনিটে কাওকো-কোলাসো-কৃষ্ণার অসাধারণ কিছু শর্ট পাসের পর, কাওকোর একটি দুর্দান্ত ফাইনাল পাসে মানবীর সিং গোল দেন। এই মানবীর সিং
গত সিজনে এটিকের হয়ে দুর্দান্ত খেলার পর ভারতবর্ষের জাতীয়
ফুটবল দলে সুযোগ পান। প্রথমার্ধের এবং ম্যাচের শেষ গোলটি করেন লিস্টন কোলাসো ২৩ মিনিটে, এই
গোলের পরেই মোহনবাগানের ৩ পয়েন্ট পাওয়া
নিশ্চিত হয়ে যায়। আজ সম্পূর্ণ মোহনবাগান
দলটি অত্যন্ত বুদ্ধিমত্তার সাথে এবং মনের সাথে ম্যাচটিকে একপেশে করে দিয়েছিল, আজ আর আগের
দিনের মতো ডিফেন্সে কোনো সমস্যা বা ভুল বোঝাবুঝি
দেখা যায় নি। অ্যান্টোনিও হাবাসের দল প্রথম ম্যাচের
পর থেকেই বুঝিয়ে দিল যে তারা এবারেও
লীগের প্রথম থেকে চতুর্থ স্থানের মধ্যেই থাকবে।
ইস্টবেঙ্গল
দলটিকে নিয়ে বলার মত কিছুই আজ
নেই, তাদের প্রথম ম্যাচের পর যে ভুলগুলো
দেখা গেছিল তা তাদের কোচ
মানোলো দিয়াজ ঠিক করতে ব্যার্থ হয়েছে। তাদের আক্রমণভাগ, মাঝ মাঠ, ডিফেন্স সব কটি বিভাগ
সম্পূর্ণ রূপে বিফল হয়েছে, তারা কিছুতেই মোহনবাগানের আক্রমণ ভাগকে আটকাতে পারছিল না। গোলকিপার অরিন্দম ভট্টাচার্য্য এই সিজনে মোহনবাগান
ছেড়ে ইস্টবেঙ্গল দলে যোগ দিয়েছেন, আজই তার ভূতপূর্ব দলের বিরূদ্ধে তার প্রথম ম্যাচ ছিল, আজ তাকেও খুবই
দিশেহারা বলে মনে হয়েছে। যদিও তিনি মাঠে বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি, ৩ টি গোল
হজম করার পর তিনি হ্যামস্ট্রিংয়ে
চোট পেয়ে মাঠ থেকে বেরিয়ে যান, তারপর আর ইস্টবেঙ্গলকে কোনো
গোল হজম করতে হয়নি। তাদের অরিন্দমের বদলি হওয়া গোলকিপার শুভম সেন বেশ ভালো ভালো সেভ দেন, তাই হয়তো আজ আর গোলের
ব্যাবধান বারে নি, তা নাহলে হয়তো
আজ স্কোরবোর্ডে ৬-০ গোলে
বা তারও বেশি গোলে জয়ী দেখানো হতো মোহনবাগান কে।
মোহনবাগান
এবং ইস্টবেঙ্গল সবে তাদের প্রথম দুটি ম্যাচ খেলল, এক্ষণও অনেক পথ বাকি, এটিকে
মোহনবাগান এখন স্থিতিশীল অবস্থায় থাকলেও ইস্টবেঙ্গল কে নিয়ে চিন্তার
ছাপ রয়ে যাবে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের কপালে।