#Pravati Sangbad Digital Desk:
জীবন টীবন অতিব গভীর, গাঢ়, গহীন, এবং গম্ভীর কান্ড। অনেক নিষাদ ও বিষাদে ভরপুর। সুতরাং, যে জীবন মজাদার বা যে সাহিত্য বা যে শিল্প ব্যঙ্গের শানে শানিত, তা অবশ্যই খেলো, লঘু এবং জলীয়। অতএব, মানুষটির যথার্থ মূল্যায়ন বা যথাযত মূল্য আমাদের রোচেনি। জন্ম খাস কোলকাতায়, ১৩ নম্বর কর্নওয়ালিশ ষ্ট্রিট, ঠনঠনিয়ায়। তাঁর বাবা একাধারে সাহিত্যিক ও প্রকাশক। পিতার কাছ থেকেই উত্তরাধিকার সূত্রে সাহিত্যের প্রতিভা লাভ করেছিলেন সুকুমার। অল্প বয়স থেকেই মুখে মুখে ছড়া তৈরি করতে পারতেন। ছবি আঁকারও হাতেখড়ি হয়েছিল বাবা উপেন্দ্র কিশােরের কাছে। আঁকার সঙ্গে ফটোগ্রাফির চর্চাও শুরু করেছিলেন ছেলেবেলা থেকেই।
পড়াশুনা শুরু করেন সিটি স্কুলে। রসায়নে অনার্স সহ বি.এস.সি পাশ করেন প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে। এরপর ফটোগ্রাফি আর মুদ্রণ শিল্পে উচ্চতর শিক্ষালাভের জন্য গুরুপ্রসন্ন ঘােষ স্কলারশিপ নিয়ে ১৯১১ খ্রিঃ বিলেত যান। স্কুলে পাঠরত অবস্থাতেই ছােটদের হাসির নাটক লেখা ও অভিনয়ের শুরু। বন্ধুদের নিয়ে গড়ে তােলেন ননসেন্স ক্লাব। ক্লাবের মুখপত্রের নাম ছিল সাড়ে বত্রিশ – ভাজা। বিলেত যাবার আগে শান্তিনিকেতনে গিয়েছিলেন। সেখানে রবীন্দ্রনাথ ও অবনীন্দ্রনাথের সঙ্গে গােড়ায় গলদ নাটকে অভিনয় করেন।
লন্ডনের পেনরােজ পত্রিকার সঙ্গে উপেন্দ্রকিশােরের যােগাযােগ ছিল। বিলাত বাসের সময় এই পত্রিকার সম্পাদক মিঃ গম্বেল – এর সহযােগিতা পেয়েছিলেন। তারই চিঠি নিয়ে সুকুমার লন্ডনের "এলসিসিস্কুল অফ ফটো এনগরাভিং অ্যান্ড লিথোগ্রাফি" বিশেষ ছাত্ররূপে ভর্তি হন।
এই সময় ফটোগ্রাফিক সােসাইটি লাইব্রেরিতে নিয়মিত পড়াশােনাও করতেন। ১৯১২ খ্রিঃ ম্যাঞ্চেস্টারের স্কুল অব টেকনােলজিতে বিশেষ ছাত্ররূপে স্টুডিও ও ল্যাবরেটরিতে কাজ শিখেছিলেন। ১৯১৪-য় ‘সন্দেশ’, ‘প্রবাসী’ ও ‘তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা’য় লেখালিখির শুরু। বছরখানেকের মধ্যে হঠাৎ মৃত্যু হোলো বিখ্যাত বাবার। বাবার ব্রাহ্মসমাজ, ছাপাখানা ও পত্রপত্রিকা সবকিছুর দায়িত্ব তুলে নিলেন কাঁধে। একে একে প্রকাশিত অমরত্ব অর্জন করা "পাগলা দাশু", "হেশোরাম হুঁশিয়ারের ডায়রি", "খাই খাই", "হ য ব র ল", "বহুরূপী" ইত্যাদি এবং অবশ্যই কালজয়ী "আবোল তাবোল" !
১৯২১ সালের ২মে পুত্র সত্যজিতের জন্ম হয়। সেই মাসের শেষের দিকেই তিনি অসুস্থ হলেন কালাজ্বরে । ১৯২৩ সালের ১০ই সেপ্টেম্বর, মাত্র ৩৬ বছর বয়সে পাড়ি দিলেন 'সাগর যেথা লুটিয়ে পড়ে নতুন মেঘের দেশে'! তিনি ছোটোবেলার, তিনি বড়োবেলার, তিনি আজীবনের। তিনি সুকুমার রায়। বিশ্বসাহিত্যের এক কিংবদন্তি স্তম্ভ !
তিনি সমকালীন। তিনি কালোত্তীর্ণ। সমস্ত সময়কে তার লেখনীর রেখাপাতে বিশ্লিষ্ট করা যায়। সে শাসকের 'একুশে আইন' হোক বা সমাজশিক্ষার 'খুড়োর কল'। সে রাষ্ট্রের 'গন্ধবিচার' হোক বা প্রান্তিক 'বাপুরাম সাঁপুরে' ! সাধে কবীর সুমন লেখেননি, "সুকুমার রায়/ আমাকে ভাবায়" !
#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image
Journalist Name : Avijit Das