আর ঠিক কতটা নিচে নামবে বাংলাদেশ? একের পর এক ঘটনা ঘটেই যাচ্ছে বাংলাদেশে। এবার ঘটল এক লজ্জিত ঘটনা। যে মুক্তিযোদ্ধা নিজের জীবন দান করে দেশের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছিলেন, তাকেই জুতোর মালা পরিয়ে হেনস্থা করে ঘোরানো হল গোটা এলাকা।
জানা গেছে, গত রবিবার দুপুরে চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বাতিসা ইউনিয়নের কুলিয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। পরে রাতে এ ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। এই মুক্তিযোদ্ধার নাম আবদুল হাই ওরফে কানু। বয়স ৭৮। তিনি লুদিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা। সূত্রের সাহায্যে জানা গিয়েছে, আবদুল হাই কৃষক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও একই সংগঠনের কুমিল্লা দক্ষিণ জেলার সাবেক সহসভাপতি।
গঙ্গাসাগর মেলা উপলক্ষে বিশেষ পরিষেবা শিয়ালদহ স্টেশনে
প্রসঙ্গত, ভাইরাল হওয়া ১ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের ভিডিওটিতে দেখা যায়, ১০ থেকে ১২ জন ব্যক্তি তাকে একা পেয়ে গলায় জুতার মালা পরিয়ে এলাকা ছাড়ার হুমকি দেন। এতে নেতৃত্ব দেন স্থানীয় প্রবাস ফেরত আবুল হাসেম ও আরেক যুবক অহিদ। আবুল হাসেম জামায়াত সমর্থক বলে জানা গেছে। এছাড়াও, কয়েকজন যুবক এক মধ্যবয়সী ব্যক্তিসহ বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানুকে ধরে আনেন। লাল কটি ও পাঞ্জাবি পরা বীর মুক্তিযোদ্ধার গলায় তখন জুতার মালা। এসময় পাশ থেকে একজন বলছেন, তাকে বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে। অপরজন বলছেন, কুমিল্লা থেকে বের হয়ে যেতে। হামলাকারীরা কানুকে বলতে থাকেন, “এলাকায় থাকতে পারবেন না। এমন কি কুমিল্লায়ও থাকতে পারবেন না। কুমিল্লা আউট, এলাকা আউট, ছেড়ে দাও।‘’
উলেখ্য, বাংলাদেশি এক সংবাদমাধ্যমকে আব্দুল হাই কানু বলেন, “হঠাৎ আমাকে একা পেয়ে জোর করে ওরা জুতার মালা গালায় দিয়ে ভিডিয়ো করে। কার কাছে বিচার চাইব? মামলা করে কী হবে? ওরা সবাই জামাতের রাজনীতি করে। আমি আওয়ামি লীগ করলেও কখনও তাদের কোনও ক্ষতি করিনি। উল্টো আওয়ামি লীগের এমপির রোষানলে পড়ে ৮ বছর এলাকা ছাড়া ছিলাম। সুত্রানুসারে জানা গিয়েছে, সকালে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানু বাজার করতে বের হন। এসময় তাকে স্থানীয় কয়েকজন ধরে নিয়ে যায় কুলিয়ারা হাই স্কুলের সামনে। সেখানে তার গলায় জুতার মালা পরায় এবং শারীরিক ও মানসিকভাবে হেনস্তা করে। এঘটনার পর থেকেই গা ঢাকা দিয়েছেন নির্যাতনের শিকার সেই বীর মুক্তিযোদ্ধা। পালিয়েছেন ঘটনায় জড়িতরাও।