যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও তাদের মিত্ররা লেবাননে সাময়িক যুদ্ধবিরতি কার্যকরের আহ্বান জানিয়েছে। ইজরায়েল ও লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর হামলা চলাকালেই এ আহ্বান জানানো হয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ১১টি দেশ অবিলম্বে লেবাননে ২১ দিনের যুদ্ধবিরতি কার্যকরের প্রস্তাব দিয়েছে। কূটনৈতিক সমাধানের পথ খুঁজে বের করতে কূটনৈতিক তৎপরতা চালানোর জন্য সাময়িক এই যুদ্ধবিরতি প্রয়োজন বলে মনে করে তারা। একই সঙ্গে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকরেরও প্রস্তাব দিয়েছে তারা।
এক যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেছে, এ ধরনের বৈরিতা ‘অসহনীয়’। এতে আঞ্চলিকভাবে বড় ধরনের উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি আছে, যা অগ্রহণযোগ্য। এতে ইজরায়েল কিংবা লেবানন—কারও স্বার্থই হাসিল হবে না।
যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য ও কাতার ওই যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছে।
নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বিশ্বনেতাদের বৈঠকের পর এ যৌথ বিবৃতি দেওয়া হয়।
একটি যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেছে যে এই ধরনের যুদ্ধবিগ্রহ অসহনীয় এবং এটি মধ্যপ্রাচ্যের আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাকে ঝুঁকিতে ফেলবে, এর কোনোটিই ইজরায়েল বা লেবাননের জনগণের স্বার্থে নয়।
যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব এমন সময়ে এল, যখন ইজরায়েলের সামরিক বাহিনীর প্রধান তার সৈন্যদেরকে বলেছিলেন যে হেজবুল্লাহকে লক্ষ্য করে লেবাননে ব্যাপক বিমান হামলা তাদের জন্য 'শত্রুদের এলাকায় প্রবেশের' পথ তৈরি করে দিতে পারে।
হালেভিই ইজরায়েলের প্রথম কোনো ঊর্ধ্বতন পর্যায়ের ব্যক্তি, যিনি লেবাননে স্থল অভিযান যে অনিবার্য, তার ইঙ্গিত দিয়েছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন, সমাধানের সময় এসেছে, যা সীমান্তের দুই পাশের বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপদে তাঁদের বাড়িতে ফেরা নিশ্চিত করবে।
তাঁদের আশঙ্কা, বর্তমানে যে বৈরিতা চলছে, তাতে বড় ধরনের সংঘাত এবং বেসামরিক নাগরিকদের ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার ঝুঁকি আছে।
বাইডেন ও মাখোঁ আরও বলেন, ‘সীমান্তে নতুন করে উত্তেজনা ঠেকাতে এবং কূটনৈতিক সমাধানের পথ সফল করতে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে আমরা সাময়িক যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানোর জন্য একসঙ্গে কাজ করেছি।’
এর আগে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও লেবাননে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন।
লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি বলেন, ‘ইসরায়েলি শত্রুর নৃশংস আচরণের কারণে’ তাঁর দেশের সার্বভৌমত্ব ও মানবাধিকার পরিস্থিতি স্পষ্টত লঙ্ঘনের সম্মুখীন হচ্ছে।
রয়টার্সের পক্ষ থেকে মিকাতির কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, শিগগিরই যুদ্ধবিরতি হতে পারে কি না।
জবাবে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, আশা করছি।’ এ ছাড়া এর আগে জাতিসংঘে নিযুক্ত ইজরায়েলি দূত ড্যানি ড্যানন বলেন, উত্তেজনা এড়াতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টাকে তাঁরা সম্মান জানান। তবে নিজেদের লক্ষ্য অর্জনের জন্য আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে সংগতি রেখে ইজরায়েল সাধ্যমতো সব করবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।