শুরু হয়ে গেছে ৭৭ তম স্বাধীনতা দিবসের কাউন্ট ডাউন। স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব পালনের জন্য উৎসাহী হয়ে রয়েছে গোটা দেশ। সেই উদযাপনে ‘হর ঘর তিরঙ্গা’ কর্মসূচিতে জোর দিল কেন্দ্রীয় সরকার। ভারতের জাতীয় পতাকার নকশা কিন্তু কখনই এমনটা ছিল না। ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হওয়ার আগে ছ’বারেরও বেশি বদলেছে জাতীয় পতাকার নকশা। অবশেষে কংগ্রেসের পিঙ্গালি ভেঙ্কাইয়ার নকশাই ভারতের জাতীয় পতাকা হিসেবে স্বীকৃতি পায়। ভারতের আইন অনুযায়ী, জাতীয় পতাকা খাদি কাপড়ে তৈরি করা হয়।
এই স্বাধীনতার জন্য লক্ষাধিক স্বাধীনতা সংগ্রামী তাঁদের জীবণ উৎসর্গ করেছে। এঁদের মধ্যে কাউকে আমরা মনে রেখেছি, কেউবা হারিয়ে গেছে বিস্মৃতির অতলে। বিস্মৃতির অতলে হারিয়ে যাওয়া স্বাধীনতা সংগ্রামীদের মধ্যে যেমন পুরুষোত্তম দাস ট্যান্ডন রয়েছেন, তেমনি আছে বাংলার বিপ্লবী রাসবিহারী বসু এবং প্রফুল্ল চাকিও।
প্রায় ২০০ বছর ব্রিটিশ শাসনের অধীনে থাকার পরে মুক্তির স্বাদ পেয়েছিল ভারতের জনতা। নীল আকাশে উড়েছিল তিরঙ্গা। এর পরে কেটে গিয়েছে প্রায় ৭৫ বছর। আগামী ১৫ অগস্ট ফের দেশ জুড়ে পালিত হবে স্বাধীনতা দিবস।
ছাত্রাবস্থা থেকে দেশমাতৃকার উদ্ধারে এগিয়ে এসেছিলেন অনেকে। তাঁর মধ্যে অন্যতম ছিলেন পুরুষোত্তম দাস ট্যান্ডন। গান্ধীজির ডাকে সারা দিয়ে যোগ দিয়েছিলেন জাতীয় কংগ্রেসে। ভারত ভাগের নিন্দা করে সরব হয়েছিলেন তিনি। সেই সঙ্গে দেশে হিন্দিকে সরকারি ভাষা হিসেবে প্রচলন করার দাবিও জানিয়েছিলেন ট্যান্ডন।
স্বাধীনতার আগে ভারতে মোট ৫৫০ জন রাজার ছোট ছোট রাজ্য ছিল। সেই রাজ্যগুলিকে একত্রিত করতে প্রথম পদক্ষেপ করেন সর্দার বল্লভভাই পটেল। কিছু ক্ষেত্রে দেখা করে এবং কিছু ক্ষেত্রে চিঠি পাঠিয়ে তিনি তাঁদের অনুরোধ জানিয়েছিলেন। এমনকী তাঁদের সঙ্গে ব্যক্তিগত আলোচনাও করেছিলেন। অবশেষে তাঁরা প্রত্যেকেই ভারতের সঙ্গে যুক্ত হতে রাজি হয়েছিলেন।
স্বাধীনতা প্রাপ্তির পরে ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত স্বাধীনতা দিবসে প্রতিটি রাজ্যের রাজ্যপালই দেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতেন।
এই প্রথার প্রথম পরিবর্তন হয় ১৯৭৪-এ। বিশিষ্ট তামিল লেখক তথা তামিলনাড়ুর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এম করুণানিধি কেন্দ্রীয় সরকারের গোটা বিষয়টি তুলে ধরেন এবং সেই প্রথার পরিবর্তন হয়।
এম করুণানিধিই হলেন প্রথম মুখ্যমন্ত্রী যিনি স্বাধীনতা দিবসে ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেছিলেন।
মঙ্গলবার ১৫ অগস্ট দিল্লির লালকেল্লায় জাতীয় পতাকার উত্তোলন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন। এ বছর স্বাধীনতা দিবসের থিম ‘নেশন ফার্স্ট, অলওয়েজ ফার্স্ট’। এ’বছরের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে অমৃত কলস যাত্রার আয়োজন করা হয়েছিল। সেই যাত্রার অধীনে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সাড়ে সাত হাজার পাত্রে মাটি আনা হয়েছে। সেই মাটি জড়ো করে দিল্লির অমৃত ভাটিকায় লাগানো হবে চারা গাছ।