উৎসবে ইতিমধ্যেই মেতে উঠেছে গোটা কলকাতা। বিভিন্ন চার্চে শুরু হয়ে গেছে বড়দিনের আনন্দ। এইদিন কলকাতা সেজে ওঠে এক আলাদা আলোকসজ্জায়। পার্কস্ট্রিটের সারা রাস্তা জুড়ে থাকে আলোর রোশনাই। সাথে সান্তা দাদুর দেখা। ছোট থেকে বড়ো, বাঙালি থেকে খ্রিস্টান সকলে মেতে ওঠে বড়দিনের উৎসবে। এক যেনো দুর্গাপুজোর মতোই এক উৎসব। ভিড় জমে যায় সমস্ত কেকের দোকানগুলিতে।
তবে গত বছর ঠিক এই সময়ই ওমিক্রনের হাত ধরে ভারতে এসেছিল করোনার তৃতীয় ঢেউ। এবছরেও নিস্তার নেই তার। চিন, আমেরিকা, কোরিয়ায় আবার নতুন করে ফিরে এসেছে করোনা। চিন্তায় ফেলেছে এ দেশের প্রশাসনকেও।আগের বছরের পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে এখনই নানান নির্দেশিকা জারি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। আজ অর্থাৎ রবিবার দেশের নাগরিকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ' মন কি বাত ' অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, " করোনা বাড়ছে। ফলে সবাইকে ভালো করে হাত ধুতে হবে "।
মন কি বাত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আরো জানান , " আমরা দেখতে পাচ্ছি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। তারজন্য আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। মাস্ক পরতে হবে, ঘন ঘন হাত ধুতে হবে ভালভাবে "। তিনি আরও বলেন , " বিগত বছরগুলোয় আমরা স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে অনেক চ্যালেঞ্জের সামাল দিয়েছি। স্মল পক্স ও পোলিওর মতো রোগ দূর করেছি। কালাজ্বরও দূর হবে। বিহার ও ঝাড়খণ্ডের মাত্র চারটে জেলায় এই রোগ ছড়িয়েছে "।
কিছুদিন আগেই করোনা নিয়ে রাজ্যগুলির সঙ্গে বৈঠক করেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক। রাজ্যগুলিকে বলা হয়েছে হাসপাতালে 'ড্রাই রান' চালু করতে। বিভিন্ন সতর্কতা বানীও মেনে চলার নির্দেশ জারি করা হয়েছে। বছরের শেষে বড়দিন ও ৩১ শে ডিসেম্বরের সময় বিশেষ নজরদারির ব্যাবস্থা রাখা হচ্ছে।
গত বুধবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী কোভিড নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেছেন। শুক্রবার, করোনা নিয়ে প্রতিটি রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন মনসুখ মণ্ডব্য। বিশেষ সূত্রের খবর , এই বৈঠকে কোভিড নিয়ন্ত্রণে রাজ্যকে বহু গাইডলাইনে বেধে দিয়েছে কেন্দ্র। সেইসঙ্গে হাসপাতালগুলিতে প্রাথমিক পরিকাঠামো তৈরি রাখতেও বলা হয়েছে। এ ছাড়াও, করোনার নতুন ভ্যারিয়্যান্টের মোকাবিলায় পরীক্ষা ও টিকাকরণের উপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে।
কেন্দ্র জানিয়েছে, আগের মতোই এ ক্ষেত্রেও কেন্দ্র-রাজ্য সমন্বয়ের মাধ্যমে করোনা পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হবে। চিন-সহ বাকি যে দেশগুলিতে করোনার সংক্রমণ বেড়েছে, সেখান থেকে এদেশে আসা যাত্রীদের আরটিসিপিআর টেস্টের রিপোর্ট দেখানো বাধ্যতামূলক। তবে, ৭২ ঘণ্টা আগের রিপোর্ট এক্ষেত্রে গ্রহণ করা হবে না বলেও জানানো হয়।
কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে প্রত্যেকটি রাজ্যকে নোটিস পাঠানো হয়েছে। সেখানে রাজ্যগুলিকে পর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী , ২৪ ঘণ্টায় ভারতে ২২৭ জন নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। ফলে দেশে রোগীর সংখ্যা পৌঁছেছে ৩ হাজার ৪২৪ জনে। করোনায় মারা গিয়েছেন ২ জন। যার মধ্যে একজন কেরল ও অন্যজন মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা।