#Pravati Sangbad Digital Desk:
মুখগহ্বরের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য দৈনিক অন্তত দু'বার ব্রাশ করা খুব জরুরি। সেই সঙ্গে দেখতে হবে দাঁতের ফাঁকে যেন কোনও খাবারের টুকরো না আটকে রয়ে যায়। সেটা সুনিশ্চিত করার জন্য আপনাকে ডেন্টাল ফ্লস বা টেপের সাহায্য নিতে হবে এবং দাঁতের ফাঁকে আটকে থাকা খাবার নিয়ম করে পরিষ্কার করতে হবে।
এই দু'টি নিয়ম মোটামুটি মেনে চলতে পারলে আপনার মুখগহ্বর, মাড়ি আর দাঁতের স্বাস্থ্য ভালো থাকার কথা। সেক্ষেত্রে নিয়ম করে মাউথওয়াশ ব্যবহার না করলেও চলে। যদি দাঁতে বা মাড়িতে শিরশিরানি, রক্ত পড়া বা মুখে দুর্গন্ধের মতো সমস্যা হয়, তা হলে অবশ্যই ডাক্তার দেখিয়ে চিকিত্সা করানো প্রয়োজন এবং তিনি বললে মাউথওয়াশও ব্যবহার করতে হবে। কিন্তু তেমন কোনও প্রয়োজন না থাকলে কেবল বিজ্ঞাপনী প্রচারে মুগ্ধ হয়ে ঝকঝকে সাদা দাঁতের মালিক হওয়ার জন্য যাঁরা রোজ মাউথওয়াশ ব্যবহার করছেন, তাঁরা কয়েকটি বিষয় জেনে রাখুন।
মুখে দুর্গন্ধের অন্যতম কারণ জীবাণু। তাই দুর্গন্ধ তাড়াতে অনেকেই নিয়মিত মাউথওয়াশ ব্যবহার করেন। অনেকেরই এটা রোজকার অভ্যাস। কিন্তু এর ফলে ঘটে যেতে পারে বড় বিপদ। এমনই দাবি গবেষণায়।
অপ্রয়োজনে কি আপনি অ্যান্টিবায়োটিক খান? যদি উত্তর না হয়, তা হলে সেই একই কারণে অহেতুক মাউথওয়াশ ব্যবহার করারও কোনও প্রয়োজন নেই। আমাদের মুখে, পাকস্থলীতে এমন কিছু ব্যাকটেরিয়া থাকে, যা হজমের প্রক্রিয়াটিকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করে। বারংবার অপ্রয়োজনে মাউথওয়াশ ব্যবহার করলে সে ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্যটাই নষ্ট হয়ে যায়। তাতে আপনার মুখে ও পাচনতন্ত্রে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।
মুখের দুর্গন্ধ থেকে বোঝা যায় যে আপনার দাঁতে বা মাড়িতে কোনও সমস্যা আছে। মাউথওয়াশ ব্যবহার করে সেই গন্ধটাকে ঢেকে রাখার চেষ্টা করলে কিন্তু আসল সমস্যাটা ধরা পড়তেই অনেক দেরি হয়ে যাবে, তাতে আখেরে আপনারই ক্ষতি হবে।
হালে ‘থেরাপিউটিক অ্যাডভানসেস ইন ড্রাগ সেফটি’ নামক চিকিৎসাবিজ্ঞানের জার্নালে মাউথওয়াশ নিয়ে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে রোজ এই তরলটি ব্যবহার করলে শরীরের বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।
মাউথওয়াশে মেথানল, অ্যালকোহল, ইউক্যালিপটলের মতো অ্যান্টিসেপটিকের পাশাপাশি ক্লোরেক্সিডাইন গ্লুকোনেট নামক রাসায়নিক থাকে। এটিই যত নষ্টের গোড়া। এমনই বলছেন চিকিৎসকেরা। এটির ফলে মুখের ভিতর ক্ষত তৈরি হয়। যা ক্রমশ স্বাদ নেওয়ার ক্ষমতা কমিয়ে দিতে থাকে।
কিন্তু এখানেই শেষ নয়। রোজ মাউথওয়াশ ব্যবহারের ফলে সমস্যা এর চেয়েও বাড়তে পারে। করোনাকালে মুখের জীবাণু তাড়াতে বেড়েছে এই তরলটির ব্যবহার। কিন্তু আমেরিকান ডেন্টাল অ্যাসোসিয়েশন বলছে, এটির কারণে মুখের ক্যানসার পর্যন্ত হতে পারে। ক্লোরেক্সিডাইন গ্লুকোনেটের কারণে মুখের ভিতর তৈরি হওয়া ক্ষতগুলি পরবর্তীতে ক্যানসারে পর্যবসিত হতে পারে।
ফর্টিস আনন্দপুর হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত ডেন্টাল কনসালট্যান্ট ডা. হিমাদ্রি রায়চৌধুরী বলছেন, ''মাউথওয়াশ নিয়মিত ব্যবহার করলে দাঁতে দাগ পড়ে যায়। তাই ডাক্তারের পরামর্শ না নিয়ে তা টানা ব্যবহার করবেন না। যাঁদের অভ্যেস হয়ে গিয়েছে, তাঁরাও মাঝে মাঝে কিছুদিনের বিরতি দিন অবশ্যই।''
#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image
Journalist Name : Sampriti Gole