সেলেকাওদের ইতিহাস

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

(প্রথম পর্ব)
ব্রাজিল নামটি এলেই মনের চিলেকোঠায় ভেসে ওঠে একগুচ্ছ খেলোয়াড়ের নাম এবং তাঁদের অসাধারণ ড্রিবলিং। সেই সুদূর আমেরিকা থেকে ভারত, ব্রাজিল ফুটবল দলের ভক্তের সংখ্যা অগণতি। ফুটবল যাদুকর পেলের যুগ থেকে হালে নেইমার, ব্রাজিল দল বিশ্বকে দিয়ে গেছে একের পর এক বিশ্বমানের খেলোয়াড়। আর তাইতো ফিফা বিশ্বকাপ হোক আর কোপা আমেরিকা ব্রাজিলের খেলা দেখতে রাত জাগা মানুষের সংখ্যা নেহাতই কম নয়। তবে ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাবে ব্রাজিল দলের এই উজ্জ্বল সময় আসতে লেগেছে প্রায় ২৭ বছর।
১৯১৪ সালে ব্রাজিল দল প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক ফুটবল আঙিনায় পদার্পন করে এবং ১৯১৬ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন দেশের সাথে প্রীতি ম্যাচ খেলে। এরপর ১৯১৯ এবং ১৯২২ সালে পর পর দুবার দক্ষিণ আমেরিকান চ্যাম্পিয়নশিপে শিরোপা জয়লাভ করে। মহাদেশীয় প্রীতি ম্যাচে ভালো ফলাফলের দরুন ১৯৩০ সালে একমাত্র দক্ষিণ আমেরিকার দল হিসেবে ফিফা আয়োজিত প্রথম ফুটবল বিশ্বকাপে ব্রাজিল দল অংশগ্রহণ করেন। তবে প্রথম ম্যাচে জয়লাভ করলেও দ্বিতীয় ম্যাচে হেরে বিশ্বকাপ যাত্রা শেষ করে। ১৯৩৪ সালে ইতালিতে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে প্রথম রাউন্ডেই যাত্রা শেষ হয়। এরপর ১৯৩৮ সালের বিশ্বকাপে সেমিফাইনাল পর্যন্ত পোঁছালেও সেই বিশ্বকাপের বিজয়ী ইতালির কাছে হেরে বিদায় নেয় ব্রাজিল দল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারনে ১৯৪২ এবং ১৯৪৬ এর বিশ্বকাপ বন্ধ রাখার সঙ্গে সঙ্গে সব ধরণের ফুটবল প্রতিযোগিতা বন্ধ রাখা হয়েছিলো। এরপর ১৯৪৯ সালে অনুষ্ঠিত দক্ষিণ আমেরিকা চ্যাম্পিয়নশিপ অথবা কোপা আমেরিকাতে ব্রাজিল দল অংশ নেয় এবং ১৯২২ সালের পরে প্রায় ২৭ বছর পরে ফের একবার খেতাব জয়লাভ করে। ১৯৫০ সালে পুনরায় বিশ্বকাপ আয়োজিত হলে ফিফা আয়োজনের দায়িত্ব ব্রাজিলকেই দেয়। ১৩ দলের অংশগ্রহণকারী ১৯৫০-এর বিশ্বকাপে ব্রাজিল ফাইনালে উরুগুয়ের কাছে হেরে যায়। ইতিমধ্যে আমেরিকান ফুটবল ফেডারেশন ৪টি জাতীয় দল নিয়ে প্যান আমেরিকান চ্যাম্পিয়নশিপ নামে একটি ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন করে ১৯৫২ সালে। প্রথম বছরেই খেতাব ঘরে তোলে ব্রাজিল। এরপর ১৯৫৪-তে সুইজারল্যান্ডে আয়োজিত বিশ্বকাপে ব্রাজিল দল জার্সি সহ দলের অনেক নতুন খেলোয়াড়কে নিয়ে সম্পুর্ন নতুন্রুপে অংশগ্রহণ করে এবং দ্বিতীয় বারের মত ফাইনালে হাঙ্গেরির কাছে পরাস্ত হয়। প্রসঙ্গত, এই খেলাটি ফুটবল ইতিহাসে সবথেকে কুৎসিত ম্যাচ হিসেবে ধরা হয় এবং এই ম্যাচটি বার্নের যুদ্ধ নামে পরিচিত। ১৯৫৬ সালে ফের আরেকবার প্যান আমেরিকান চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজিত হলে ব্রাজিল দ্বিতীয়বারের মতো এই খেতাব ঘরে তোলে। ১৯৫৮ সালে ব্রাজিল দলে আগমন ঘটে ৪-জন বিশ্বমানের খেলোয়াড়ের। এই চারজন হলেন জিটো, গ্যারিঞ্চা, ভাভা এবং পেলে। আক্রমনভাগে এই ৪জন বিশ্বমানের খেলোয়াড়কে টক্কর দেওয়ার মতো খেলোয়াড় খুব কমই ছিল। ফলস্বরূপ ১৯৫৮ সালে প্রথমবার ব্রাজিল দল বিশ্বকাপ জয় করে। কোপা আমেরিকারর সাথে একীভূত হওয়ার আগে ১৯৬০ সালে তৃতীয় অথবা শেষবারের মতো প্যানামেরিকান চ্যাম্পিয়নশিপ আয়জিত হয়। তবে সেই বছরে খেতাব ধরে রাখতে পারেনি দুবারের জয়ী ব্রাজিল। শেষ প্যানামেরিকান খেতাব জয় করেন আর্জেন্তিনা এবং রানার্স হয় ব্রাজিল। ১৯৬২ সালের বিশ্বকাপে দুরন্ত পেলে খুব কম ম্যাচ খেললেও গ্যারিঞ্চা স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে দলকে জয়ের সরণিতে রেখে দেয়। ফলস্বরূপ ১৯৬২ সালের বিশ্বকাপের খেতাব আরও একবার ব্রাজিল দলের কাছে যায়। পরের বিশ্বকাপ ১৯৬৬ সালে, ব্রাজিলের তৎকালীন কোচ খুব কসরত করে ব্রাজিল দলকে তৈরি করেন। কিন্তু হায়; ১৯৫০ সালে ইতালির পরে দ্বিতীয় দল হিসেবে ব্রাজিল বিশ্বকাপ খেতাব ধরে রেখে প্রথম রাউন্ডেই বাদ পরে। এই বিশ্বকাপের পরে পেলে দলের হয়ে খেলবেন বলে জানালেও পরবর্তি ১৯৭০-এর বিশ্বকাপে ফিরে আসেন এবং নিজের শেষ বিশ্বকাপে দলকে তৃতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ এনে দেন।

#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image

Journalist Name : Tamoghna Mukherjee

Tags:

Related News