বিজ্ঞানী ও গবেষকদের হাতে সম্প্রতি এসেছে এক চমকপ্রদ ফসিল, যার আনুমানিক বয়স প্রায় ৬২ মিলিয়ন বছর। এই ফসিলটি পাওয়া গিয়েছে মেক্সিকো শহরের এক প্রাচীন ভূস্তর থেকে। গবেষকদের মতে, এই আবিষ্কার নতুন করে আলো ফেলছে সেই রহস্যের উপর, যেটি বহু বছর ধরে বিজ্ঞানীদের ভাবিয়ে তুলেছে — ডাইনোসর যুগের অবসানের পর কীভাবে স্তন্যপায়ীদের বিকাশ ঘটেছিল?
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এই ফসিলটি এমন এক প্রাণীর যা ডাইনোসরের বিলুপ্তির পর পৃথিবীর নতুন পরিবেশে টিকে থাকার জন্য নিজেকে ধীরে ধীরে মানিয়ে নিয়েছিল। তখনকার কঠিন প্রাকৃতিক পরিবর্তনের মধ্যেও এই প্রাণীরা ছিল বেশ অভিযোজিত। গাছ থেকে মাটি — সর্বত্র তারা বিচরণ করতে পারত, যা তাদের টিকে থাকার ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা দিয়েছিল। অন্যদিকে, ডাইনোসরদের পরে অনেক প্রজাতিই যখন নতুন পরিবেশে মানিয়ে নিতে না পেরে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছিল, তখন এই প্রাণীরা টিকে গিয়ে নতুন এক ধারার সূচনা করেছিল — স্তন্যপায়ীদের যুগ।এই প্রাচীন স্তন্যপায়ী প্রাণীদের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল দ্বৈত পরিবেশে বাস করার সক্ষমতা। তারা যেমন গাছে থাকতে পারত, তেমনি প্রয়োজনে মাটিতেও চলাফেরা করতে পারত। গাছে থাকার ফলে তাদের হাতের নখ ছিল অত্যন্ত ধারালো, যা তাদের শিকার ধরতে সাহায্য করত। সেইসঙ্গে, দ্রুত বংশবিস্তারের ক্ষমতা তাদের অন্য প্রাণীদের থেকে আলাদা করেছিল এবং এই বৈশিষ্ট্যই ধীরে ধীরে তাদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে সাহায্য করেছিল পৃথিবীতে। গবেষকদের মতে, এই ফসিলটি এত বছর পরেও একেবারে অবিকৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে, যা নিজেই এক বিরল ঘটনা। এটি প্রমাণ করে, সেই সময়ের স্তন্যপায়ী প্রাণীরা শুধু টিকে থাকেনি, বরং ভবিষ্যতের স্তন্যপায়ী বিবর্তনের পথপ্রদর্শকও ছিল। এটি বুঝতে পারাই এখন গবেষণার মূল লক্ষ্য।
নববর্ষের মুখে বনগাঁয় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, ভস্মীভূত পরপর ৯টি দোকান
উলেখ্য, এই ৬২ মিলিয়ন বছরের পুরনো ফসিল শুধুমাত্র এক প্রাচীন জীবাশ্ম নয়, বরং এটি হতে পারে স্তন্যপায়ীদের বিবর্তনের অন্যতম প্রধান সূত্র। যেভাবে এই প্রাণীরা নিজেদের অভিযোজন ক্ষমতার মাধ্যমে নতুন পৃথিবীতে নিজেদের জায়গা তৈরি করেছিল, তা সত্যিই বিস্ময়কর। এই আবিষ্কার নিঃসন্দেহে ভবিষ্যতের গবেষণার পথ আরও প্রশস্ত করবে।