দিন কয়েক আগে পূর্ব বর্ধমান জেলার দামোদর নদীর চরে একটি কালো ব্যাসাল্ট পাথরের সূর্য মূর্তি উদ্ধার করা হয়েছে, যা পাল-সেন যুগের একটি মূল্যবান ঐতিহ্য। স্থানীয় যুবকদের অসাধারণ খোঁজের মাধ্যমে উদ্ধার হওয়া এই মূর্তিটি এখন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের মিউজিয়াম ও আর্ট গ্যালারিতে সংরক্ষিত রয়েছে।
বীর সৈনিকদের শ্রদ্ধা এবং ৭৭তম বর্ষপূর্তির গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান
উলেখ্য, ঘটনাটি ঘটে, যখন রাজকুমার কুন্ডু, মানিক চাঁদ, সঞ্জয় তা-সহ বেশ কয়েকজন যুবক পিকনিক করতে গিয়ে দামোদর নদের চরের আশপাশে ঘুরছিলেন। এ সময়, তাদের নজরে পড়ে একটি কালো পাথরের মূর্তি, যা বালি এবং কাদায় আচ্ছাদিত ছিল। মূর্তিটির অঙ্গপ্রত্যঙ্গ পরিষ্কার না দেখা গেলেও, যুবকদের সন্দেহ হয় যে এটি কোনও প্রাচীন মূর্তি হতে পারে। তারা দ্রুত বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে পুলিশকে জানানো হয় এবং পরবর্তীতে পুলিশের সহায়তায় মূর্তিটি উদ্ধার করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা জানিয়েছেন, এটি একটি সূর্য মূর্তি, যা সম্ভবত পাল ও সেন যুগে নির্মিত। মূর্তিটির উচ্চতা প্রায় তিন ফুট এবং চওড়া প্রায় দেড় ফুট। মূর্তিটির বিশেষত্ব হচ্ছে, এতে সাতটি ঘোড়ার রথে সূর্য দেবতা বসে আছেন। তার দুই হাতে পদ্ম রয়েছে এবং রথের মধ্যে সারথী ও কয়েকজন সঙ্গী রয়েছেন। এছাড়া, মূর্তির দুই পাশে উষা ও প্রতুষা নামে দুই নারী অবস্থিত, যারা প্রাচীন ভারতীয় পুরাণের অঙ্গ। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক শ্যামসুন্দর বেরা জানিয়েছেন, "এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কার। ধারণা করা হচ্ছে যে, বন্যার কারণে দামোদর নদীতে তলিয়ে গিয়ে এই মূর্তিটি এখন উদ্ধার হয়েছে। তবে, মূর্তিটির মুখ কিছুটা বিকৃত হয়ে গেছে। তা সত্ত্বেও, এটি আমাদের পূর্ব পুরুষদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের এক অনন্য নিদর্শন।"
প্রসঙ্গত, মূর্তিটি বর্তমানে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের মিউজিয়াম ও আর্ট গ্যালারিতে সংরক্ষিত রয়েছে, যাতে সাধারণ মানুষ এবং গবেষকরা এই ঐতিহাসিক নিদর্শনটি দেখতে পারেন এবং এর গুরুত্ব সম্পর্কে আরো জানতে পারেন। এটি শুধু বর্ধমান অঞ্চলের ইতিহাসের এক অংশ নয়, বরং সমগ্র ভারতীয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের একটি অমূল্য রত্ন।