কুলতলির মইপিঠে গ্রামের মধ্যে ঢুকে পড়েছিল একটি বাঘ। সম্প্রতি এ ঘটনার কারণে এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। ১০ ফেব্রুয়ারি বাঘটি আচমকা গ্রামে উপস্থিত হয়ে বনকর্মীদের ওপর হামলা চালায়। ১১ ফেব্রুয়ারি ভোররাতে দীর্ঘ তল্লাশির পর, বনকর্মীরা সফলভাবে বাঘটিকে আটক করতে সক্ষম হন।
রামপুরহাটে ১৬ হাজার কেজি বিস্ফোরক অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট উদ্ধার, আতঙ্ক ছড়ালো এলাকাবাসীর মধ্যে
উলেখ্য, বনকর্মীরা রাতভর একটি ছাগলকে টোপ হিসেবে রেখে বাঘটিকে ধরার জন্য ফাঁদ পেতেছিলেন। সাড়ে ৩টার দিকে বাঘটি ফাঁদে পা দেয়। বাঘটিকে খাঁচায় বন্দি করার পর, বন দফতর জানিয়েছে যে, এটি একটি পুরুষ বাঘ এবং এর বয়স প্রায় ১০ বছর। ১০ ফেব্রুয়ারি, গ্রামবাসীরা জানান, এক বাঘ আচমকা জঙ্গলের মধ্যে থেকে বেরিয়ে আসে এবং তার সামনে থাকা এক গ্রামবাসী দ্রুত গাছে উঠে পড়েন। তবে তার পরবর্তী মুহূর্তে, বাঘটি বনকর্মীদের ওপর হামলা চালায়, যার ফলে এক বনকর্মী গুরুতর আহত হন। এ ঘটনার পর, ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গ্রামে। বাঘের উপস্থিতি রোধে বন দফতর বনের সীমানায় নাইলনের জাল বসিয়েছিল, তবে গ্রামবাসীরা প্রায়ই সেগুলি কেটে ফেলায় বাঘের গ্রামে ঢুকে পড়া একাধিকবার ঘটেছে।
প্রসঙ্গত, বাঘটি খাঁচাবন্দি হওয়ার পর, বন দফতর এর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার ব্যবস্থা নিয়েছে। একবার স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্পন্ন হলে, বাঘটিকে গভীর জঙ্গলে পুনরায় ছেড়ে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। সম্প্রতি ৯ ফেব্রুয়ারি রাতে ফের বাঘের দেখা মেলে সেখানে। অনেকেই সেই বাঘ দেখেছেন বলে দাবি করেন। পরে ১০ ফেব্রুয়ারি সকাল থেকে শুরু হয় বাঘের খোঁজ। পায়ের ছাপ দেখে বাঘের সন্ধান শুরু করেন বনকর্মীরা। তখনই হঠাৎ ঝোপের পাশে ধানক্ষেতে বনকর্মীদের ওপর অর্কিতে হামলা চালায় সেই বাঘটি। ৩ জন বনকর্মীর মধ্যে ১ জনকে কামড়ে ধরে সে। সঙ্গীকে বাঁচাতে বাকি দুই বনকর্মী লাঠি দিয়ে বাঘটিকে পেটানো শুরু করেন। এটি স্পষ্ট যে, গ্রামে বাঘের প্রবেশের মূল কারণ বনাঞ্চলের সীমানার নেট ভাঙা এবং গ্রামবাসীদের দ্বারা এর অপব্যবহার। এর ফলে, বাঘের বাসস্থান থেকে বেরিয়ে এসে লোকালয়ে প্রবেশের ঘটনা ঘটছে। বন দফতরের পক্ষ থেকে জনসচেতনতা বাড়ানোর কাজ এবং সীমানা রক্ষার পরিকল্পনা করা হচ্ছে, যাতে ভবিষ্যতে এমন কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়ানো যায়। এটি একটি সতর্কীকরণ যে, বনজঙ্গল ও গ্রামাঞ্চলের সীমানা রক্ষা করার গুরুত্ব অপরিসীম, যাতে মানুষের জীবন সুরক্ষিত থাকে।