২০ বছর আগে, যখন স্নেহা মাত্র ৫ বছর বয়সি ছিলেন, জন্মদাত্রী মা তাকে ছেড়ে চলে গেছিলেন। এরপর, স্নেহা এবং তার ছোট ভাই সোমুকে দত্তক নেয় স্পেনের এক দম্পতি, গেমা ভিদাল ও জুয়ান জোশ। এই দম্পতির কাছে বড় হয়ে উঠলেও, স্নেহা জানতেন না তার প্রকৃত জন্মদাতার পরিচয়। একসময় এই তথ্যটি তার কাছে আসে, যে সে যাদের কাছে বড় হয়েছে, তারা তার জন্মদাতা মা নয়। এটি স্নেহার জীবনে এক বড় চমক ছিল। এই তথ্য জানার পর, স্নেহা মায়ের খোঁজে ভারতে আসার সিদ্ধান্ত নেন। ২১ বছর বয়সি স্নেহা, যিনি স্পেনের নাগরিক, তার শিকড়ের সন্ধানে ভারতে চলে আসেন। তার লক্ষ্য ছিল জন্মদাত্রী মা বনলতা দাসের সন্ধান পাওয়া। স্নেহা জানতেন যে, তাকে তার জীবনের একটি অমূল্য অংশ খুঁজে বের করতে হবে।
আবহাওয়ার বড় বদলের সম্ভাবনা আগামী সপ্তাহে, সতর্কতা জারি বাংলা জুড়ে
উলেখ্য, ২০১০ সালে, স্নেহা এবং তার ভাই সোমুকে ভুবনেশ্বরের একটি অনাথ আশ্রম থেকে দত্তক নেন গেমা এবং জুয়ান। কিন্তু বছর শেষে স্নেহা জানতে পারেন যে, তিনি এবং তার ভাই ছিলেন অনাথ আশ্রমের বাসিন্দা, যা ছিল তাদের জন্য একটি অদ্ভুত ও অস্বাভাবিক যাত্রা। জন্মদাত্রী মা বনলতা দাস ভুবনেশ্বরের নয়াপল্লী এলাকায় তাদের রেখে চলে যান, এবং পরে বনলতার স্বামী সন্তোষও পরিবারের সঙ্গ ছাড়েন। স্নেহা জানতেন, মায়ের জন্য একটি অনন্ত আশার পথ রয়েছে। আশ্রমে আসার পর, স্নেহা জানতে পারেন তার মা বনলতা দাস এবং তার পরিবার ছাড়তে বাধ্য হয়েছিল। এই তথ্যটি স্নেহাকে আরও উৎসাহিত করে, আর তিনি সিদ্ধান্ত নেন ভারতে এসে তার মাকে খুঁজে বের করবেন।
প্রসঙ্গত, ২০১০ সালে স্পেন থেকে ভারতে এসে স্নেহা ভুবনেশ্বরের আশ্রমে গিয়ে তার মায়ের খোঁজে বেরিয়ে পড়েন। তার মায়ের কাছে পৌঁছানোর এই যাত্রা ছিল অদম্য। এরপর, স্নেহা বিভিন্ন জায়গায় মায়ের সন্ধানে ঘুরেছেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, সে মায়ের সন্ধান পাননি। তবে স্নেহা তার মায়ের সম্পর্কে যতটুকু জানলেন, তাতে তার পরবর্তী পদক্ষেপ আরও স্পষ্ট হয়ে যায়। বর্তমানে, স্নেহা শিশুদের নিয়ে গবেষণা করছেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও, তার মায়ের খোঁজ এখনও পূর্ণ হয়নি। স্নেহা জানালেন, তার মায়ের সন্ধানে তিনি ভারতে অনেক জায়গায় গিয়েছেন, এবং এ বিষয়ে পুলিশকেও সহায়তা করেছেন। তিনি তার পুরনো বাড়ির মালিকের কাছ থেকে সব তথ্য পেয়েছেন এবং পুলিশের কাছে পুরো ঘটনা তুলে ধরেছেন। স্নেহা ১৯ ডিসেম্বর স্পেন থেকে ভারতে আসেন, এবং ভুবনেশ্বরে একটি হোটেলে অবস্থান করেন। তবে পড়াশোনার কারণে, তিনি খুব শীঘ্রই স্পেনে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। স্নেহা তার মায়ের খোঁজ পেতে চান, তবে এতে হতাশ হলেও তার মনোবল অটুট রয়েছে। স্নেহার গল্পটি শুধু একটি খোঁজের গল্প নয়, এটি প্রমাণ করে যে জীবনের চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে নিজেদের শিকড় খুঁজে পাওয়ার চেষ্টায় মানুষ অদম্য হয়ে উঠতে পারে। আজ স্নেহা নিজের পরিচয় খুঁজে বের করতে চান, আর এই যাত্রার মাঝে তিনি অন্যদের জন্যও অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছেন।