১৩ বছর পর রঞ্জি ক্রিকেটে ফিরেছেন ভারতীয় ক্রিকেট তারকা বিরাট কোহলি। দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে তাঁর খেলা দেখতে প্রায় হাজার হাজার দর্শক ভিড় জমিয়েছিলেন। তবে, এই উন্মাদনা আর উত্তেজনার মাঝে বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হয়, যার ফলে বহু দর্শক পদপিষ্ট হয়ে আহত হন। এই ঘটনা ঘটেছে সেই মুহূর্তে যখন স্টেডিয়ামের বাইরে ঢোকার জন্য মানুষজন হুড়োহুড়ি করছিলেন এবং লাইনে ঠেলাঠেলি হচ্ছিল।
বিশেষ দাবিতে ফের বাংলাদেশের রাজপথ দখল করল পড়ুয়ারা
দিল্লি ক্রিকেট সংস্থা সিদ্ধান্ত নেয় যে, কোহলির রঞ্জি ম্যাচটি টিকিট ছাড়া খেলা হবে, যাতে আরও বেশি সংখ্যক মানুষ মাঠে উপস্থিত থাকতে পারেন। তবে, এই সিদ্ধান্তটি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে পারেনি। সকাল ৮টা থেকে স্টেডিয়ামের বাইরে ভিড় জমতে শুরু করে, এবং গেট খোলার পর তা আরও বেড়ে যায়। টিকিট না থাকার কারণে সকলেই আগে মাঠে ঢুকে ভালো স্থান দখল করার চেষ্টা করছিলেন, ফলে একের পর এক গেটে ব্যাপক হুড়োহুড়ি শুরু হয়। এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় এবং দর্শকদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। এর ফলে অনেক দর্শক মাটিতে পড়ে যান এবং পদপিষ্ট হন। দর্শকদের মধ্যে যারা আহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে বেশ কিছু বাচ্চা উপস্থিত ছিল, যা পরিস্থিতি আরও জটিল করে তোলে। ক্ষতিগ্রস্তদের দ্রুত মাঠে চিকিৎসা দেওয়া হয় এবং বেশ কিছু আহত ব্যক্তিকে বাড়ি পাঠানো হয়। তবে, এই ঘটনাটি হতাহতের সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছিল, যা আরও বড় দুর্ঘটনার দিকে নিয়ে যেতে পারত। নিরাপত্তারক্ষীরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে হিমশিম খাচ্ছিলেন এবং একজন নিরাপত্তারক্ষীও আহত হন।
প্রসঙ্গত, এই ঘটনা পরবর্তীকালে দর্শকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং পুলিশের বাইক ভাঙচুরের মতো সহিংস ঘটনা ঘটে। স্টেডিয়ামের গেটের বাইরে অসংখ্য জুতো পড়ে থাকতে দেখা যায়, যা ধাক্কাধাক্কির চিহ্ন হিসেবে প্রমাণ দেয়। এর পর, ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য আরও একটি গেট খুলতে বাধ্য হন কর্তৃপক্ষ। এদিকে, খেলা চলাকালীন এক যুবক মাঠে প্রবেশ করেন এবং বিরাট কোহলিকে প্রণাম করেন। তাকে নিরাপত্তারক্ষীরা দ্রুত ধরে বাইরে নিয়ে যান। এই ঘটনার পর, নিরাপত্তারক্ষীরা আরও সতর্ক হয়ে মাঠের চারপাশে নজরদারি বাড়িয়ে দেন, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা পুনরাবৃত্তি না ঘটে। একই ধরনের ভিড়ের ঘটনা দেখা গেছে পুণ্যস্নান উপলক্ষে প্রয়াগরাজে কুম্ভমেলায়। সেখানেও তীব্র ভিড়ের কারণে পদপিষ্ট হয়ে ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে, যদিও বিভিন্ন সূত্রে মৃতের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে বলে জানা গেছে। প্রশাসন পরিস্থিতি সামলাতে হিমশিম খেয়েছে, তবে দিল্লির এই ঘটনা থেকে অনেক কিছু শিখতে হবে। এটি স্পষ্ট যে, বড় জনসমাগমের সময় নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করতে হবে, বিশেষ করে জনপ্রিয় তারকাদের খেলা বা ধর্মীয় অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে, যাতে মানুষের জীবন সুরক্ষিত থাকে এবং এ ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।