Flash news
    No Flash News Today..!!
Wednesday, March 19, 2025

আফগান ক্রিকেটে নয়া আসা মেল জোন্স

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk :

২০২১ সাল, আফগানিস্তানের ক্রীড়াক্ষেত্রের জন্য একটি কালো বছর হিসেবে স্মরণীয়। যখন বিশ্বের অন্য দেশগুলো তাদের ক্রীড়াক্ষেত্রকে উন্নতির দিকে নিয়ে যেতে চেষ্টা করছিল, তখন তালিবান সরকারের হাতে ক্ষমতা চলে আসার ফলে আফগানিস্তানে মহিলাদের খেলা অনেকটা নিষিদ্ধ হয়ে পড়ে। তবে, একে অপরের সাহায্যে সেই অন্ধকার সময়েও ফুটে ওঠে আশার আলো। আর সেই আশার আলোর পিছনে অন্যতম ভূমিকা পালন করেন অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার মেল জোন্স।

প্রসঙ্গত,  ২০২১ সালে, আফগানিস্তানে গণতান্ত্রিক সরকার পতনের পর তালিবান ক্ষমতা দখল করে। তালিবান সরকারের একটি অন্যতম সিদ্ধান্ত ছিল, মহিলাদের খেলাধুলায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা। এর ফলে আফগানিস্তানের মহিলাদের ক্রীড়াক্ষেত্র পিছিয়ে পড়ে, অনেক ক্রীড়াবিদ নিজের খেলাকে ছাড়তে বাধ্য হন। একাধিক মহিলা ক্রিকেটার দেশ ছাড়তে বাধ্য হন, কিন্তু যারা তা করতে পারেননি, তারা আফগানিস্তানে থেকেই নিজেদের স্বপ্ন বিসর্জন দেন। এই কঠিন সময়ে, একজন অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার, মেল জোন্স, আফগানিস্তানের ১৯ জন মহিলা ক্রিকেটারকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসেন। মেল জোন্স, যিনি ১৯৯৭ থেকে ২০০৫ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছেন এবং বর্তমানে ক্রিকেট কমেন্টেটর হিসেবে পরিচিত, আফগানিস্তানের মহিলা ক্রিকেটারদের নতুন জীবন শুরু করতে সহায়তা করেন। তিনি ২০২১ সালে আফগান ক্রিকেটার বেনাফশা হাশিমিকে মেসেজ পাঠিয়ে জানান, যদি তাদের জীবনের ঝুঁকি থাকে, তাহলে তারা আফগানিস্তান ছেড়ে যেতে পারেন। হাশিমি সাড়া দেন, এবং মেল জোন্স তাঁদের সহায়তা করতে এগিয়ে আসেন। মেলবোর্নে নিজের হোটেলের ঘরে একটি অফিস খোলেন এবং আফগানিস্তানের মহিলা ক্রিকেটারদের অস্ট্রেলীয় প্রশাসনের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করেন। 

মহাকুম্ভে আগুনের ঘটনা: প্রায় ১২টি তাঁবু পুড়ে ছাই

তবে, আফগানিস্তান থেকে সরাসরি অস্ট্রেলিয়ায় যাওয়ার পথ বন্ধ ছিল। পাকিস্তান হয়ে আফগানিস্তান থেকে একত্রে ১৩৫ জনের একটি দল অস্ট্রেলিয়ায় পৌঁছানোর জন্য পরিকল্পনা তৈরি হয়। মেল জোন্স পরামর্শ দেন, "যদি পাকিস্তান বর্ডারে আটকে পড়েন, তবে বলবেন যে অসুস্থ আত্মীয়কে দেখতে ইসলামাবাদ যাচ্ছেন।" একসঙ্গে এত মানুষ মিথ্যা বললে সন্দেহ হতে পারে, তাই ১৩৫ জনকে ছোট ছোট গ্রুপে ভাগ করা হয়। কিছু সময় পর পর এসব গ্রুপ পাঠানো হয় পাকিস্তান বর্ডারে। বহু মাসের পরিশ্রমে, ২০২২ সালে ৯ জন আফগান ক্রিকেটার ক্যানবেরায় পৌঁছান এবং বাকি ১০৬ জন মেলবোর্নে পৌঁছান। অস্ট্রেলিয়ায় আসার পর, আফগানিস্তানের মহিলা ক্রিকেটাররা আবারো একত্রিত হয়ে খেলাধুলায় ফিরতে পারেন। ২০২৪ সালে, আফগানিস্তান একাদশ ও ক্রিকেট উইথাউট বর্ডার্স একাদশের মধ্যে একটি প্রদর্শনী ম্যাচ আয়োজন করা হয়, যেখানে ৩ বছর পর মহিলারা একে অপরের সঙ্গে খেলেন। এই ম্যাচের পিছনে ছিলেন মেল জোন্স, যিনি তাঁদের পুনরায় একত্রিত হতে সাহায্য করেন।


উলেখ্য,  অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট প্রশাসন এবং ক্রীড়াবিদদের এই সহায়তা নিঃসন্দেহে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অস্ট্রেলিয়া আফগানিস্তানের নারী ক্রীড়াবিদদের প্রতি তাদের সমর্থন জানিয়ে এসেছে। অস্ট্রেলিয়ার পুরুষ ক্রিকেট দল আফগানিস্তানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলে না, মহিলাদের স্বার্থে। ২০২১ থেকে, আফগানিস্তান ও অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট সম্পর্ক শুধুমাত্র আইসিসি টুর্নামেন্টে সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে। এখন, আফগানিস্তানের মহিলা ক্রিকেটারদের মূলধারায় ফিরিয়ে আনতে এবং তাদের খেলাধুলার পথ মসৃণ করতে অস্ট্রেলিয়া আরও পদক্ষেপ নিতে পারে। বিশেষ করে, আইসিসি এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির সমর্থন, আফগানিস্তানে নারী ক্রীড়াবিদদের জন্য সুযোগ এবং সুবিধা প্রদান করলে, তাদের খেলাধুলায় ফিরে আসার পথ আরও সহজ হবে। মেল জোন্স এবং আফগানিস্তানের মহিলা ক্রিকেটারদের প্রচেষ্টা যেন এক নতুন দিশার আলোকরেখা। মানবিক সহায়তার মাধ্যমে একে অপরের পাশে দাঁড়িয়ে, তারা শৃঙ্খল ভেঙে ক্রিকেটের মাঠে ফিরে এসেছে। 

#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image

Journalist Name : Bidisha Karmakar

Tags:

Related News