এবার রাষ্ট্রপুঞ্জে ইজরায়েলি দখলদারির বিরুদ্ধে ভোট ভারতের

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

কলকাতার বড়বাজারের ‘নেভেহ্‌ শালোম’ সিনাগগ অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ। ২০ দিন হয়ে গেল সাধারণের জন্য দরজা খোলেনি ইহুদিদের এই ধর্মস্থান। সুদূর ইজরায়েলের যুদ্ধের প্রভাব কলকাতায়।  সাধারণত মুসলমান কর্মীরাই সিনাগগ দেখভালের দায়িত্ব সামলান।  পাশাপাশি দু’টি সিনাগগ। অনেকটা বড় চত্বর। একটি গলিতে মূল প্রবেশদ্বার। সে চত্বরে ঢুকে পড়লেই দু’টি সিনাগগে ঢোকা যায়। কিন্তু বিবাদী বাগের ব্যস্ত অফিসপাড়া পেরিয়ে, ব্যবসায় গমগমে বড়বাজারের মাঝখানে লোহার গেটটিতে তালা ঝুলছে। ব্যস্ততার লেশমাত্র নে‌ই। নিরাপত্তা রক্ষী আগলে রেখেছে কলকাতার ইহুদিদের প্রাচীন ধর্মস্থান ‘মেগন ডেভিড’ সিনাগগের প্রবেশদ্বার। রক্ষীর কড়া উত্তর, ‘‘একমাত্র বিদেশ থেকে কোনও ইহুদি পর্যটক এলে তালা খুলে দেখানোর নিয়ম। না হলে বন্ধ রাখতে হবে।’’ তাঁরা শুনেছেন, ইজরায়েলে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর দিল্লি থেকে এমনই নির্দেশ এসেছে। ইজরায়েল-প্যালেস্টাইন যুদ্ধের প্রভাবে ইহুদি আর মুসলিমদের পারস্পরিক সম্পর্কে তাপ বাড়তেই প্রশাসন সতর্ক হয়েছে বলে মনে করছেন সিনাগগের আর এক কর্মী। ইজরায়েলের যুদ্ধ পরিস্থিতি সম্পর্কে যথেষ্ট সতর্ক তাঁরা। এক জন বললেন, ‘‘এখানে অধিকাংশ কর্মীই মুসলিম। সিনাগগের ভিতরের কোয়ার্টার্সে থাকেন। তবে এখানে কাজ করা নিয়ে কারও কোনও সমস্যা নেই। কলকাতা শহরে ইহুদিদের বাস বহুকালের। কয়েক শতকের। সেই কোম্পানির আমলেরও আগের কথা। ইজরায়েল দেশ তৈরি হওয়ার অনেক আগে থেকেই। 


হামাস-ইজরায়েল সংঘর্ষ শুরুর পর কেটে গিয়েছে এক মাসেরও বেশি সময়। বিগত ৩৫ দিনে একাধিকবার যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নাকচ করেছে ইজরায়েলি সরকার। 

যুদ্ধ যত বাড়ছে, ততই সঙ্গীন হচ্ছে গাজার সবথেকে বড় হাসপাতাল আল-শিফার অবস্থা। জ্বালানি ফুরিয়ে যাওয়ায় অন্ধকারে ডুবে হাসপাতাল। স্বাস্থ্যকর্মীদের দাবি, বিদ্যুৎ ও ওষুধের অভাবে ৩ নবজাতক সহ ৩২ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এক ডজনেরও বেশি শিশুর প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে।

যুদ্ধের শুরুতেই, গত অক্টোবর মাসে প্রায় ২৫০ জন ইজরায়েলি ও বিদেশি নাগরিকদের পণবন্দি করে নেয় হামাস। ইজরায়েলের তরফে একাধিকবার এই বন্দিদের মুক্তি দেওয়ার কথা বলা হলেও, তাতে গুরুত্ব দেয়নি হামাস। পরে অবশ্য যুদ্ধে বেকায়দায় পড়তেই দুই-একজন করে বিদেশি নাগরিকদের মুক্তি দেয় হামাস। ইজরায়েলের দাবি, হামাসের হাতে বন্দি ২৫০ জনের মধ্যে অধিকাংশই মহিলা ও শিশু। তাদের গাজা স্ট্রিপের নীচে গোপন সুড়ঙ্গে আটকে রাখা হয়েছে। ইজরায়েলের সেনা হামলা চালালেই মানবঢাল হিসাবে ওই পণবন্দিদের ব্যবহার করবে হামাস।


যুদ্ধের একমাস পর ইজরায়েল সেনা কার্যত গাজার দখল নিতেই বন্দিদের মুক্তির প্রস্তাব দিল হামাস। টেলিগ্রাম চ্যানেলের মাধ্যমে হামাসের আল কাশেম ব্রিগেড জানান, তারা ৭০ জন মহিলা ও শিশুকে মুক্তি দিতে রাজি। তার জন্য ইজরায়েলকে একটা শর্ত পূরণ করতে হবে। ৫ দিনের জন্য যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করতে হবে। ওই সময়ে গাজায় ত্রাণ প্রবেশ ও বিলি করতে দিতে হবে বিনা বাধায়।

এদিকে রাষ্ট্রপুঞ্জে “পূর্ব জেরুজালেম ও অধিগৃহীত সিরিয়ান গোলান সহ প্যালেস্তাইনের অঞ্চলে বসতি স্থাপন” নামক একটি প্রস্তাবনা পেশ করা হয়। ভারত সহ রাষ্ট্রপুঞ্জের মট ১৪৫টি সদস্য দেশ এই  প্রস্তাবনার পক্ষে ভোট দেয়। বিরোধিতা করে মাত্র সাতটি দেশ- আমেরিকা, কানাডা, হাঙ্গেরি, ইজরায়েল, মার্শাল আইল্যান্ড, নাউরু ও মাইক্রোনেশিয়া। ১৮টি দেশ ভোট দান থেকে বিরত থাকে।


যুদ্ধের শুরু থেকে ইজরায়েলের (Israel) পাশে দাঁড়ালেও, গাজা সহ প্যালেস্তাইনের (Palestine) একাধিক জায়গায় যে নির্মমতা, বর্বরতা চলছে রোজ, তার বিরুদ্ধে সরব হয়েছে ভারত (India)। এবার রাষ্ট্রপুঞ্জেও অধিগৃহীত প্যালেস্তাইনের অঞ্চলে বসতি স্থাপনের কার্যকলাপের নিন্দা করা হল। পূর্ব জেরুজালেম ও অধিগৃহীত সিরিয়ান গোলানে বসতি স্থাপনের বিরোধিতায় ভোট দিল ভারত। ভারত প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেওয়ায় তিনি আনন্দ প্রকাশ করে তৃণমূল সাংসদ সাকেত গোখলে জানিয়েছেন, প্যালেস্টাইনে ইজরায়েলের দখল অবৈধ। ইজরায়েলের বর্ণবাদ এখনই শেষ করতে হবে।প্রসঙ্গত, গত মাসে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ পরিষদে জর্ডানের পেশ করা এক খসড়া প্রস্তাবে ভোটদানে বিরত ছিল ভারত। ওই প্রস্তাবে ইজরায়েল-হামাস সংঘর্ষে অবিলম্বে মানবিক যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানো হয়েছিল।

এবার রাষ্ট্রপুঞ্জে ইজরায়েলি দখলদারির বিরুদ্ধে ভোট ভারতের 

#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image

Journalist Name : Tamoghna Mukherjee

Related News