অবাক করা তিন জনের দেশ

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

দেশ বলতে আমরা বুঝি মোটামুটি একটা বড় ভূখণ্ড, বন জঙ্গল, পশু পাখি, নদী নালা সেই সাথে সেই দেশের মানুষজন। সেই দেশের নিজস্ব সংবিধান পতাকা মুদ্রা আইন এসবই দরকার এক দেশ বানাতে। কিন্তু এমন কোন দেশের কথা শুনেছেন যেটি মাঝ সমুদ্রে মাত্র দুটি বিরাট পিলার বা স্তম্ভের উপর দাঁড়িয়ে আছে! কোন পাহাড় পর্বত গাছপালা নদী-নালা নয় শুধু একটা লম্বা বড় প্ল্যাটফর্ম তাও আবার মাঝ সমুদ্রে। দূর থেকে দেখলে মনে হয় কোন জাহাজ বন্দর কিংবা হেলিপ্যাড। কিন্তু অবাক করার বিষয় হলো সেই ছোট লোহার কাঠামোটাই পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম দেশ সিল্যান্ড। হলিউডের সাইন্স ফিকশন মুভির মত দেখতে এই দেশ সিল্যান্ড, সম্পূর্ণ ভাষায় যাকে বলে প্রিন্সিপ্যালিটি অফ সিল্যান্ড। দুটো বিশাল মোটা থাম এর উপর দাঁড়িয়ে থাকা একটা লোহার কাঠামো। ইতিহাস বলছে সিল্যান্ডের মূল গল্প শুরু হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকে। সেই সময় জার্মানির ফৌজ বিমান ইংল্যান্ডকে তছনছ করে দিয়েছে। তখনই ব্রিটিশ উপকূলের থেকে বেশ কয়েক মাইল দূরে দুটি লম্বা টাওয়ার তৈরি করা হয় যার নাম ছিল "রাফস টাওয়ার"। ইংল্যান্ডের একপ্রকার দুর্গ হিসেবেই তৈরি হয়েছিল এটি সৈন্য সামন্ত, অস্ত্র কামান বন্দুক সবই মজুদ থাকতো এখানে। শত্রু বিমান দেখলেই সেগুলিকে আক্রমণ করাও জার্মানদের গতিবিধি জানতে এই টাওয়ারটি ব্যবহার করেছিল ব্রিটিশ ফৌজ।

যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর ১৯৫৬ সাল নাগাদ বৃটিশ রয়াল নেভি এই টাওয়ারটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে চলে যায়। ফাঁকাই পড়েছিল এই রাফস টাওয়ার। ১৯৬৭ সাল থেকে শুরু হয় আরো এক অধ্যায়। যুদ্ধের সময় এই টাওয়ারের যা ডার, বেতার যন্ত্র বসানো শুরু হয়। ৬৭ সালে একটি অবৈধ রেডিও সম্প্রচারকারী দল এই টাওয়ারে এসে ঘাঁটি গড়ে। সেই দলেই ছিলেন রয় বেটস এবং তার ছেলে মাইকেল বেটস। সবাই মিলে একসঙ্গে এখানে থাকতে শুরু করলে একসময় রয় বেটসের কর্তৃত্ব চরমে ওঠে। তিনি ঠিক করেন সেই জায়গায় একাই বসবাস করবেন। তার সঙ্গে থাকা সমস্ত বাসিন্দা কে উচ্ছেদ করেন তিনি। রাফা টাওয়ারের অবস্থান ছিল একটু অদ্ভুত স্থান আন্তর্জাতিক জল সীমানায়। ফলে এই অঞ্চলে কারো কোন নিয়ন্ত্রণ থাকেনা। ইংল্যান্ডের হাতের বাইরে ছিল এই অঞ্চলটি। সবদিক থেকেই সুবিধা পেলেন রয় বেটস। স্ত্রী আর পুত্রের সঙ্গে এই টাওয়ারকে এই ঘোষণা করলে নিজের নতুন দেশ হিসেবে। নাম দিলেন "প্রিন্সিপ্যালিটি অফ সিল্যান্ড"। সেই থেকে আজ পর্যন্ত বেটস পরিবার এখানে বসবাস করছে। ১৯৭৫ সালের সিল্যান্ড নিজেদের সংবিধান প্রকাশ করে। তৈরি হয় পতাকা, প্রতীক ,জাতীয় সংগীত। এমনকি এই দেশের নিজস্ব মুদ্রা , পাসপোর্ট ও রয়েছে। যদিও যদিও মাঝখানে বেশ কয়েকবার এই দেশ দখল করার চেষ্টা করা হয়েছিল কিন্তু শেষমেষ বেটস পরিবারের হাতেই টিকে যায় দেশ। কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার হলো কোন দেশই সিল্যান্ডকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। মানচিত্রে দেখা গেলেও সিল্যান্ড নিজেকেই নিজে সার্বভৌম দেশ হিসেবে ঘোষণা করেছে।

#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image

Journalist Name : Ashapurna Das Adhikary

Tags:

Related News