মেয়ের স্বপ্ন পূরণে মরিয়া বাবা, মায়ের মৃত্যুর খবর চেপে গিয়ে মেয়েকে ট্র্যাকে পাঠালেন বাবা

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

ছোট সংসারে আচমকাই বাজ পড়েছিল। ভালোবাসা দিবসের পরের দিনই জীবনসঙ্গীকে হারিয়েছিলেন রবি মান্ডি। কিন্তু, মেয়ে তখন স্বপ্নের অনেক কাছাকাছি। রাজ্যস্তরের ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় প্রাণপাত করছিল। মেয়ের স্বপ্নের কথা ভেবে নিজের আবেগ-কষ্টগুলোকে বাক্সবন্দি করে রেখেছিলেন রবি। 'স্বপ্নভঙ্গ' হবে না মেয়ের, তিনি হতে দেবেন না।

বাঁকুড়ার সিমলাপালের নিমডাঙার বাসিন্দা রবি মান্ডি। তিনি পেশায় দিনমজুর। কিছু জমিজমা রয়েছে, তা চাষ করেই দিন গুজরান। টানাটানির সংসার ভালোবাসায় ভরা। নেপথ্যে ছিল তাঁর মেয়ে সুমিত্রা মান্ডি। শান্ত স্বভাবের সুমিত্রা পড়ার পাশাপাশি খেলাধুলোতেও তুখোড়।

রবি এবং তাঁর স্ত্রী কল্পনার বিয়ের দীর্ঘদিন পর তাঁদের কোল আলো করে আসে সুমিত্রা। কেওটধরা বড়খুলিয়া প্রাথমিক স্কুলের ক্লাস ওয়ানের ছাত্রী সে। ৬ ফেব্রুয়ারি জেলায় ৭৫ মিটার দৌড় প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয় সে। এরপরেই লক্ষ্য ছিল রাজ্য স্তরে পদক জয়। স্কুলের শিক্ষকদেরও নয়নের মণি ছিল এই খুদে।

কাশীনাথবাবু 'সংবাদমাধ্যম'-কে দেওয়া সাক্ষাত্‍কারে বলেন, "কল্পনাদেবীর পেটে টিউমার হয়েছিল। ১৪ তারিখ তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। এরপরেই পরিবারের সদস্যরা তাঁকে অন্যত্র স্থানান্তরিত করার সিদ্ধান্ত নেন। নিয়ে যাওয়া হয় বাঁকুড়া মেডিক্যালে। ১৫ তারিখ সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।"

এদিকে স্ত্রীর মৃত্যুর খবর মেয়েকে জানাননি রবি। রাজ্যের মধ্যে যাতে সেরা হতে পারে সে, তাই দুঃখের রাশ ছোট কাঁধে ফেলে দেননি তিনি। ১৮ এবং ১৯ ফেব্রুয়ারি জলপাইগুড়িতে রাজ্য স্তরের ৭৫ মিটার দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নেন তিনি। সেখানে পঞ্চম স্থান অধিকার করে সুমিত্রা। মায়ের মৃত্যুর খবর তখনও জানা ছিল না এই খুদের।

এরপর বাড়ি ফেরার পর তাঁকে চোখের জলে মায়ের মৃত্যুর খবর দেন রবি। কান্নায় ভেঙে পড়ে সে। একদিকে মেয়ের সাফল্য, অন্যদিকে স্ত্রীর মৃত্যু, অনুভূতির বিড়ম্বনায় এই প্রবীণ। তিনি জানান, মেয়েকে মানুষ করে তোলাই তাঁর লক্ষ্য।

অন্যদিকে, কাশীনাথ পাঠকও প্রিয় ছাত্রীর জন্য উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, “মঙ্গলবার ওর বাড়িতে গিয়েছিলাম। খোঁজ নিয়েছি ওদের। কাল মিড ডে মিলে মাংস ভাত হয়েছিল। ওকে আমার বাইকে চাপিয়ে স্কুলে নিয়ে আসি। এরপর ও একটু বন্ধুদের সঙ্গে খেলেছে। আবার ওকে বাড়ি পৌঁছে দিয়েছি। এতটুকু মেয়ে! এখন ওকে মানসিকভাবে সুস্থ রাখাটাই এখন লক্ষ্য।”

#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image

Journalist Name : Sampriti Gole

Related News