রাজ্যে আজ একদিনেই করোনা
আক্রান্ত ৬১৫৩জন ! মৃত্যু ৮ জনের।
নতুন বছর শুরুর আগে থেকেই
বারবার সাবধান করেছিলেন চিকিৎসকরা, কিন্তু তাতেও কান দেয়নি অনেকে। জার ফলে রাজ্যে আবার
থাবা বসিয়েছে করোনা। ইতিমধ্যেই করোনার নতুন প্রজাতি রাজ্যে মোট ১৫ জনের শরীরে বাসা
বেঁধেছে। শুধু যে পশ্চিমবঙ্গ তা নয় রাজ্যের সাথে সাথে গোটা দেশের এক অবস্থা। করোনা
থাবাই কার্যত জেরবার গোটা দেশ। বর্তমানে গোটা দেশে ওমিক্রন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২০০০
ছুঁইছুঁই। সামনেই ছিল বড়দিন, বড়দিনের রাতে পার্কষ্ট্রীটে মানুষের ভিড় ছিল চোখে পড়ার
মতো। কাল বর্ষবরণের সকালেও একই চিত্র চোখে পড়েছে, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল থেকে শুরু করে
আলিপুর চিড়িয়াখানা কার্যত তিল ধারণের জায়গা ছিল না। কলকাতা থেকে জেলা সর্বত্রই একই
ছবি।
২৫শে ডিসেম্বরের আগেও রাজ্যে যেখানে দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা ছিল ৫০০ এর নীচে বছর শুরু প্রথম দিনেই ছবিটা একদম আলাদা। গত ২৪ ঘণ্টাই রাজ্যে মোট করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা প্রায় সারে চার হাজার। গত বুধবার রাজ্যে সংক্রমণের হাড় ছিল ৫.৪০ কিন্তু ঠিক দুই দিনের মাথাই সংক্রমণের হার দ্বিগুণেরও বেশি, প্রায় ১২.০৫ শতাংশ। রাজ্যে পজিটিভিটি রেটও ২৬ শতাংশের ঘরে। দক্ষিণ ২৪ পরগণার প্রশাসনিক বৈঠক থেকেই মুখ্যমন্ত্রী লকডাউনের চিন্তা ভাবনার কথা জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “ প্রয়োজনে কিছু দিনের জন্য আবার বন্ধ করা হতে পারে স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়, ফিরতে পারে মাইক্রো কন্টেনমেন্ট জোন”। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পর থেকেই জল্পনা চলছিলো, সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন উঠছিল বারবার, তাহলে কি আবার নতুন বছরের শুরুতেই ঘর বন্দি দশা? নবান্ন সুত্রে বলা হয়েছিল ৩শরা জানুয়ারি অর্থাৎ সোমবার নবান্নের তরফ থেকে অ্যাডভাইজারি জারি করা হবে, কিন্তু সোমবার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হলনা। বছরের প্রথম রবিবার অর্থাৎ আজ ২শরা জানুয়ারি বিকেল ৩টে নাগাদ রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব বি পি গোপালিকা নবান্নের তরফ থেকে সাংবাদিক বৈঠক করেন, সেখানেই তিনি আংশিক লকডাউনের কথা বলেন। আগামী ৩শরা জানুয়ারি থেকে ১৫ই জানুয়ারি পর্যন্ত আংশিক লকডাউন করা হয়েছে। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক রাজ্যের তরফ থেকে কি কি বিধি নিষেধ আরোপ করা হয়েছে:-
কাল থেকে বন্ধ থাকবে রাজ্যের সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, তবে চলবে অফিসিয়াল কাজকর্ম, বন্ধ থাকবে জিম সেন্টার, রেস্তোরা, সুইমিং পুল, বার, বিনোদন পার্ক, চিড়িয়াখানা, স্পা সেন্টার। তবে সিনেমাহল এবং থিয়েটার ৫০ শতাংশ দর্শক নিয়ে খোলা থাকবে। খোলা থাকবে সমস্ত দোকান বাজার। শপিং মল গুলিতে প্রবেশের জন্য মাস্ক আবশ্যক, তবে ৫০ শতাংশ মানুষ সেখানে প্রবেশ করতে পারবে। রাজ্যের সমস্ত সরকারি এবং বেসরকারি অফিস ৫০ শতাংশ কর্মী নিয়ে কাজ করবে জানানো হয়েছে নবান্নের তরফ থেকে। আপাতত সাময়িক ভাবে বন্ধ থাকবে ব্রিটেন থেকে আসার বা যাবার বিমান পরিষেবা। বিমান বন্দরে যাত্রীদের আরটিপিসিআর টেস্ট বাধ্যতামূলক করেছে রাজ্য সরকার।৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে সন্ধ্যে ৭টা পর্যন্ত চলবে লোকাল ট্রেন। তবে মেট্রোর ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে চলার কথা বলা হলেও কোন নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া হয়নি।আগামীকাল নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে রাজ্যের তরফ থেকে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের কর্মসূচীও বাতিল করা হয়েছে, দুয়ারে সরকার কর্মসূচীও ১ মাস পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।