হিন্দু বিবাহ বিধি (হিন্দু ম্যারেজ অ্যাক্ট), ১৯৫৫
হিন্দু বিবাহ বিধিতে সামাজিক প্রথা ও নিয়ম অনুযায়ী হিন্দু বিবাহ সম্পন্ন হলে তাকে বৈধ হিসাবে গণ্য করা হয় এবং
সপ্তপদী যে-সব বিবাহের একটি অঙ্গ,
অগ্নি-সাক্ষী করে সপ্তপদী হয়ে যাবার পরেই বিবাহ সম্পূর্ণ হয়েছে বলে ধরা হয়।
হিন্দু আইনে কোথাও বলা হয় নি যে, উভয়পক্ষের সন্মতি না থাকলে বিবাহ অসিদ্ধ হবে।
কিন্তু যদি কোনও পক্ষের সন্মতি অসত্ উপায়ে বা জোর করে নেওয়া হয় –
তাহলে সেই বিবাহ অবৈধ ঘোষিত হতে পারে।
ধর্মীয় আচার ছাড়া হিন্দু বিবাহ অবৈধ, বিবাহ সম্পর্কিত একটি মামলায় এমনই পর্যবেক্ষণ এলাহাবাদ হাই কোর্টের (Allahabad High Court) । বিচারপতি মন্তব্য করেন, হিন্দু বিবাহের অপরিহার্য অঙ্গ অগ্নিসাক্ষী করে যুগলের সাতপাকে বাঁধা পড়া। যাবতীয় রীতি মেনে বিবাহ সম্পন্ন না হলে তা আইনের চোখে অবৈধ।
এক ব্যক্তি এলাহাবাদ হাই কোর্টে অভিযোগ করেছিলেন, আইনত বিচ্ছেদ না হলেও তাঁর স্ত্রী অন্য ব্যক্তিকে বিয়ে করেছেন। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৭ সালে সত্যম সিংয়ের সঙ্গে বিয়ে হয় স্মৃতি সিংয়ের। বিয়ের পরেই উভয়ের মধ্যে অশান্তি শুরু হয়। স্মৃতি শ্বশুরবাড়ি ছাড়েন। স্বামী এবং পরিবারের অন্য সদস্যের বিরুদ্ধে পণের দাবিতে অত্যাচারের অভিযোগ আনেন। পালটা স্মৃতির বিরুদ্ধে বিচ্ছেদ না করেই দ্বিতীয় বিয়ে করার অভিযোগ আনেন সত্যম। যদিও পুলিশের দাবি, স্মৃতির বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ আনা হয়েছে। এর পর সত্যম স্মৃতির বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা করেন। সেখানে অভিযোগ করা হয়, স্মৃতি দ্বিতীয় বিয়ের কথা স্বীকার করেছেন। যদিও স্মৃতির আইনজীবী দাবি করেন, এই অভিযোগও মিথ্যে। অযথা মামলা করে মক্কেলকে হেনস্থা করছে তাঁর শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা।
এই মামলার শুনানিতেই বিচারপতি সঞ্জয় কুমার সিংয়ের পর্যবেক্ষণ, “যতক্ষণ না বিবাহ যথাযথ আচার মেনে হচ্ছে, ততক্ষণ সেই বিয়েকে বৈধ বলা যায় না।” তাঁর আরও মন্তব্য, হিন্দু বিবাহ পদ্ধতি অনুযায়ী “বিয়ে যদি বৈধ না হয়, তবে আইনের দৃষ্টিতেও সেটি বৈধ বিবাহ নয়। সাতপাক হিন্দু বিবাহের একটি অপরিহার্য রীতি। বর্তমান মামলায় তার প্রমাণ মেলেনি।” উল্লেখ্য, হিন্দু বিবাহ আইনে সাতপাক-সহ যাবতীয় রীতি মেনে বিবাহের কথাই বলা হয়েছে। সেই দৃষ্টান্তই তুলে ধরে আদালত।