ডোপিং-এর দায়ে কড়া শাস্তি,২১ মাস নির্বাসিত জিমন্যাস্ট দীপাSampriti Gole

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

ভারতীয় জিমন্যাস্টিক্সের আইকন দীপা কর্মকার আবার ফিরছেন। শুধু ফিরছেন বললে ভুল বলা হবে। আন্তর্জাতিক স্তরে নিজেকে মেলে ধরার জন্য মুখিয়ে রয়েছেন তিনি।

গত এক বছরের উপর তিনি জিমন্যাস্টিক্স জগত্‍ থেকে ছিটকে গিয়েছেন। প্রথমে ছিল চোট আঘাতের কারণে। পরে ওয়াডা (WADA) ত্রিপুরার আন্তর্জাতিক জিমন্যাস্টকে সাসপেন্ড করে।

কারণ, তাঁকে র‌্যাপিড টেস্টে বারবার ডাকা সত্ত্বেও তিনি পরীক্ষায় বসার জন্য হাজির হননি। নিয়ম হচ্ছে, তিনবার র‌্যাপিড টেস্টের সুযোগ দেয় ওয়াডা। তার মধ্যে কোনওবার যদি উপস্থিত না হন তাহলে সংশ্লিষ্ট খেলোয়াড়কে সাসপেন্ড করে দেয়। দীপার ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। এখন তিনি সাসপেনশনের আওতায় আছেন। জানা গিয়েছে, মোট ২১ মাস নির্বাসিত তিনি। ১০ জুলাই পর্যন্ত নিবার্সনে থাকতে হবে। তারপর শাস্তির ফাঁড়া কাটবে।

দীপার এই নির্বাসন বহাল থাকলে চলতি বছরের ১০ জুলাই পর্যন্ত। তাঁর বিরুদ্ধে ২০২১ সালের অক্টোবর থেকে তদন্ত চলছিল বলে এতদিন তিনি কোনও খেলায় অংশগ্রহণ করতে পারেননি। যার ফলে সেটাকে শাস্তি হিসেবে দেখা হবে। আন্তর্জাতিক টেস্টিং এজেন্সির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “দীপা কর্মকারকে ২১ মাসের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে। যা চলবে ২০২৩ সালের ১০ জুলাই পর্যন্ত। এফআইজি এর অ্যান্টি ডোপিং রুলসের ১০.৮.২ ধারা অনুযায়ী এই সিদ্ধান্তটি নেওয়া হয়েছে।”

দীপা নিজে টুইটারে ২ পাতার এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, এক দীর্ঘ লড়াই আজ শেষের পথে। নিজের জন্য, নিজের কেরিয়ারের জন্য এতদিন লড়াই করছিলেন দীপা। তিনি জানান, কীভাবে তাঁর নমুনার মধ্যে নিষিদ্ধ পদার্থ পাওয়া গিয়েছে, তা নিয়ে নিজেও ধন্দে। কীভাবে তাঁর শরীরে নিষিদ্ধ পদার্থ গিয়ে তা ভেবে কুল কিনারা পাননি। তিনি ঠিক করেন, প্রভিসনাল সাসপেনশন কাটাবেন। দীপা জানান, তিনি খুশি যে এই বিষয়টির সমাধান হল। তাঁর নির্বাসন কয়েক মাস কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। ২০২৩ এর জুলাইয়ে তিনি ফের জিমন্যাস্টিক্সে ফেরার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। একইসঙ্গে দীপা জানান, বিভিন্ন মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী তিনি WADA-র পক্ষ থেকে ২ বছরের নির্বাসনের শাস্তি পেয়েছেন। দীপা পরিষ্কার জানান, এই তথ্য ভুল এবং মিথ্যে। তিনি জানান, পুরো কেরিয়ার জুড়ে দীপা কখনও নিষিদ্ধ কিছু সেবনের কথাও ভাবেননি।

আগামী জুলাই-আগস্টের দিকে তাঁকে প্রতিযোগিতায় নামতেও দেখা যাবে। একথা জানিয়ে দীপার কোচ বিশ্বেশ্বর নন্দী বলছিলেন, 'দীপাকে আপনারা আবার স্বমহিমায় দেখতে পাবেন। দেখবেন সেই পুরনো সময়ের দীপাকে। হ্যাঁ, জোর দিয়ে বলছি।' এই মুহূর্তে প্রতিনিয়ত প্র্যাকটিসের মধ্যে আছেন। শুধু তাই নয়, রিহ্যাবও চলছে। আসলে হাঁটুতে চোট পেয়েছিলেন দীপা। তারপর থেকে কিছুটা সরে আসতে বাধ্য হন। সেই হাঁটুর চোট পুরোপুরি সারানোর জন্য সম্প্রতি বিদেশেও যেতে পারেন। সেই প্রসঙ্গ তুলে তাঁর কোচ বলছিলেন, 'চোট মুক্ত পুরোপুরি দীপা তাও বলা যাবে না। তবে সেই চোট অনেকটা সারিয়ে ফেলেছে। তবু বিদেশে পাঠানোর কথা আমরা ভাবছি। যাতে পুরোপুরি চোট সারিয়ে প্রতিযোগিতায় নামতে পারে। সেই জন্য তাকে বিদেশে পাঠানো হবে।'

দীপাও ফোনে জানিয়ে দিলেন, তিনি নিয়মিত প্র‌্যাকটিসের মধ্যে আছেন। তেমন একটা সমস্যা হচ্ছে না। 'পরবর্তী সময়ে যাতে ফের পুরনো চোট ফিরে না আসে তার জন্য রিহ্যাব করতে বিদেশে যেতে চাই।' বললেন দীপা। জুলাই-আগস্ট থেকে নানান প্রতিযোগিতা শুরু হবে। সেই টুর্নামেন্টগুলোতে নামানো হবে দীপাকে। 'আসলে কী জানেন, দীপাকে এই মুহূর্তেও নামিয়ে দেওয়া যায়। কিন্তু দীপা নামা মানেই তার দিকে সকলের নজর থাকবে। তাই আমরা ঠিক করেছি, আগের জায়গায় পারফরম্যান্স ফিরে পেলে তবেই তাকে টুর্নামেন্টে নামাব। যাতে সমালোচনার মধ্যে না পড়ে।'

বিশ্বেশ্বরের কথা শুনে মনে হল, তিনি দীপাকে তৈরি করছেন প্যারিস অলিম্পিকের (Paris Olympics) জন্য। যা আগামী বছর হবে। আসলে রিও অলিম্পিকে সাড়া জাগানো জিমন্যাস্ট চতুর্থ হয়ে বিশ্ববাসীর নজর কেড়ে নিয়েছিলেন। সকলে চমকে গিয়েছিল, ভারতে এমন কোনও জিমন্যাস্ট থাকতে পারে ভেবে। কিন্তু তারপর থেকে একের পর এক চোট পেতে থাকেন। ফলে পিছিয়ে পড়েছেন তিনি। তবে ফিরে আসার মতো জায়গায় এখনও যে তিনি আছেন তাও জানিয়ে দিলেন ২৮ বছরের মহিলা জিমন্যাস্ট।

টোকিও অলিম্পিক্সে চতুর্থ স্থান অধিকার করেছিলেন দীপা। ২০১৪ সালে গ্লাসগো কমনওয়েলথ গেমসে ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন তিনি। এছাড়াও এশিয়ান জিমন্যাস্টিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে ব্রোঞ্জ পেয়েছিলেন। সম্প্রতি বাকুতে এফআইজি বিশ্বকাপে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন তিনি। যদিও ভল্টের ফাইনালে জায়গা করে নিতে পারেননি তিনি।

#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image

Journalist Name : Sampriti Gole

Related News