#Pravati Sangbad Digital Desk:
লক্ষ্য যখন মধ্যবিত্ত, তখন কেন্দ্রীয় বাজেটে মধ্যবিত্তের ভরসা ভারতীয় রেল ভাল বরাদ্দ পাবে না, তা কি হয়! কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকারের দ্বিতীয় জমানার শেষ বাজেটে তাই রেলের গুরুত্ব বাড়তে চলেছে তা অনুমান করেছিলেন অর্থনীতিবিদদের একাংশ। কিন্তু বুধবার সেই অনুমানকে টপকে গিয়ে রেলের জন্য বড় বরাদ্দ ঘোষণা করলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। অর্থমন্ত্রীর বার্ষিক খেরোর খাতায় ভারতীয় রেলের জন্য বরাদ্দ হল ২ লক্ষ ৪০ হাজার কোটি টাকা। যা ভারতের ইতিহাসে রেলের (Rail Budget 2023) পাওয়া সর্বোচ্চ ব্যয় বরাদ্দ। শুধু তাই নয়, এই বরাদ্দ কেন্দ্রে মোদী জমানা শুরু হওয়ার আগে রেলের পাওয়া বরাদ্দের ৯ গুণ। সার্বিকভাবে পরিবহনের ক্ষেত্রে বরাদ্দ বাড়ানোর কথাও বলেছেন অর্থমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের সঙ্গে যাতে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন না হয়, সেই ক্ষেত্রে জোর দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। দেশের বিভিন্ন বন্দর, কয়লাখনি, খাদ্য শস্য উৎপাদনকেন্দ্রগুলিকে চিহ্নিত করে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করার কথা ঘোষণা করা হয়েছে বাজেটে। প্রত্যন্ত অঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে অতিরিক্ত পাঁচটি বিমানবন্দর, হেলিপোর্ট, অ্যাডভান্স ল্যান্ডিং গ্রাউন্ড তৈরি হবে বলে ঘোষণা করেছেন সীতারামন।
এদিন বাজেট পেশ করতে গিয়ে শুরুতেই সীতারামন উল্লেখ করেন, স্বাধীনতার অমৃতকালের কথা মাথায় রেখে এই বাজেট তৈরি করা হয়েছে। স্বাধীনতার শতবর্ষের জন্য এবারের বাজেটেই ব্লু প্রিন্ট তৈরি করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। তবে শুধু রেল বাজেটই নয়, বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রেই। গত বছরের তুলনায় প্রতিরক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে ১৬ শতাংশ। বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্ষেত্রেও। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ৬৬ শতাংশ বরাদ্দ বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বাজেটে। কেন্দ্রীয় বাজেটে বাংলার জন্য কত বরাদ্দ থাকবে সেই নিয়ে প্রশ্ন ছিলই। বাংলার বর্তমান রেল প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে তারাতলা-এসপ্ল্যানেড, রুবি-বিমানবন্দর ও ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো পরিষেবা। এছাড়াও সেবক-সিকিম রেল লাইন, হাওড়া-শিয়ালদহ-দিল্লি রুটে ট্রেনের গতি বাড়াতে পরিকাঠামো খাতে খরচের জন্যও প্রয়োজন বড় অঙ্কের বরাদ্দ। জমি জটের জন্য থমকে রয়েছে একাধিক প্রকল্প। সব মিলিয়ে সেই জট ছাড়াতেও রেল বরাদ্দের দিকে নজর ছিল আজ। বরাদ্দের পরিমাণ লাখের কোঠা পেরোনোয় বাংলার আশা অনেকটাই মিটতে পারে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞমহল। চলতি অর্থবর্ষে মোট ৪৮ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল এই দফতরের জন্য। যার মধ্যে ২০ হাজার ১১৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল ১৬টি নতুন রেলপথ সম্প্রসারণের প্রকল্প শেষ করতে। এছাড়া ১ হাজার ২০০ কিমি দৈর্ঘ্যের ৪ টি গেজ কনভার্সন প্রোজেক্টের জন্য মন্ত্রক বরাদ্দ করেছিল ৭ হাজার ৯৯৩ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে ৩৩টি রেলপথ ডবল করার জন্য বরাদ্দ হয়েছিল ২০ হাজার ১৬৫ কোটি টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে বরাদ্দ কতটা বাড়ে এবার সেদিকেই থাকবে নজর।