জীবনমুখী গায়কের জীবনী এ বার ক্যামেরা বন্দি। তার সঙ্গে নীলাঞ্জনা আসলে কে, মিলবে সেই প্রশ্নের উত্তরও! বাঙালির নব্বইয়ের নস্ট্যালজিয়া ‘সে প্রথম প্রেম আমার নীলাঞ্জনা’ গানের লাইন দিয়েই ছবির নাম। পরিচালক খোদ নচিকেতা চক্রবর্তী।
হঠাৎ পরিচালনায়? ‘‘কপাল ঠুকে নেমেই পড়লাম বুঝলেন! প্রত্যক্ষ কোনও অভিজ্ঞতা না থাকলেও প্রচুর ছবি দেখার অভ্যেস তো আছে। রাকেশ ওমপ্রকাশ মেহরা বা রামগোপাল বর্মাও প্রচুর জেনেশুনে সিনেমায় আসেননি। আর আমার পরিচালনায় আসা সবটাই রানার (সরকার, প্রযোজক) জোরাজুরিতে। তবে ছবিটাকে কিন্তু আমার জীবনী বলা যাবে না। আমার জীবনের নানা ঘটনা তো অবশ্যই থাকবে। তার সঙ্গে খানিকটা ফিকশনালাইজ করা হচ্ছে।’’
কবীর সুমনের সঙ্গে 'জাতিস্মর' ছবির গান হয়েছে।
বাকি নচিকেতা চক্রবর্তী, অঞ্জন দত্ত। বাংলা গানের দুনিয়ার এই তিন কিংবদন্তিকে রুপোলি পর্দায় ছড়িয়ে দেওয়ার খুব ইচ্ছে প্রযোজক রানা সরকারের। সেই অনুযায়ীই ২০১৮-য় তিনি বড় পর্দায় 'নীলাঞ্জনা'কে আনবেন, ঠিক করেছিলেন।
নানা কারণে সেটি আর হয়নি। অবশেষে সেই সাধ পূর্ণ হচ্ছে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে। আজকাল ডট ইনকে রানা বলেছেন, ''সব ঠিক থাকলে ফেব্রুয়ারি থেকে নচিদার লেখা 'নীলাঞ্জনা' গল্প নিয়ে ছবির কাজ শুরু হবে। নচিদা নিজেও অভিনয় করবেন। গায়ক নচিকেতা চক্রবর্তী হিসেবে। আদ্যন্ত সঙ্গীতমুখর ছবি। শিল্পীর পুরনো জনপ্রিয় গানের সঙ্গে নতুন গানও থাকবে।''
নীলাঞ্জনাকে নিয়ে চারটি গান আছে নচিকেতার। শ্রোতা মাত্রই জানেন একেবারে গল্পের ঢঙেই গানের ন্যারেশন। সেটাই খানিকটা বাড়িয়ে সিনেমার উপযোগী করে নেওয়া হচ্ছে বলে জানালেন নচিকেতা। চিত্রনাট্য সাজানোর কাজ করছেন অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়। এপ্রিল থেকে শুটিং শুরু হওয়ার কথা। নচিকেতা ও তাঁর নীলাঞ্জনাকে নিয়ে যখন গল্প, তখন ছবি যে মিউজিক্যাল হবে বলাই বাহুল্য। নচিকেতার জনপ্রিয় কয়েকটি গান যেমন এ ছবিতে থাকবে, তেমনই থাকছে নতুন গান। যার কথা ও সুর অবশ্যই পরিচালকের। আরও একটা চমক হল যে, নীলাঞ্জনার গলায় গান গাইবে নচিকেতা-কন্যা ধানসিঁড়ি।
খবর, 'বেলা বোস' ছবিতে ক্ষেত্রে প্রযোজকের পছন্দ ছিলেন মিমি চক্রবর্তী। 'নীলাঞ্জনা'র ভূমিকায় কোন নায়িকাকে দেখা যাবে? তাঁর সেই ব্যর্থ প্রেমিকই বা কে? রানার কাছে প্রশ্ন ছিল আজকাল ডট ইনের। প্রযোজক এ বিষয়ে মুখ খুলতে চাননি। ছবির পরিচালনা করবেন এই প্রজন্মের নতুন পরিচালক। প্রযোজক জানিয়েছেন, নচিকেতার সঙ্গে সদ্যই তাঁর কথা হয়েছে। শিল্পী রাজি। তিনি আর একবার তাঁর লেখা গল্প ঘষামাজা করবেন। তারপরেই শুরু হবে শ্যুট। কলকাতা এবং শহরের আশপাশে শ্যুটিং হবে, এমনই ভাবনা প্রযোজকের।
এর আগে ‘রঞ্জনা আমি আর আসব না’র মতো মিউজিক্যাল প্রযোজনা করেছিলেন রানা সরকার, যে ছবি একাধিক জাতীয় পুরস্কারও পায়। সেই কারণেই কি ফের মিউজিক্যাল করতে উৎসাহী হলেন? ‘‘হ্যাঁ, অঞ্জন দত্তর সঙ্গে মিউজিক্যাল করেছি। তবে নচিদা-র জনপ্রিয়তার সঙ্গে আর কারও তুলনা চলে না। নচিদা-র ক্লাস আর মাস দুইই আছে,’’ খানিকটা যেন ব্যঙ্গের সুর রানার গলায়।
অঞ্জন দত্তের 'বেলা বোস' কি তা হলে বিশ বাঁও জলে? তিন কিংবদন্তির সঙ্গে কাজ করব বলেই কবীর সুমনের পরে নচিকেতা এবং অঞ্জনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। অঞ্জন রাজিও হয়েছিলেন। সেই অনুযায়ী নায়িকা হিসেবে বাছা হয়েছিল পার্নো মিত্রকে। কিন্তু পরে পরিচালক আর কাজটি করতে রাজি হননি। অঞ্জনের বিরুদ্ধে তাই আইনি পদক্ষেপ করেছেন রানা।