বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কলকাতার আকাশে আচমকাই আলোর ঝলকানি। ঠিক যেন মনে হচ্ছে আকাশে টর্চ জ্বালিয়েছে কেউ। রহস্যময় সেই আলোকে ঘিরে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। তবে শুধু কলকাতার আকাশে নয়, পশ্চিমবঙ্গের একাধিক জায়গা, ওড়িশা, ঝাড়খন্ড থেকেও দেখা গিয়েছে এই আলোর ঝলকানি। কিন্তু বাস্তবে ওটা কীসের আলো?
সোশ্য়াল মিডিয়ায় ছেয়ে গিয়েছে সেই ছবি আর ভিডিয়োতে। নেটিজেনরা অনেকে আবার এই আলোর সঙ্গে UFO'র তুলনা করছেন। অনেকে আবার মার্কিন মহাকাশ গবেষণাকেন্দ্র নাসার কোনও কাজের কথা উল্লেখ করেছেন।
তবে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের একাংশের মতে, বৃহস্পতিবার রাতে ভারত অগ্নি-৫ মিসাইলের মহড়া করেছিল। সেই মহড়ায় সফল হয়েছে ভারত। আর আকাশে তারই আলোর বিচ্ছুরণ চোখে পড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
অগ্নি-৫ এর রাত্রিকালীন মহড়ায় বৃহস্পতিবার সফল হল ভারত। সূত্র বলছে এই মিসাইল অন্তত ৫০০০ কিমি দূরের টার্গেটে আঘাত হানতে সক্ষম। প্রতিরক্ষার সোর্স অনুসারে খবর সামনে এসেছে যে, দেশের সামরিকক্ষেত্রে উন্নত প্রযুক্তি কতটা কার্যকরী সেটা পরখ করে দেখা হয়েছে। আর তাতে পুরোপুরি সফল হয়েছে ভারত। এমনকী সূত্রের খবর, অগ্নি ৫ এর পাল্লাও প্রয়োজনে বৃদ্ধি করা সম্ভব। যদি প্রয়োজন হয় তবে সেটাও করবে ভারত।
মোটামুটি অগ্নি ৫ এর সিরিজে সব থেকে এগিয়ে থাকা মিসাইলগুলির মধ্যে অন্য়তম অগ্নি ৫। প্রায় ৫ হাজার কিমি দূরে আঘাত হানতে পারে এই মিসাইল। একেবারে শত্রুঘাঁটি উড়িয়ে দিতে সক্ষম এই মিসাইল। ভারতের অস্ত্রাগারে অগ্নির যে সিরিজ রয়েছে সেটার মধ্যে পাল্লার দিক থেকে দেখলে অগ্নি ১ মিসাইল ৭০০ কিমি দূরে আঘাত হানতে পারে। অগ্নি ২ যেতে পারে ২০০০ কিমি দূরে। অগ্নি ৩ ও অগ্নি ৪ মিসাইল অন্তত ৩৫০০ কিমি দূরে আঘাত হানতে সক্ষম।
এদিকে কিছুদিন আগেই তাওয়াং সীমান্তে উত্তেজনা ছড়িয়েছিল। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে এদেশে প্রবেশের চেষ্টা করছিল চিনা সেনা। তখনই দু দেশের সেনার মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায় বলে খবর। দুপক্ষের একাধিক সেনা এতে জখম হয়েছিলেন বলে খবর। তবে কারোর মৃত্যু হয়নি বলে জানা গিয়েছে। এনিয়ে বিবৃতিও দিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। তার মধ্যেই এবার অগ্নি ৫ এর পরীক্ষায় সফল হল ভারত।
এদিকে গত বছর ভারতের অগ্নি ৫ এর মহড়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল চিন। এটি ভূমি থেকে ভূমি ব্যালিস্টিক মিসাইল। তবে কি সেই মিসাইলের সফল মহড়ায় ঘুম উড়েছিল চিনের?
সম্প্রতি অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াং থেকে নতুন করে চিনের সঙ্গে সংঘাতের খবর প্রকাশ্যে এসেছে। সীমান্তে নজরদারি বাড়িয়েছে ভারত। সেই আবহে এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এদিন ওডিশার আব্দুল কালাম দ্বীপ থেকে ক্ষেপণাস্ত্রটি উৎক্ষেপণ করা হয়।
উল্লেখ্য, এদিন সন্ধ্যার পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় গুচ্ছ গুচ্ছ ছবি পোস্ট করেন রাজ্যের বিভিন্ন জেলার মানুষজন। এক রহস্যময় আলো দেখেই কৌতূহলবশত সেই ছবি পোস্ট করেন তাঁরা। অনেকেই জানিয়েছেন, প্রায় মিনিট তিনেক ধরে আকাশে দেখা গিয়েছে সেই আলো। এরপরই শুরু হয় জল্পনা। মহাকাশ বিশেষজ্ঞ দেবীপ্রসাদ দুয়ারী জানান, এটি উল্কাপাতের আলো হওয়া সম্ভব নয়। এরপরই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার খবর প্রকাশ্যে আসে।