প্রতিটি বাড়ির রান্নাঘরে ঘি ব্যবহার করা হয়। গরম ভাতে ঘি-হল অমৃত। এক চামচ ঘি, ভাত আর আলুসিদ্ধ দিয়ে খেতে কার না ভাললাগে।আবার কষা মাংসেও যদি পড়ে এক চামচ ঘি তাহলেও কিন্তু খেতে মন্দ লাগে না। তেমনই ফিশ রেজালা বানালে সেখানেও ছড়িয়ে দিতে পারেন এক চামচ খাঁটি গাওয়া ঘি। এছাড়াও যে কোনও নিরামিষ খাবারেও সহজে মিশিয়ে দেওয়া যায় ঘি। মুগ ডাল বানাচ্ছেন, দিয়ে দিলেন এক চামচ ঘি। হাঁড়ি থেকে খিচুড়ি নামানোর আগে ঘি ছড়িয়ে দিলেন। ঘিয়ের আলাদাই একটি সুভাস আছে যা খাবারকে আরও লোভনীয় করে তোলে।
হিন্দু শাস্ত্রে ঘি ভীষণই পবিত্র, শুদ্ধ। তাই ঘি হোমের কাজে ব্যবহার করা হয় । ঘি দিয়ে পুজোর প্রদীপ জ্বালানো হয়। প্রসাদী লুচি ভাজতে, পোলাও বানাতে, পায়েসের চাল ভাজতেও রয়েছে ঘি-এর ব্যবহার। কিন্তু ঘি - এ বিপদও আছে। ভাবছেন তো আপনার ব্যবহৃত খাঁটি ঘিয়ে বিপদ কি করে হবে ! তবে এটাই ৯০ শতাংশ সত্যি। আপনি কি জানেন যেই ঘিটা আপনি খাঁটি ভেবে খাচ্ছেন সেটি আসলে খাঁটি নাও হতে পারে।বর্তমান সময়ে বেশির ভাগ প্রোডাক্ট-এ ভেজাল থাকে। খাদ্যে রাসায়নিক পদার্থ মিশ্রন, মাছে ফরমালিন বা ফল-মুল এ কেমিক্যাল যুক্ত করা আমাদের কাছে পরিচিত ব্যাপার। জানেন কি ঘিতেও ভেজাল মিশ্রিত থাকতে পারে । বাজারে যে ভেজাল ঘি বিক্রি হয়, তার অনেকগুলিতেই প্রচুর পরিমাণে বনস্পতি বা ডালডা মেশানো থাকে।
ঘিয়ে আছে প্রচুর পুষ্টিগুণ। এতে উন্নত মানের চর্বি আছে। এগুলি শরীরের প্রচুর উপকার করে। তাই নিয়মিত ঘি খাওয়া খুবই ভালো। তবে লক্ষ্য রাখবেন, এই ঘি যেন খাঁটি হয়।
ঘরোয়া পদ্ধতিতে কিভাবে খাটি ঘি চিনবেন,
•ঘি হাতে নিয়ে কিছুক্ষণ রাগড়ান। এরপর শুঁকে দেখুন যে গন্ধ আছে কিনা। যদি কিছুক্ষণ পরে ঘি থেকে গন্ধ আসা বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে বুঝবেন ঘিয়ের মধ্যে ভেজাল আছে। কারণ খাঁটি ঘিয়ের গন্ধ এত দ্রুত বিলীন হয়ে যায় না।
•প্রায়শই নারকেল তেল দেশি ঘিয়ে মিশিয়ে দেওয়া হয়। কীভাবে বুঝবেন এই ভেজাল রয়েছে কি না? একটি কাচের পাত্রে কিছু ঘি ঢেলে ডাবল-বয়লার প্রক্রিয়া চালান। এবার এই মিশ্রণটি একটি বয়ামে রেখে কিছুক্ষণ ফ্রিজে রেখে দিন। কিছুক্ষণ পর যদি ঘি আলাদা আলাদা স্তরে শক্ত হয়ে যায়, তবে ঘিতে ভেজাল রয়েছে। আর যদি পুরোটা এক সঙ্গে জমাট বাঁধে, তাহলে তা খাঁটি।
•বিশুদ্ধতা পরীক্ষা করার সবচেয়ে সহজ উপায় হল এটি একটি ফ্রাইং প্যানে গলানো। মাঝারি আঁচে একটি প্যান রাখুন এবং কিছু ক্ষণ গরম হতে দিন, এবার এতে এক চামচ ঘি দিন। যদি ঘি সঙ্গে সঙ্গে গলে গাঢ় বাদামি বর্ণ ধারণ করে তাহলে তা খাঁটি ঘি। যদি গলতে সময় লাগে এবং ফ্যাকাশে হলুদ হয়ে যায়, তবে তা ভেজাল।
•প্রথমে এক চামচ ঘি আপনার হাতের তালুতে রাখুন। আপনার শরীরের উষ্ণতায় যদি ঘি গলে যায় তাহলে বুঝে নিতে পারেন যে আপনার ব্যবহৃত ঘি খাঁটি। ঘিয়ের মধ্যে ভেজাল মেশানো হলে তা সহজে গলবে না।
•টেস্টটিউবে এক টেবিল চামচ ঘি রেখে গরম করুন। এবার এক চিমটি চিনির সঙ্গে সমপরিমাণ ঘন হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড মেশান। টেস্টটিউব ঝাঁকান এবং সবটা ভালো করে মেশান। নীচের স্তরে যদি গোলাপী বা লাল রঙের দানা দেখা যায়, তবে ঘি ভেজাল।