৬ বছর অতিক্রম করেছে ডিজিটাল ইন্ডিয়ার যাত্রা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আরো বেশি করে জোর দিতে চান ডিজিটাল লেনদেন। সমস্ত বেঙ্গলিতে প্রায় ৮০ শতাংশই ডিজিটাল লেনদেন এর ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। ব্যবহার বাড়ানো হচ্ছে ডিজিটাল ওয়ালেট, ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ইউপিআই এইসবের। বুধবার রিজার্ভ ব্যাংকের পক্ষ থেকে ঋণ নীতিতে জানানো হয় পরীক্ষামূলকভাবে কিছুসংখ্যক ব্যবহারকারীদের মধ্যেই ডিজিটাল লেনদেন শুরু করা হয়েছে। তবে চিন্তার বিষয় হল দেশের এখনো অধিকাংশ জনগণের কাছে স্মার্টফোন পৌঁছায়নি অথবা অনেকেই স্মার্ট ফোন ব্যবহার করতে পারেন না। এর মধ্যে বেশির ভাগটাই প্রাপ্তবয়স্কের মানুষেরা। এইদিকে ফিচার ফোনের মাধ্যমে ইউপিআই লেনদেন করার প্রযুক্তি আনার প্রস্তাব দেয় রিজার্ভ ব্যাংক। ফিচার ফোনে ন্যাশনাল ইউনিফাইড ইউএসএসডির মাধ্যমে ছোট অংকের লেনদেন ব্যবস্থা করা হয় কিন্তু তা অতটাও জনপ্রিয় নয়। টেলি নিয়ন্ত্রক ট্রাই এর হিসাব অনুযায়ী অক্টোবর পর্যন্ত দেশের মোট মোবাইল গ্রাহক সংখ্যা ১১৮ কোটি এবং যার মধ্যে ৭৪ কোটি স্মার্টফোন ব্যবহার করে।
তবে একাংশের মত অনুযায়ী ডিজিটাল লেনদেনে অনেক বাড়তি ফি গুনতে হয় যেমন কনভেনিয়েন্স, স্যারচার্জিং প্রভৃতি। এর ফলে অনেকেই ডিজিটাল লেনদেন এড়িয়ে যায়। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জানায় এই খরচ কমানোর পর্যালোচনা করা হচ্ছে এবং মাসখানেকের মধ্যেই তার ফলাফল সম্পর্কে জানা যাবে।
এদিকে খুব শীঘ্রই রিজার্ভ ব্যাঙ্ক নিজেদের পরিচালনা করা ডিজিটাল মুদ্রা আনার কথা ঘোষণা করেছে। কারণ সরকারের পক্ষ থেকে ঝুঁকি এড়ানোর জন্য সমস্ত রকমের ব্যক্তিগত ডিজিটাল মুদ্রায় বেশকিছু নিষিদ্ধকরণ আনতে চলেছে।
ডিজিটাল ইন্ডিয়া গড়ে তোলা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে স্বপ্নের মতো। এই প্রকল্পের কাজ প্রথম শুরু হয় ২০১৫ সালের পয়লা জুলাই থেকে। দেশের সর্বস্তরের মানুষের কাছে বিশেষত্ব প্রত্যন্ত এলাকায় থাকা প্রত্যেক ভারতবাসীকে ডিজিটাল সুযোগ-সুবিধে করে দেওয়ার জন্যই এই প্রকল্প এমনটাই জানান প্রধানমন্ত্রী। বর্তমানে প্রায় ১কোটি ১৩লক্ষ মানুষ ডিজিটাল ইন্ডিয়ার সুবিধা ভোগ করে। বিভিন্ন খাতে গড়ে উঠেছে ডিজিটাল ইন্ডিয়ার সুযোগ। ই-গভর্নেন্স এর ওপর বেশি জোর দেওয়া হয়। যার প্রধান লক্ষ্য ছিল রেল পরিষেবা, জমি সংক্রান্ত রেকর্ড প্রকৃতিতে কম্পিউটারাইজেশন। ধীরে ধীরে এর পরিসর বাড়তে শুরু করেছে। গ্রামীণ প্রত্যন্ত জায়গা থেকে শহরে এলাকা প্রত্যেকটি জায়গায় ডিজিটাল ব্যবস্থা পৌঁছে গেছে। ভারতবর্ষের প্রতিটি গ্রামে উচ্চগতির ইন্টারনেট পরিষেবা সহ ব্রডব্যান্ড পরিষেবা পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। গ্রামে গ্রামে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে বৈদ্যুতিন সরকারি পরিষেবা। মোবাইল ফোন এবং ব্যাংক একাউন্টে দ্বারা ডিজিটাল আর্থিক লেনদেন আগের তুলনায় অনেক সহজ হচ্ছে এর পরিসর আরো বাড়ছে। বিভিন্ন প্রত্যন্ত জায়গার মানুষদের থেকে জানা যাচ্ছে আগের থেকে পরিষেবা অনেক বেশি স্বচ্ছ হয়েছে। গ্রামীণ বিভিন্ন খাতে ডিজিটাল লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে অনেক। এখন আর ভারতীয় নাগরিকদের কোন শংসাপত্র বা সরকারি নথি সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন দপ্তরে দপ্তরে ঘুরে বেড়াতে হয় না। ডিজিটালি কম্পিউটারের সাহায্যে এখন সব কাজই সম্পন্ন হয়ে যায়। আধার থেকে শুরু করে রেশন কার্ড ব্যাংকের বই ব্যাংকের লেনদেন প্রক্রিয়া ভোটার কার্ড সবকিছুই ডিজিটাল মানুষের হাতে এসে যাচ্ছে খুব সহজে। তবে এখনো পর্যন্ত অতি উচ্চ এলাকা বা সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে ইন্টারনেট পরিষেবা সমস্যা বিদ্যমান। সমাধানের চেষ্টা চলছে অতি দ্রুত গতিতে।