ক্রিস্তিয়ানো রোনাল্ডোঃ এক রাজপুত্রের রাজা হয়ে ওঠা

banner

#Pravati Sangbad Digital Desk:

(প্রথম পর্ব)
বিশ্ব ফুটবলে ক্রিস্তিয়ানো রোনাল্ডোর নাম কারোর অজানা নয়। তবে আজকের রোনাল্ডো একদিনে হয়নি। জীবনের প্রতি পদক্ষেপে লড়াই করে আজ তাঁর সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন। পর্তুগাল রাজপুত্রের বাবা 'আন্দ্ররিনহা' ক্লাবের কিটম্যান ছিলেন। সেই কারন হেতু  মাত্র ৭ বছর বয়েসে ওই ক্লাবের হয়ে ফুটবল জীবন শুরু করার সুযোগ পান। সেখানে ৪ বছর কাটিয়ে নেসিওনাল ক্লাবে চলে যান।সেখানে থাকাকালীন মাত্র ১২ বছর বয়সে পর্তুগালের ঐতিহ্যবাহী ফুটবল ক্লাব স্পোর্টিং সিপি-তে ৩ দিনের ট্রায়ালে ডাক পান। প্রথম ডাকে বাজিমাত করে ১৫০০ ইউরোর বিনিময়ে স্পোর্টিং সিপি -র যুব দলে জায়গা করে নিতে সমর্থ হন। কিন্তু মাত্র ১৫ বছর বয়সে বিরল রোগ টাকাইকার্ডিয়াতে আক্রান্ত হন। যার ফলে তাঁর ফুটবল জীবন শেষ হয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু স্পোর্টিং সিপি ক্লাবের কাছ থেকে আর্থিক সাহায্য নিয়ে লেজার সার্জারি করে রোনাল্ডো ফের মাঠে ফিরে আসেন। এরপর ওই ক্লাবের হয়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে খেলার সময় হঠাৎ কিংবদন্তী স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের চোখে পরে যান। প্রথমে ফার্গুসন চেয়েছিলেন তাকে লোনে ইউনাইটেডে আনবেন। কিন্তু পরবর্তীতে তিনি তাকে ১২.২৪ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে ২০০৩ সালে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে নিয়ে আসেন। প্রাথমিকভাবে দলের সদস্যদের সাথে মানিয়ে নিতে সমস্যা হলেও, কিছুদিন থিতু হওয়ার পরেই শুরু হয় তাঁর স্বপ্নের যাত্রা। ধীরে ধীরে তিনি হয়ে ওঠেন বিশ্বের অন্যতম সম্ভাবনাময় ফুটবলার। এরই মধ্যে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ জেতার সাথে সাথে জিতে নেন কাঙ্ক্ষিত চ্যাম্পিয়নস লিগও।অপরদিকে, ২০০৮ সালে তিনি জিতে নেন ব্যালেন ডি অর পাশাপাশি জয় করেন ফিফার বর্ষসেরা প্লেয়ার-এর খেতাব।
এরপরেই তাকে মনে ধরে পেরেজের। এই পেরেজ আর কেউ নন, সেই সময়কার বিশ্বের অন্যতম ধনী দল এবং সবথেকে বেশিবার উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ী রিয়াল মাদ্রিদের প্রধান। তখনকার সময়ে রেকর্ড অর্থে ইংল্যান্ড ছেড়ে রোনাল্ডো লস ব্ল্যাঙ্কস-দের দেশে পাড়ি দেন। মাদ্রিদে এসে রোনাল্ডো হয়ে ওঠেন কিংবদন্তী। যে ৭ নম্বর জার্সি পরে রাউল, বুত্ররাগুয়েন মাদ্রিদ এর মাঠে আলো ছড়াত। সেই ৭ নম্বর জার্সিকে আলাদা মাত্রা দেন রোনাল্ডো। ১০ নম্বর জার্সির মতো ৭ নম্বর টিকেও আলাদা উচ্চতাতে নিয়ে যান সি আর ৭। 
এরপর নদী দিয়ে অনেক জল বয়ে গেছে। বর্তমান সময়ে রোনাল্ডো এখন একজন কিংবদন্তী। তাঁর নামের পাসে উচ্চারণ হয় "গ্রেটেস্ট প্লেয়ার অফ অল টাইম" কথাটি। জিতে নিয়েছেন ৫টি ব্যালন ডি অর সহ বহু ক্লাব এবং ব্যাক্তিগত খেতাব। শুধু তাই নয় এই কিংবদন্তী পর্তুগালের জাতীয় দলের হয়ে জিতেছেন ইউরো কাপ এবং উয়েফা নেসন্স কাপ। ২০১৮ সালে মাদ্রিদ ছাড়ার পরে তিন বছর 'তুরিনের বুড়ি' জুভেন্তাসে কাটিয়ে ফিরে এসেছেন ২০২১ সালে। ফের যোগ দিয়েছেন তাঁর পুরনো ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে। এসে স্বমহিমাতে ৩০ ম্যাচে ১৮ গোল করেন। কিন্তু তাঁর দলকে চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতাতে ব্যর্থ হন। অপরদিকে, প্রিমিয়ার লিগে ৬নম্বরে শেষ করার দরুন আগামী বছরের চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ছিটকে গেছে। এহেন সময়ে, রোনাল্ডো হয়তো তাঁর জীবনের শেষ চ্যাম্পিয়নস লিগ খেলার জন্য দলবদল করতে চেয়েছেন। তবে এই রোনাল্ডো এবং আগের রোনালদোর মধ্যে বয়সের যে ঢের তফাৎ। হয়তো, নিজের ফিটনেসে তিনি একজন ২৪ বর্ষীয় ফুটবলারের থেকে বেশি কার্যকর। কিন্তু এখন প্রতিটি দল ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করে খেলোয়াড় কেনে। যাতে তাদের সঙ্গে কমপক্ষে ৩ থেকে ৫ বছরের চুক্তি করা যায়। সেখানে ৩৭ বছর বর্ষীয় রোনালদোকে চিন্তাতেই আনছেন না বেশিরভাগ দল। বয়সের জন্য যতই তাকে অস্তাচলে যাওয়া সূর্য ভাবা হোক। সেই সূর্য যদি একবার জ্বলে ওঠে সবাই ছারখার হয়ে যেতে পারে সেই কথাটাও জানে বিভিন্ন দলের কোচেরা। তাই তাঁর ম্যানেজার জর্জ মেন্দেস যে দল তাঁর জন্য খুজে বের করবেন সেই দলের হয়ে যে সেই পুরনো রোনালদোকে পাওয়া যাবে তা বলতে আর অবকাশ রাখে না।

#Source: online/Digital/Social Media News # Representative Image

Journalist Name : Tamoghna Mukherjee

Related News